ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এনসিপি নেতার পদত্যাগ
প্রকাশ : ১০ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
চট্টগ্রাম ব্যুরো
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলা সমন্বয় কমিটি থেকে এ ইউ মাসুদ (আরফান উদ্দিন) পদত্যাগ করেছেন। গত শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পোস্ট দিয়ে তিনি এ সিদ্ধান্ত জানান। তিনি কমিটিতে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী পদে ছিলেন।
ফেসবুক পোস্টে পদত্যাগপত্র আকারে এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর বরাবর একটি লেখা লেখেন এ ইউ মাসুদ। তিনি লিখেছেন, এনসিপির সূচনালগ্ন থেকে সাতকানিয়া উপজেলায় সাংগঠনিক কার্যক্রমে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। গত ২৫ জুন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ স্বাক্ষরিত চিঠির মাধ্যমে সাতকানিয়া উপজেলা সমন্বয়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে তাকে ১ নম্বর যুগ্ম সমন্বয়কারী হিসেবে রাখা হয়েছে।
পোস্টে তিনি অভিযোগ করে বলেন, কমিটি ঘোষণার ক্ষেত্রে এক ব্যক্তির একক সিদ্ধান্তে কোনো ধরনের আলোচনা বা পরামর্শ ছাড়া এই কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার পরিপন্থী। তা ছাড়া তিনি এই পদে থাকবেন, এ ব্যাপারে তাকে আগে অবগত করা হয়নি। এ কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন। পাশাপাশি এরপর থেকে এনসিপির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আর কোনো সম্পর্ক রাখবেন না।
এ ইউ মাসুদ সাতকানিয়ার একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। এনসিপির শুরু থেকে তিনি যুক্ত ছিলেন। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, কমিটিতে পদ দেওয়ার আগে তার সঙ্গে কথা বলা হয়নি। এক ব্যক্তির বলতে তিনি এনসিপির দক্ষিণ জেলার সমন্বয়ক সিফাত হোসাইনকে বুঝিয়েছেন। মূলত তার একক সিদ্ধান্তেই এ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ইউ মাসুদ বলেন, ‘কমিটি দেওয়ার আগে জানানো হয়েছিল, আমি প্রধান সমন্বয়কারীর পদ পাব। কিন্তু কমিটি প্রকাশ হওয়ার পর দেখলাম, যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদ দেওয়া হয়েছে। ফলে এখানে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন কিংবা সম্পর্ক অনুঘটক হিসেবে কাজ করতে পারে। অর্থাৎ ওনারা (এনসিপি) পুরোনো ধাঁচেই রাজনীতি করে যাচ্ছেন। পদণ্ডপদবি দেওয়ার ক্ষেত্রে বা কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের চর্চাগুলো হয়, সেগুলোই দেখা গেছে।’
এ ইউ মাসুদের অভিযোগের বিষয়ে দলটির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সংগঠক সিফাত হোসাইন বলেন, ‘কমিটি গঠনের পর এ ইউ মাসুদের বিষয়ে অভিযোগ আসতে থাকে। তিনি আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী ছিলেন। এ অভিযোগের বিষয়ে তিনি নিজের অবস্থান পরিষ্কার করতে পারেননি। এ কারণে কমিটির বাকি সদস্যরা তাকে নিয়ে কাজ করতে আগ্রহী ছিলেন না। এসব কারণে তিনি পদত্যাগ করেছেন। এ ছাড়া কমিটি দেওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেন বা সম্পর্ক; কোনোটাই ঘটেনি।’
এর আগে ১ আগস্ট রাত ১০টা ৪৪ মিনিটে নিজের ফেসবুক পেজে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম। ১৬ মিনিট ৩৬ সেকেন্ড তিনি লাইভে ছিলেন। এ সময় ফাতেমা বলেন, ‘চট্টগ্রামের কিছুসংখ্যক মানুষের স্বার্থের কাছে, তাদের চাওয়া-পাওয়ার কাছে আমাদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে। হারিয়ে গেছেন আন্দোলনের সম্মুখসারিতে থাকা অনেকে। এখন বলতে গেলে কেউই নেই। এই সবকিছুর জন্য কিছুসংখ্যক ভাই-ব্রাদার দায়ী। তারা কেন্দ্রের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে চট্টগ্রামে একটার পর এক কোরাম বানিয়েছেন। এর দায় আপনাদের নিতে হবে।’
