
বয়স বাড়া স্বাভাবিক হলেও এর সঙ্গে ত্বকের উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া অনেকেরই পছন্দ নয়। মসৃণ ত্বক, ভালো শক্তি, শক্তিশালী রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা- এসব মিলিয়ে এখন ‘হেলদি এজিং’ একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনধারা হয়ে উঠেছে। তারুণ্য ধরে রাখতে অনেকে নেন অ্যান্টি-এজিং চিকিৎসা, আবার অনেকেই ভরসা করেন অ্যান্টি-এজিং খাদ্যাভ্যাসে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এই যাত্রা শুরু হয় রান্নাঘর থেকেই।
ওয়েলনেস ইনফ্লুয়েন্সার জারিনা মানায়েনকোভা জানান, তার বয়স ৩৯ হলেও বায়োলজিক্যাল এজ মাত্র ২৫ এবং এর বড় কৃতিত্ব তার খাদ্যাভ্যাসের। যদিও জিন, ঘুম, স্কিনকেয়ার ও জীবনযাপনও গুরুত্বপূর্ণ, গবেষণা বলছে- নিয়মিত সুষম খাবার ত্বক, শক্তি, প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ এবং সামগ্রিক বার্ধক্যের ওপর বড় ভূমিকা রাখতে পারে। মানায়েনকোভা তার অ্যান্টি-এজিং ডায়েটে চার ধরনের খাবারকে বিশেষ গুরুত্ব দেন-
লাল চর্বিযুক্ত মাছ : ওমেগা-৩ সমৃদ্ধ প্রোটিন
তিনি প্রথমেই উল্লেখ করেন, স্যামনসহ লাল ফ্যাটি মাছের কথা। এসব মাছ সহজপাচ্য প্রোটিনের পাশাপাশি দেয় প্রচুর ওমেগা-৩, যা ত্বক ও হৃদয়ের জন্য উপকারী। গবেষণা বলছে, ওমেগা-৩ ত্বকের সুরক্ষা স্তরকে শক্তিশালী করে ও প্রদাহ কমায়। স্যামনে থাকা অ্যাস্ট্যাক্সানথিন নামের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকে ইলাস্টিসিটি ও আর্দ্রতা বাড়ায়।
টাটকা ও রঙিন সবজি : রঙের বৈচিত্র্যই শক্তি
উজ্জ্বল রঙের সবজি কম ক্যালরির হলেও ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। গাজর, কুমড়া, মিষ্টি আলুর মতো সবজিতে থাকে বেটা-ক্যারোটিন ও লাইকোপিন, যা গবেষকদের মতে UV -রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয় এবং অকাল বার্ধক্য ঠেকায়।
বাদাম : অন্ত্রবান্ধব ও দীর্ঘায়ু সুবিধার খাবার
মানায়েনকোভা মনে করেন, বাদাম খেলে অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাদামে থাকা ভালো চর্বি, পলিফেনল, ভিটামিন ও খনিজ প্রদাহ কমাতে ও বয়স-সম্পর্কিত নানা রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আমন্ড, আখরোট, পিস্তাচিও, হ্যাজেলনাট সবই পুষ্টিকর।
প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার : মাইক্রোবায়োমের সেরা সঙ্গী
ফার্মেন্টেড খাবার যেমন সাওয়ারক্রাউট, আচার ইত্যাদিতে থাকে প্রচুর প্রোবায়োটিক, যা তিনি ‘হেলদি এজিং’-এর মূল খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করেন। গবেষণা জানায়, প্রোবায়োটিক অন্ত্রের মাইক্রোবায়োম ঠিক রাখতে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও প্রদাহ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ। বয়স বাড়ার সঙ্গে যে কোষগত পরিবর্তন হয়, তার অনেকটাই প্রোবায়োটিক খাবার খেয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
মানায়েনকোভার ভাষায়, সৌন্দর্য আসে ভেতর থেকে- বুদ্ধিমানের মতো খাবার বেছে নিলে বয়স যা-ই হোক, ত্বকে থাকবে উজ্জ্বলতা। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দেন, শুধু খাবার নয়; সঠিক ঘুম, ব্যায়াম, স্ট্রেস কমানো, স্কিনকেয়ার এবং নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহারও সমান জরুরি।