দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাক

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চট্টগ্রাম ব্যুরো

বাণিজ্যিক মোটরযানের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করাসহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ। দাবি না মানলে আগামী ১২ আগস্ট ভোর ৬টা থেকে সারাদেশে ৭২ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরের স্টেশন রোডের হোটেল সৈকতে বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা দেন কফিল উদ্দিন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক সমন্বয় পরিষদের আট দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ সমাবেশের আয়োজন করে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণ ও পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশন এবং বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিটি।

কফিল উদ্দিন আহমেদ বলেন, যোগাযোগ উপদেষ্টার কাছে আমরা এই আট দফা দাবি জানিয়েছি। সারা দেশেই দাবির পক্ষে প্রচার চলছে। উপদেষ্টা দুটি দাবি মানার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে আমরা বলেছি, সব দাবি মানতে হবে। আগামী ১১ আগস্ট বিকালের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে ১২ আগস্ট ভোর ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট ভোর ৬টা পর্যন্ত সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘট পালন করা হবে। তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ ধারায় বলা হয়েছে, একজন চালকের গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তার জামিন মিলবে না, পাঁচ বছর কারাদণ্ড এবং পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমরা বলছি, দুর্ঘটনার কারণে মামলা হতে পারে, কোর্ট সাজা দিতে পারে। কিন্তু জামিন পাওয়া যাবে কি না তা নির্ধারণ করা আদালতের বিষয়। এটি নাগরিক অধিকার। আইনে জামিন নিষিদ্ধ করে রাখা উচিত নয়। এই ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। সমাবেশ থেকে জানানো হয়, আট দফা দাবি না মানা হলে আন্দোলন আরও বিস্তৃত হবে এবং ধর্মঘট থেকে পেছানোর সুযোগ থাকবে না।

আট দফা দাবি হলো : সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮-এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারা সংশোধন করা। পুরোনো বাণিজ্যিক যানবাহনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল (ইকোনমিক লাইফ) ২০ ও ২৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ৩০ বছর করা, সেটা না হওয়া পর্যন্ত পুরোনো গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখা। বাজেটে বাণিজ্যিক যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর কমিয়ে আগের মতো বহাল করা। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন আমদানির সময়সীমা ৫ থেকে বাড়িয়ে ১২ বছর করা। দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান কার্যকর করা। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা প্রণয়ন করা। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন ও অনুমোদনহীন হালকা যানবাহনের জন্য আলাদা লেন তৈরি করা। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুত দেওয়া এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা বাস্তবায়ন করা। বৃহত্তর চট্টগ্রাম পণ্য পরিবহন মালিক ফেডারেশনের সভাপতি মোরশেদুল আলম কাদেরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন হুমায়ুন কবির খান, একরামুল করিম ও হুমায়ুন কবির সোহেল।