যত ক্ষমতাশালী হোন, আইন ভঙ্গ করলেই ব্যবস্থা : ডিএমপি

ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি ডিভিশনের যুগ্ম কমিশনার সানা শামীনুর রহমান বলেছেন, ‘যে যত বড় ক্ষমতাশালী হোন না কেন, আইন ভঙ্গ করলেই আইনের আওতায় আনা হবে।’ গতকাল বৃহস্পতিবার সরকারি আদেশ অমান্য করে সচিবালয়ে কর্মরত চাকরিজীবীদের ২০ শতাংশ সচিবালয় ভাতার দাবিতে আন্দোলনকারীদের ৪ জনকে আটক ইস্যুতে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘রোববার থেকে সচিবালয় বন্ধের একটা হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমরা এই অন দা স্পট চার জনকে গ্রেফতার করেছি। এটা আপনারাও দেখেছেন। এখানে আমরা যাচাই বাছাই করে দেখব কার কতটুকু দায় দায়িত্ব রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘গতকালের ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমাদের কাছে রয়েছে, আপনাদের (সাংবাদিক) কাছেও রয়েছে। গতকালও আমি দুই-দুইবার তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করার জন্য বলেছিলাম। কিন্তু তারা সেই বিষয়টি আমলেই নেয়নি। সুতরাং এই মুহূর্তে যাদের নেওয়া হয়েছে, অন দা স্পট যারা আইন ভঙ্গ করেছে, আমরা শুধু তাদের বেছে বেছে কয়েকজনকে নিয়েছি। এইটা যদি অব্যাহত থাকে, যত মানুষ আইন ভঙ্গ করবে আমরা সবাইকে আইনের আওতায় আনবো।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আপাতভাবে তাদের হেফাজতে নিয়েছি। যাচাই বাছাই করে দেখা হবে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবো।’

সানা শামীনুর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশে যতগুলো কেপিআই রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ সচিবালয়। আপনারা জানেন, বিগত দিনে এখানে কর্মচারীর নামে উচ্ছৃঙ্খলতা সৃষ্টি করা হয়েছে। বিগত দিনের ঘটনা আপনাদের সবারই জানা। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা গতকাল রাতেও তাদের অনেক বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা প্রশাসনের কোনও কথা শোনে নাই। তারা হুমকি ধমকি অব্যাহতভাবে দিয়ে চলেছে। এটি হচ্ছে বাংলাদেশের প্রশাসনের প্রাণ কেন্দ্র। এখানে কোনও ধরনের সভা সমাবেশ মিছিল মিটিং করার অনুমতি নাই।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নির্দিষ্টভাবে সার্কুলার দিয়ে বাংলাদেশ সচিবালয়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে মিছিল মিটিং, রাজনৈতিক কোনও ধরনের সভা ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা গতকাল এবং আজও এই মেসেজটি তাদের দেওয়ার চেষ্টা করেছি যে, আপনারা কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা এখানে সৃষ্টি করবেন না। যাতে কোনও ধরনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। এ জাতীয় কোনও কর্মকাণ্ড আপনারা করবেন না।’

ডিএমপির এই যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘গতকালও আইন ভঙ্গ করে উপদেষ্টাকে জিম্মি করে তাদের উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার চেষ্টা করেছে। এটি আমরা মনে করি ভিন্ন অর্থে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র কি-না আমরা সেটি খতিয়ে দেখছি। আজ আপনারা দেখেছেন আমরা তাদের বিভিন্নভাবে মেসেজ দেওয়া সত্ত্বেও তারা কর্ণপাত করেননি। কাউকে উনারা ঠিক রেসপন্স করেন নাই। ঠিক ওই অর্থে প্রশাসনের কোনও কথাই তারা কর্ণপাত করেননি। আজ আবার যখন তারা একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছেন, আমরা তাদের সময় দিয়েছি। আপনারা দেখেছেন, আমি নিজেও ঘোষণা দিয়েছি তারা সেখানে কর্ণপাত করেন না। তারা এ ধরনের মিছিল অথবা সমাবেশ যেটা বেয়নী কর্মকাণ্ড, সেই বেয়নী কর্মকাণ্ডকে তারা অব্যাহত রেখেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার বিভিন্ন কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত সমস্যার কিন্তু সমাধান করে যাচ্ছে। যেকোনও সমস্যার সমাধানের একটা লিগাল পথ রয়েছে। কিন্তু আপনি যখন যানবাহন চলাচল বন্ধ করেন, পথচারীদের বিঘ্ন সৃষ্টি করেন, মানুষের নিরাপত্তাহীনতার কারণ হয়ে দাঁড়ান, প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু সেখানে যখন আপনি বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করেন, তখন অবশ্যই আইন তার নিজস্ব পথে চলবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেবো। সে যেই হোন, যত বড় ক্ষমতাশালী হন না কেন, আইন যিনি ভঙ্গ করবেন তাকে আমরা আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।’