ঢাকা ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পিলখানা হত্যাকাণ্ড

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি

চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরি পুনর্বহালের দাবি

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সংঘটিত পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে চাকরিচ্যুত নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৬৪ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত বিডিআর ঐক্য ২০০৯। এ সময় সংগঠনটির পক্ষ থেকে বিডিআর হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত শাস্তি দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে বিস্ফোরক আইনের মামলায় যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে জেলখানায় আটক আছেন অতি দ্রুত পিপি নিয়োগ করে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করারও দাবি জানানো হয়। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠটির পক্ষ থেকে চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্য সাঈদ আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা মনে করি হত্যাকাণ্ড ও পূর্বপরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত সবাইকে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক।

একই সঙ্গে অন্যান্য সব নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদেরকে সরকারি সব প্রকার সুযোগ সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করা হোক। তিনি বলেন, অল্প কিছু দিন আগে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে নতুন সরকারকে আরো কিছুদিন সময় দেয়া প্রয়োজন। এরই মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পুনঃতদন্তের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন। সরকারের এমন উদ্যোগকে আমরা সাধুবাদ জানাই। চাকরিচ্যুত এই বিডিআর সদস্য বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বাইরে কোনো ঘটনা না ঘটলেও ২৬ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাইরের বিভিন্ন ইউনিটগুলোতে গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় যে সেনাবাহিনী কর্তৃক বিডিআরের ইউনিটগুলো আক্রমণ করা হবে। এতে করে ২৬ তারিখে বাইরের ইউনিটের বিডিআর সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে। পরে তাদের গণহারে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রমাণ করতে না পারায় পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ আখ্যা দিয়ে গণহারে বিশেষ আদালত ১ থেকে ১৮ এর মাধ্যমে গণহারে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা করা হয়। এভাবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে একটি ঐতিহ্যবাহী ও সুশৃঙ্খল বাহিনীকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। আমরা আশা করি বর্তমান সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সব প্রকার অপরাধী ও চক্রান্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা নিশ্চিত করবে। জেল খানায় আটক নিরপরাধ বিডিআরদের জেল মুক্তিসহ সব ধরনের নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের সরকারি সব সুযোগ সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহালের ব্যবস্থা করবে। সাঈদ আহমেদ খান লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারত সরকার বাংলাদেশ সীমান্তে ভোর ৬টায় রেড অ্যালার্ট জারি করে অথচ পরে পিলখানায় ঘটনা ঘটে আনুমানিক সকাল ৯টায়।

ভারত সরকার পিলখানার পরিকল্পিত ঘটনা ঘটার ৩ ঘণ্টা আগে রেড অ্যালার্ট দেয়ার কারণ কী? পরবর্তী সময় আনুমানিক দুপুর ১২-২০ মিনিটে ভারতের বিভিন্ন মিডিয়ায় পিলখানায় হত্যা কাণ্ডের ব্যাপারে সংবাদ প্রচার করে যে তৎকালীন ডিজি বিডিআর ও তার স্ত্রীসহ অনেক সেনা অফিসার হত্যার শিকার হয়েছেন। অথচ বিডিআরের ১৩ সদস্যের কমিটি নিয়ে যমুনাতে মিটিং চলাকালে কোনো হত্যাকাণ্ড হয়েছে কী না প্রশ্ন করলে তারা তা অস্বীকার করে। যার ফলে দেশের জনগণের কাছে হত্যার ঘটনা অজানাই রয়ে গেছে। তিনি বলেন, আমরা গভীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, গত মাসের ৯ তারিখে তথাকথিত বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে একটি সংগঠন মানববন্ধনের আয়োজন করে সাংবাদিকদের সামনে চাকরিচ্যুত ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে নির্দোষ দাবি করে ও অসংলগ্ন বক্তব্য দেয়। স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে কারাবন্দিদের ব্যাপারে সরকারকে ৩০ দিনের আলটিমেটাম দেয়। কিন্তু আমরা তাদের এই সব দাবিকে নৈতিকভাবে সমর্থন করি না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত