উচ্চহারে সুদসহ ঋণে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে
প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
গত ৯ সেপ্টেম্বর গণমাধ্যমে প্রকাশিত ‘ঝিনাইদহে ঋণের চাপে আত্মহত্যা’ সংক্রান্ত সংবাদের প্রতি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। সংবাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানীতে ঋণের চাপে সিরাজুল ইসলাম সুরুজ (৫৫) নামের এক চা-দোকানি আত্মহত্যা করেছেন। স্থানীয়রা জানায়, সিরাজুল ইসলাম সুরুজ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবে শ্রমিকের কাজ করতেন। কয়েক বছর আগে দেশে ফিরে হলিধানী এলাকায় একটি চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। হঠাৎ করে তার দুই ছেলেকে বিদেশ পাঠাতে গিয়ে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। মৃত সিরাজুল ইসলাম সুরুজের পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়, যাতে লেখা ছিল- ‘সুদখোরদের অত্যাচারে বাঁচতে পারলাম না। আমার জায়গাজমি, বাড়ি সব বিক্রি করে দিয়েছি। একেক জনের কাছ থেকে যে টাকা নেওয়া, তার সাত-আট-দশ গুণ টাকা দিয়েও রেহাই দিল না তারা। কেউ কেস করেছেন, কেউ অপমান-অপদস্থ করেছেন। আমি আর সহ্য করতে পারছি না, তাই বিদায় নিলাম। আমার জানাজা হবে কি না জানি না। যদি হয়, তখন সব সুদখোর টাকা চাইতে এলে আমার শরীরটাকে কেটে ওদের দিয়ে দেবেন। সুদখোরদের বিচার আল্লাহ করবে। সুদখোরদের নাম বললাম না, কিন্তু তারা সবাই টাকার জন্য আসবে। তখন বুঝতে পারবেন, তারা কারা। আমি ক্ষমার অযোগ্য, তবু ক্ষমা করে দেবেন।’ কমিশন চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, দাদন ব্যবসায়ীদের উচ্চ সুদহারের ঋণ শোধ করতে না পেরে চাপের কারণে এ রকম আত্মহত্যার ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। উচ্চ হারে সুদসহ ঋণের ফাঁদ তৈরি করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি এবং আত্মহত্যায় প্ররোচনার মাধ্যমে মানবাধিকার চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ধরনের হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তি হওয়া সমীচীন মর্মে কমিশন মনে করে। এ অবস্থায়, উল্লিখিত ঘটনায় সিরাজুল ইসলাম সুরুজের আত্মহত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের যথাযথ তদন্তপূর্বক চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য পুলিশ সুপার, ঝিনাইদহকে বলা হয়েছে।
