সুসংবাদ প্রতিদিন
জৈব পদ্ধতিতে আগাম বাঙ্গি চাষে সাফল্য
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
তাজুল ইসলাম, তিতাস (কুমিল্লা)

কুমিল্লার তিতাসের বলরামপুর ইউনিয়নের ঐচারচর গ্রামে জৈব পদ্ধতিতে আগাম বাঙ্গি চাষে বাজিমাৎ করেছে কৃষক সাত্তার মিয়া। ৩০ শতক জমিতে চাষকৃত ফসল বিক্রি করে লাখ টাকা উপার্জনের স্বপ্ন দেখছেন। আগাম জাতের এ বাঙ্গি ধরনভেদে প্রতিটি বাঙ্গি ২০০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ঐচারচর গ্রামের কৃষক মো. সাত্তার মিয়া তার জমি থেকে বাঙ্গি সংগ্রহ করছেন। সবুজ গালিচার মাঝ থেকে খুঁজে খুঁজে পরিপক্ব বাঙ্গি গাছ থেকে কেটে জমির পাশে এনে ঝুঁড়িতে রাখছেন। একই গ্রামের অন্য কৃষক মতিউর রহমান বাঙ্গিগুলো দেখছেন এবং আগামীতে তিনি এ আগাম জাতের বাঙ্গি চাষ করবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার কাছে পরামর্শ চাচ্ছেন।
কৃষক মো. সাত্তার মিয়া জানান, বিগত ১০ বছর ধরে আমি আগাম জাতের বাঙ্গি চাষ করে আসছি। আগে ২ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করলেও এবার অন্য ফসলের চাহিদা থাকায় ১ বিঘা জমিতে দুই ধাপে বাঙ্গি চাষ করেছি। মূলত আমি আগের বছরের বীজ থেকে পরের বছর বাঙ্গি চাষ করে থাকি। প্রথমে পলিব্যাগে চারা তৈরি করি পরে মাদায় রোপণ করি। জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে আমি শুধুমাত্র জৈব সার প্রয়োগ করেছি। এতে উৎপাদন ভালো হয় এবং বাঙ্গি আকারে বড় হলেও স্বাদ বজায় থাকে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি আরও জানান, প্রথম ধাপে ১৫ শতক জায়গায় বাঙ্গি চাষ করেছি, পুরু জমির বাঙ্গি বিক্রি হয়ে গেছে। এতে আমার ৬০ হাজার লাভ হয়েছে। দ্বিতীয়ধাপে ১৫ শতক জমিতে বাঙ্গি বড় হয়েছে এখন সেগুলো বিক্রির জন্য তোলা হচ্ছে। চারা তৈরি থেকে জমি প্রস্তুতসহ প্রায় ১০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি লাখ টাকার উপরে বিক্রি আসবে। কালাইগোবিন্দপুর ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. কাউছার আহামেদ বলেন, জৈব পদ্ধতিতে সাত্তার মিয়ার বাঙ্গি চাষ একটি সফল উদাহরণ। জৈব সার ব্যবহারে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পায়, ফলনও নিরাপদ থাকে এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়। তার এ উদ্যোগ এলাকার কৃষকদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। পোকা মাকড় থেকে রক্ষার জন্য দশ দিন অন্তর অন্তর টিডো (ইমিডাক্লোপ্রিড) স্প্রে করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, তিতাসের যে কয়জন প্রথম শ্রেণির কৃষক আছে; সাত্তার মিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম। বাণিজ্যিক কৃষির প্রতি তার প্রবল আগ্রহ রয়েছে। এবার পলি ব্যাগে চারা করে, সে চারা জমিতে রোপণ করেছে। তার দেখাদেখি এবার উক্ত ব্লকে তোফাজ্জল হোসেন, বাবুল মিয়াসহ ৭ জন কৃষক প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আগাম বাঙ্গি চাষ করেছে। কৃষি অফিস তাদের কারিগরি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
