ব্যক্তির জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করবে না সরকার
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর জানিয়েছেন, ব্যক্তির জন্য প্রতিষ্ঠান ‘বন্ধ করবে না’ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তিনি বলেন, এলসি (ঋণপত্র) খুলতে দিয়ে এস আলম ও সামিটের কারখানাগুলোকে ‘সচল’ রাখা হয়েছে।
গভর্নর বলেন, আমরা যেটা করেছি, ধরুন বেক্সিমকো টেক্সটাইল ছাড়া আর প্রতিটা প্রতিষ্ঠানকেই কিন্তু ‘আমরা সচল রেখেছি’। এসএস পাওয়ারও সচল আছে, কারণ এটা ‘দেশের সম্পদ’।
গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) আয়োজিত বিনিয়োগ সংলাপে ব্যবসায়ীরা অভিযোগ তোলেন, যারা অর্থপাচার করেছে তারা বহাল তবিয়তে আছেন। এর জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এ বিষয়ে তার ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলম দেশে না থাকতে পারে, তাকে থাকতে দেওয়া হোক না হোক—সেটা পরবর্তী সরকার সিদ্ধান্ত নিবে। আমাদের সামিট, তারা দেশে নাই, কিন্তু তাদের প্রতিষ্ঠান প্রত্যেকটাই চলছে। বেক্সিমকো, শুধু বেক্সিমকো টেক্সটাইল ছাড়া প্রতিটা প্রতিষ্ঠান চলছে। আমরা চাচ্ছি না যে কোথাও উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাক। ব্যক্তির জন্য আমরা প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেব না। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বেক্সিমকো, সামিট, এস আলমসহ দেশের কয়েকটি শিল্পগ্রুপের বিরুদ্ধে আর্থিক খাতে ঋণ জালিয়াতি, দুর্নীতি, অনিয়ম ও অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধানে নামে দুর্নীতি দমন কমিশন।
অভ্যুত্থানের পর বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ার?ম্যান ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান গ্রেপ্তার হন। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার এস আলম বিদেশে চলে গেছেন।
এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক ও তাদের পরিবারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা, স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জব্দ, মালিকানা হস্তান্তর বন্ধ রাখার মতো পদক্ষেপ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
গভর্নর বলেন, “এখানে ওই ‘ডান্ডা’ দিয়ে করার কিছু নাই, আমাকে আইনগতভাবেই এগোতে হবে। আমরা যারা অর্থপাচার করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে অনেকগুলো মামলা করেছি। এখন কোর্টকে তো আর আমি এগিয়ে নিতে পারব না আমার সময়ে, তাদের সময়েই তারা যাচ্ছে। সেটাকেও আমরা বিবেচনায় নিয়েছি।”
ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ ঠেকতে সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, তারা অর্থ ঋণ আদালতের মাধ্যমে তাড়াতাড়ি টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তালিকা করছেন।
আদালতের রায়ের পর আইনি বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্য টাকা খরচের দিকও তুলে ধরেন আহসান মনসুর।
এই পদক্ষেপ নেওয়ার মাধ্যমে তারা চেষ্টা করবেন যাতে টাকা নিয়ে ফেরত না দেওয়ার প্রবণতা ঠেকিয়ে দেওয়া যায়।
স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে এই বিনিয়োগ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিদ্যু ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফায়জুল কবির খান।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সভাপতিত্বে সংলাপে বিশেষ অতিথিদের মধ্যে আহসান এইচ মনসুর ছাড়াও ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ সহকারী লুৎফে সিদ্দিকী, এনবিআর চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আবদুর রহমান।
