ভারতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা সেজে ডাকাতি
সাত কোটি রুপি লুট
প্রকাশ : ২৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অলোকিত ডেস্ক
ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকে কয়েকজন অস্ত্রধারী ব্যক্তি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা সেজে সাত কোটি রুপি (আট লাখ ডলার) বহনকারী একটি গাড়িতে ডাকাতি করেছে। এ সময় তারা গাড়িতে থাকা সব অর্থ নিয়ে পালিয়ে যায়। স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত বুধবার বিকেলে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু শহরের কেন্দ্রে দিনদুপুরে এমন ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের ধরতে ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে।
বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং বলেন, সেদিন শহরের ব্যস্ত সড়কে এসইউভি গাড়িতে করে এসে ছয় ব্যক্তি একটি নগদ অর্থ বহনকারী ভ্যান থামায়। ভ্যানটি ব্যাংকের এক শাখা থেকে অন্য শাখায় অর্থ নিয়ে যাচ্ছিল।
ভ্যানটিতে চালক, একজন নগদ অর্থের জিম্মাদার এবং দুজন সশস্ত্র নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন।
সীমান্ত কুমার সিং বলেন, ডাকাতেরা ওই ভ্যানে থাকা চারজনকে বলে, তারা ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আছে কি না, তা যাচাই করতে চায়।
পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, ডাকাত দলের সদস্যরা নগদ অর্থের জিম্মাদার ও নিরাপত্তারক্ষীদের বলে, তারা যাতে তাদের অস্ত্রগুলো ভ্যানে রেখে ডাকাতদের গাড়িতে উঠে বসেন। আর চালককে বলা হয়, ভ্যানটি চালিয়ে নিয়ে যেতে।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, অর্থ পরিবহনকারী ভ্যানটিকে কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত অনুসরণ করে ওই এসইউভি। পরে ডাকাতেরা চালককে ভ্যান থেকে নামিয়ে দেয় এবং নগদ অর্থের জিম্মাদার ও নিরাপত্তারক্ষীদেরও এসইউভি থেকে নামতে বাধ্য করা হয়। এ সময় অস্ত্রের মুখে তাঁদের জিম্মি করে ভ্যান থেকে সাত কোটি রুপি নিজেদের গাড়িতে তুলে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। ঘটনাস্থলে খুব বেশি সিসিটিভি ছিল না। ডাকাতেরা একাধিক গাড়ি ব্যবহার করেছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
নগদ অর্থ পরিবহন সেবা প্রদানকারী যে প্রতিষ্ঠানের ভ্যানে এ ডাকাতি হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠান থানায় অভিযোগ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির কোনো কর্মী ডাকাতির সঙ্গে জড়িত কি না, তা–ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ডাকাতদের ব্যবহৃত এসইউভি গাড়িতে ভুয়া নম্বরপ্লেট ও গভর্নমেন্ট অব ইন্ডিয়া লেখা স্টিকার ছিল।
কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, পুলিশ ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত এসইউভি গাড়িটি জব্দ করেছে।
কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বলেছেন, সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা কোন গাড়িতে করে পালিয়েছিল, তা এখনো স্পষ্ট নয়। ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশ দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উদ্?ঘাটন করবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
এর আগে গত মে মাসে নকল চাবি ব্যবহার করে বিজয়পুরা জেলার একটি ব্যাংক থেকে ৫৯ কেজি সোনা ও ৫৩ কোটি রুপির বেশি চুরি করা হয়েছিল। পুলিশ এখন পর্যন্ত ৩৯ কেজি সোনা ও কিছু নগদ অর্থ উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যার মধ্যে ২ জন ব্যাংকের সাবেক কর্মী।
