বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর

‘রফিক আজাদের কবিতা : অনাবিষ্কৃত অধ্যায়’ শীর্ষক সেমিনার

প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে ‘রফিক আজাদের কবিতা : অনাবিষ্কৃত অধ্যায়’ শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গবেষক, প্রাবন্ধিক ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আহমেদ মাওলা। আলোচক ছিলেন কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক খোরশেদ বাহার এবং বিশিষ্ট কবি আসাদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনে অধ্যাপক ড. আহমেদ মাওলা বলেন, রফিক আজাদ ষাটের দশকের সবচেয়ে উজ্জ্বল, উচ্চকণ্ঠের কবি। আর্থসামাজিক রাজনৈতিক কারণে ষাটের দশকে কবিরা হয়ে ওঠেন কিছুটা কলাকৈবল্যবাদী। রফিক আজাদের কবিমানস গড়ে উঠেছে মূলত সময়তাড়িত শৈল্পিক যন্ত্রণা থেকে। বিশেষত দ্রোহী, আত্মস্বীকারোক্তিমূলক নতুন একটা মাত্রা যুক্ত করেন তিনি কবিতায়। কবিতাকে তিনি মনে করেন ব্যক্তিগত ভাবনার অকপট প্রকাশ। সমকালীনতা ও প্রাত্যহিকতা তার কাব্য-মানসের অন্যতম অবলম্বন। তার কবিমানসের আলাদা গুরুত্ব ও বৈশিষ্ট্য এখানেই। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র অংশগ্রহণ করে দেশ স্বাধীন করেন। অন্তরঙ্গে রোমান্টিক হলেও বহিরঙ্গে ক্লাসিক রফিক আজাদ যুদ্ধহীন এক মানবিক পৃথিবীর স্বপ্নময় ভবিষ্যৎ নির্মাণে তার কবিতা সতত সঞ্চরণশীল। বাস্তবতার প্রয়োজনে রফিক আজাদ দ্রোহী হলেও তিনি বিপ্লবী নন। তার কবিতায় আত্মঘোষণার ইশতেহার পাওয়া যায় সত্য, তবু তিনি বিনয়ী, তার উচ্চারণ প্রগাঢ়। সমকালীন বহির্জীবনের বেরী সঙ্গে নিজের ব্যক্তিসত্তাকে জড়িয়ে ‘রফিক আজাদের মুক্তি চাই’ শিরোনামে লিখে ফেলেন কবিতা। পঞ্চাশের কবিদের ‘আমি’ ‘তুমি’ আত্মকথনের তুলনায় রফিক আজাদ আরো অগ্রসর হয়ে কবিতায় নিজের নাম ব্যবহার করে নিজেই হয়ে ওঠেন আপন কবিতার নায়ক। বস্তুত রফিক আজাদের কবিতার পরিবেশচিন্তা আধুনিক বাংলা কাব্যের অন্য এক প্রান্ত, অনাবিষ্কৃত এক অধ্যায়। সর্বাংশে আধুনিক হয়েও আবহমান বাংলার মৃত্তিকায় গভীরভাবে প্রোথিত তার আবেগ, শান্ত-ছায়াঘন এক আদিম অরণ্য রফিক আজাদের অন্বিষ্ট।