নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও সাধারণ মানুষকে স্বস্তি দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, তারা এখনো বাজার সিন্ডিকেট দমন করতে পারেনি। পণ্যের লাগামহীন উচ্চমূল্যে দিশাহারা মানুষ। প্রতিদিনের সংসারের ব্যয় মেটাতে জনগণকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। গতকাল নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির মধ্যে ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মাঝপথে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। তাতে দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরেক দফা বাড়ছে সাধারণ মানুষের। এমনিতেই মূল্যস্ফীতির ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার কারণে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠছে। সেখানে জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, এলপি গ্যাস, গুঁড়া দুধ, বিস্কুট, আচার, টমেটো কেচাপ বা সস, জুস, টিস্যু পেপার, ফলমূল, সাবান-ডিটারজেন্ট পাউডার, মিষ্টি, চপ্পলের ওপর ভ্যাট হার বৃদ্ধি মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষকে আরো চাপে ফেলবে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, এখনো লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। এমন পরিস্থিতিতে ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আত্মঘাতীমূলক। এ ধরনের কর এমন এক সময়ে বাড়ানো হলো- যখন দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজমান। উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপে শুধু নিম্ন আয় ও প্রান্তিক আয়ের মানুষ নয়, মধ্যবিত্তরাও হিমশিম খাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন বিএনপি এই নেতা। তিনি বলেন, বাজেটের আগেই এসব পণ্য ও সেবার দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমবে। নতুন করে সংকটে পড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য। রিজভী বলেন, দুর্ভোগ মেনে নিলেও জনগণ এখনো সরকারের বিরুদ্ধে তেমন উচ্চবাচ্য করছে না। কারণ, জনগণ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সফল দেখতে চায়। তবে, সরকার নিজেরা নিজেদের সফল দেখতে চায় কি না, মানুষের ক্ষুধা নিবৃতির কার্যক্রমের মাধ্যমে সেটি তাদেরই প্রমাণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিতি ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নাল আবদীন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স প্রমুখ।