চৈত্রের ভোরে শীতের কুয়াশা দেখল রাজশাহী!

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলা পঞ্জিকার পাতায় গতকাল ছিল ৮ চৈত্র। অর্থাৎ চলছে খরতাপের মৌসুম। কিন্তু চৈত্রের প্রথম সপ্তাহে যেন হঠাৎই খেয়ালি হয়ে উঠছে রাজশাহীর প্রকৃতি। এ সময় কেউ কোনো দিন কুয়াশা না দেখলেও ব্যাতিক্রমী সেই চিত্র সবাই দেখেছে গতকাল। গতকাল বুধবারের ভোর ঢেকে গিয়েছিল ঘন কুয়াশার চাদরে।

রাজশাহীতে গতকাল সূর্যোদয় হয়েছে ভোর ৬টা ৮ মিনিটে। কিন্তু ঘন কুয়াশার প্রলেপে সেই সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। ভোরে সূর্যোদয়ের পর পরই ঘন কুয়াশায় আবারো ঢেকে যায় সবুজ প্রকৃতি। ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখতে পাননি রাজশাহীবাসী। কয়েক দিন থেকে অব্যাহতভাবে তাপমাত্রা বাড়ার পর বৃষ্টি ঝরেছে গত দুই দিন আগে। এরপরই হঠাৎ প্রকৃতির এমন আকস্মিক পরিবর্তন দেখে সবাই হতচকিত! সচারাচর এমনটি হওয়ার কথা নয়। রাজশাহী আবহাওয়া অফিস বলছে- এ বছর অনেকটা আগেভাগেই বিদায় নিয়েছে শীত। ফাল্গুনের আগেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫ ডিগ্রির উপরে উঠে গেছে। এই গ্রীষ্মের শুরুতে রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ এরইমধ্যে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে। এরমধ্যে গত ১৬ মার্চ ০ দশমিক ৩ মিলিমিটার এবং ১৯ মার্চ ১৮ দশমিক ৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজশাহীতে। যদিও চৈত্র মাসে এমন সময় কুয়াশা পড়ার ঘটনা বিরল। জানতে চাইলে- রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাজীব খান গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার ভোরে সূর্যোদয় হলেও পরে কুয়াশা পড়ে। যা ভোর সাড়ে ৬টা পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। হঠাৎ প্রকৃতির এমন আচরণ কেন? সে সম্পর্কে তিনিও কোনো উত্তর দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গতকাল ভোর ৬টায় রাজশাহীর তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৬ শতাংশ।

এদিকে, তীব্র তাপদাহের পর ভোরের এমন স্নিগ্ধ কুয়াশায় মন ভুলেছে অনেকের। পবিত্র রমজানের দুই দিন আগে এমন কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় অনেকেই তৃপ্তি ও প্রশান্তি নিয়ে প্রাতভ্রমণ সেরেছেন। মন খুলে হেঁটেছেন। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া সবার মন জুড়িয়ে দিচ্ছে গরমে অস্বস্তিতে থাকা মানুষগুলোকে। তবে এমন কুয়াশা রাজশাহীর আমের মুকুল ও গুটির জন্য ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন। তিনি বলেন, এমন ঘন কুয়াশা দীর্ঘস্থায়ী হলে আমের মুকুলে ‘পাউডারি মিলডিউ’ নামে এক ধরনের রোগ দেখা দেয়। এতে আমের মুকুল ঝরে পড়ে। যার প্রভাব পড়ে আমের ফলনেও। যদিও এখন রাজশাহীর অধিকাংশ গাছে আমের গুটি চলে এসেছে বলে উল্লেখ করেন এই কর্মকর্তা।