রংপুরে জুলাই স্মারকের মোড়ক উন্মোচন

প্রকাশ : ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  রংপুর ব্যুরো

রংপুরেও জামায়াতের জুলাই-২৪ এর স্মারক ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতায় শহীদ যারা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে নগরীর শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে উন্মোচন অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় আমির ডা. শফিকুর রহমান। চব্বিশের রক্তস্নাত শহীদদের তথ্য সম্বলিত ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষে রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামী এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের বোনেরা, বিধবা স্ত্রীরা যেন দেখতে পায় তাদের স্বামী হত্যার বিচার হয়েছে। ইনশাআল্লাহ সেটা আমরা নিশ্চিত করব। আমরা ৭১৭ জন শহীদ ও তাদের পরিবারের তথ্যসহ দশ খণ্ডের একটি স্মরণিকা প্রকাশ করছি। আরো ৯৩ জন শহীদের তথ্য সন্নিবেশিত করার জন্য আরো দুটি খণ্ডের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই ১২টি খণ্ডে শহীদদের অবদানের কথা, তাদের পরিবারের কথা রয়েছে। কোথাও কোনো ভুল তথ্য থাকলে সেটি সংশোধনও করা হবে। শহীদদের প্রতি সম্মান এবং তাদের অবদান, অম্লান ও জাগ্রত রাখতে ‘২য় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগ জামায়াতে ইসলামী নিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, মানুষ যেন চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস ভুলে না যায়, সেটির জন্য ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতার শহীদ যারা’ শীর্ষক এই স্মরণিকা প্রকাশ। এটি বিচার সহায়ক হিসেবে আইনজীবীদের কাজে লাগবে। এই স্মরণিকা আমাদের পক্ষ থেকে ডিসি, এসপি, আইনজীবী সমিতিসহ গুরুত্বপূর্ণ সবজায়গাতেই পৌঁছে দেব। চব্বিশের জুলাই বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলার কারণ প্রসঙ্গে আবদুল হালিম বলেন, আমাদের স্বাধীনতা সাতচল্লিশ, আমাদের স্বাধীনতা এসেছিল একাত্তরে। স্বাধীনতার জন্য আমাদের দেশের মানুষ নব্বই সালেও জীবন দিয়েছিল। চব্বিশের জুলাই বিপ্লবকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলার কারণ স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও আমরা কথা বলতে পারতাম না। আমরা মসজিদে নির্বিঘ্নে নামাজ পড়তে পারতাম না। জামায়াতে ইসলামীর নেতারা বায়তুল মোকাররমে দশ বছর নামাজ পড়তে যেতে পারেননি। বিয়ের অনুষ্ঠানেও আমরা যেতে পারিনি।

এজন্য মানুষ বলে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্যের নামে জাতিকে বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। আমরা মনে করি আমরা ঐক্যবদ্ধ জাতি হতে চাই। বাংলাদেশ প্রশ্নে আমরা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকব। আমাদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি থাকবে। আমরা একেকজন একেক দল করতে পারি কিন্তু বাংলাদেশের প্রশ্নে আমি দেশের গর্বিত নাগরিক, এটি হবে আমাদের সকলের পরিচয়। জামায়াতের এই নেতা বলেন, বাংলাদেশে আগ্রাসী শক্তির থাবা বিস্তার করে রেখেছিল। রংপুরের তিস্তা মহাপরিকল্পনা তারা বাস্তবায়ন হতে দেয়নি। সেই শত্রুকে চিন্থিত করতে হবে।

বাংলাদেশের শত্রুকে চিন্থিত করতে হবে। এই চিন্থিত করার মূল লক্ষ্য হচ্ছে আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হেফাজত করব। শহীদ ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে বিদ্ধ হয়ে থাকার মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বও বিদ্ধ হয়েছিল। শহীদ ফেলানীর মতো আর কারো জীবন যাক, এটা আমরা চাই না। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, অধ্যাপক মাহবুবার রহমান বেলাল ও জেলা আমির অধ্যাপক গোলাম রব্বানীসহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির এ.টি.এম আজম খান।