ঢাকা বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গোলাম পরওয়ার

পঁয়ষট্টির পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই একাত্তরে আমাদের সহযোগিতা করে ভারত

পঁয়ষট্টির পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই একাত্তরে আমাদের সহযোগিতা করে ভারত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, আমাদের স্বাধীনতা নয়, বরং পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে লজ্জাজনক পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে ভারত আমাদের সহযোগিতা করেছিল। তারা আমাদের দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি না দিয়ে আওয়ামী বাকশালীদের মাধ্যমে দেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের মাধ্যমে সে অবস্থার অবসান হয়েছে।

তিনি বলেন, একাত্তরে পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ ভারতীয় বাহিনীর কাছে ছিল বিবেচনায় প্রতিবেশী দেশটি ১৬ ডিসেম্বরকে তাদের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে। এর মাধ্যমে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় যুব বিভাগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিজয় দিবস উপলক্ষে যুব ম্যারাথন শেষে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সে ঐতিহাসিক স্থান যেখানে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনী আমাদের ওপর জুলুমণ্ডনির্যাতনের ভুলের স্বীকৃতি দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছিল। কিন্তু প্রতিবেশী রাষ্ট্রের আধিপত্যবাদি মনোভাব ও তাদের এদেশীয় এজেন্টদের কারণে আমরা বিজয়ের স্বাদ পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারিনি এবং আমাদের স্বাধীনতাও সুরক্ষিত হয়নি। সবচেয়ে দুঃখজনক বিষয় হলো, পাক বাহিনী সেদিন আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ না করে ভারতীয় সেনা কর্মকর্তা জগজিৎ সিং আরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল। মুক্তিযুদ্ধে সর্বাধিনায়ক জেনারেল ওসমানী ছিলেন অনুপস্থিত। কেন অনুপস্থিত ছিলেন সে প্রশ্নের আজও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। তাই পাক বাহিনীর আত্মসমর্পণ ভারতীয় বাহিনীর কাছে বিবেচনায় প্রতিবেশী দেশটি ১৬ ডিসেম্বরকে তাদের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে। এর মাধ্যমে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছে।

তিনি বলেন, ভারতের এমন ন্যক্কারজনক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদসহ সব মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। তবে স্বাধীনতা শুধু একটি মাত্র ভূখণ্ড অর্জন নয়, বরং প্রকৃত বিজয় বা স্বাধীনতা হচ্ছে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠাসহ রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, ভোটাধিকার ও মানুষের অধিকারের স্বাধীনতা।

ওসমান হাদির ওপর হামলার বিষয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি বলেন, হাদি আমাদের মৃতুঞ্জয়ী জাতীয় বীর। এমন সময় তার ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়েছে, যার মাত্র একদিন আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। এতে প্রমাণ হয় যে, জাতীয় নির্বাচন বানচাল করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই হাদির ওপর এ ন্যক্কারজনক হামলা চালানো হয়েছে। মূলত, এ জুলাই যোদ্ধাদের শুরুতেই টার্গেট করা হয়েছে। কুচক্রীরা আর কাদের টার্গেট করেছে তা আমরা জানি না। তবে তালিকা বেশ দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আসন্ন নির্বাচনে জাতীয় নেতৃবৃন্দ, জুলাই যোদ্ধাসহ সব প্রার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় যুব বিভাগের সভাপতি ও জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। দলের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা-১২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন, ঢাকা-১৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মোবারক হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মূসা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা-১৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যক্ষ আশরাফুল হক, ঢাকা-১৭ আসনের ডা. এস এম খালিদুজ্জামান, ঢাকা-১৬ আসনের কর্নেল (অব.) আব্দুল বাতেন, ঢাকা-৬ আসনের জয়নাল আবেদীন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, নাসির উদ্দীন ও জামাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার নো’মান আহমেদী, যুব বিভাগের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সভাপতি মাঈনুদ্দীন প্রমুখ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত