
সিরাজগঞ্জে এবার বিভিন্ন জাতের আখ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে। এরইমধ্যে পুরোদমে এ আখ মাড়াই শুরু হয়েছে এবং নতুন গুড় বাজারেও উঠেছে। দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এসব আখের মধ্যে রয়েছে আইএসডি ৪১, ৪২, ৪৩, ইরি, বোন ও চুষে খাওয়ার আখ এবং বিশেষ করে উঁচু ও দোআঁশ জমিতে এ চাষ করেছে কৃষকেরা। কয়েক মাস আগে বিভিন্ন জাতের এসব আখ সংগ্রহ করে (৩ চোখের ডাং) রোপণ করা হয়। তবে চরাঞ্চলসহ কাজিপুর, বেলকুচি, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বেশি চাষ হয়েছে। এরইমধ্যে আখ মাড়াই করে নতুন গুড় বাজারেও উঠেছে। প্রতি ডিমা (৩ পোয়া) গড়ে ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া শহর বন্দরসহ বিভিন্ন যানবাহনেও এ আখ বিক্রি হচ্ছে এবং ভ্রাম্যমাণ ভ্যানের উপর মেশিনে ভাঙ্গানো আখের রসের কদরও কম নয়। প্রতি গ্লাস রস এখন ১৫/২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এতে যেমন কৃষকেরাও লাভবান হচ্ছে তেমনি আখ বিক্রেতারাও লাভবান হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকেরা বলছেন, প্রায় ৩ যুগ আগে এ জেলার অধিকাংশ গ্রামঞ্চলের জমিতে নানা জাতের আখ চাষ হতো। এসব আখ মাড়াই করে রস জাল করে গুড় তৈরির ধুম পড়তো এবং হাট-বাজারে খোলা ও ডিমা গুড় বিক্রি হতো অবাধে। এ চাষে খরচ বাদে লাভের অংকও ভালো ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ইরি বোরো চাষে ঝুঁকে পড়ে কৃষকেরা। এ কারণে ক্রমাগতভাবে আখ চাষাবাদ হ্রাস পায়। তবে প্রায় এক যুগ আগে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকেরা আবারও এ আখ চাষ শুরু করেছে। এ জেলার বিভিন্ন স্থানে লাভজনক আখ চাষের প্রভাবও বাড়ছে। কৃষকেরা জমি ধরে আখও বিক্রি করছে। বর্তমানে ১ ডিমা (৩ পোয়া) গুড় ১০০ টাকা থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খাঁটি গুড় ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এবং এছাড়া চিনি আটা মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করেও বিক্রি করে থাকে অসৎ কৃষকেরা। এমন অভিযোগ এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক একেএম মঞ্জুরে মওলা আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, লাভজনক এ আখ চাষে কৃষকেরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। কম খরচে এ চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।