অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে তার কার্যালয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ে কর্মরত নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সচিবালয়ে কর্মরত সব কর্মচারীর জন্য ২০ শতাংশ ‘সচিবালয় ভাতা’র দাবিতে তারা আন্দোলন করেন। এর অংশ হিসেবেই অর্থ উপদেষ্টাকে গতকাল বুধবার অবরুদ্ধ করে রাখেন সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, অর্থ উপদেষ্টা তার কার্যালয়ে ছিলেন। আর আন্দোলনকারীরা অর্থ বিভাগের সামনে তাদের দাবিসংবলিত স্লোগান দেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সন্ধ্যায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও অর্থসচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার বৈঠক করেন। আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণে আগামী সোমবার প্রজ্ঞাপন জারি হবে- এমন বার্তা আন্দোলনকারীদের কাছে পাঠানো হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তা মানেননি। আজই (বুধবার) প্রজ্ঞাপন জারির দাবি জানান এবং তাদের অবস্থান ধরে রাখেন।
সচিবালয়ের ভেতরে অর্থ বিভাগের জন্য ১৮ তলা ভবন রয়েছে। এ ভবনের চারতলায় অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়। গতকাল বেলা দুইটার দিকে সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অর্থ উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। গতকাল ঢাকার আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে জাতীয় ভ্যাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা। বক্তব্য শেষে তখনো ফেরেননি তিনি। ফেরার পর কর্মচারীরা খবর পেয়ে আবার তার কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে কর্মরত তিন শতাধিক নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারী সচিবালয়ে জড়ো হন। পরে তারা মিছিল নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরের সামনে অবস্থান নেন। কর্মচারীরা এ সময় হ্যান্ডমাইকে ভাতার দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
কর্মচারীদের দাবি- উপদেষ্টা, মন্ত্রী ও সচিবেরা রাতে যতক্ষণ অফিসে থাকেন, ততক্ষণ তাদেরও অফিস করতে হয়। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতনকাঠামোর বাইরে নানা ধরনের ভাতা পেলেও সচিবালয়ের কর্মচারীদের তা দেওয়া হয় না। আন্দোলনকারীদের একজন জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাদের ক্ষোভ রয়েছে। রেশনের দাবিতেও তারা অর্থ উপদেষ্টাকে অবরুদ্ধ করেছিলেন। তখন তিনি আশ্বাস দিয়েছিলেন, রেশনের বিবেচনা করবেন; কিন্তু তিনি কথা রাখেননি। সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর ঘোষণা দিয়ে তা-ও কার্যকর করেনি সরকার। নতুন বেতন কমিশনের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। অর্থ উপদেষ্টা এরই মধ্যে কয়েকবার বলেছেন, বেতন কমিশন বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার। এর আগে গত ২২ জুন সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতেও অর্থ বিভাগের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন কর্মচারীরা।
