রাষ্ট্রের অঙ্গগুলোর সমন্বয় ছাড়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব

প্রকাশ : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাষ্ট্রের নির্বাহী, আইন ও বিচার বিভাগ পরস্পরের মধ্যে সমন্বয় ছাড়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। বাংলাদেশ সিভিল রাইটস্ সোসাইটির ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে এ কথা বলেন তিনি। আলাল বলেন, সরকারগুলো অস্থায়ী, রাষ্ট্রই একমাত্র স্থায়ী। সুতরাং রাষ্ট্রই পারে বাংলাদেশের নাগরিক অধিকারকে স্থায়িত্ব দিতে এবং সেটাকে একটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে। এখন রাষ্ট্র কীভাবে পারবে? রাষ্ট্রের যে অঙ্গগুলো রয়েছে আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ এবং নির্বাহী বিভাগ এই তিনটি মূল অনুষঙ্গের মধ্যে যদি আন্তঃসংযোগ না থাকে, ইন্টার-কমিউনিকেশন না থাকে, তাহলে রাষ্ট্রের পক্ষে সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এই তিনটিকে সমন্বিতভাবে একটি জায়গায় এনে, তাদের মধ্য থেকে উৎসারিত চিন্তা এবং সেই চিন্তার ভিত্তিতে আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের মাধ্যমে মানবাধিকারকে দীর্ঘমেয়াদি করার সুযোগ তৈরি করা সম্ভব। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের বৃহত্তম ভোটারের দেশ হচ্ছে ভারত। সে ভারতে এখন পর্যন্ত তাদের জাতীয় সংবিধান ১০৮ বার সংশোধিত হয়েছে। সুতরাং সংস্কারের কিংবা বিশুদ্ধতার কোনো শেষ নেই। এটা একটি অন্তহীন প্রক্রিয়া।

বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আলাল বলেন, মুক্তির লড়াই আমরা এখনও করছি। আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমান সাহেব বলছেন, আমাদের কিছু কর্মী কি সেই কথাগুলো শুনছেন? সংবাদমাধ্যম কী তার প্রমাণ দিচ্ছে? তারা কি কুকীর্তির মধ্যে জড়িয়ে পড়ছেন না? তারা কি অনেক জায়গায় মানুষের কাছে ঘৃণার পাত্র হচ্ছেন না? তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি আশা থেকে নিরাশা, নিরাশা থেকে প্রত্যাশা। আমরা সেই প্রত্যাশা নিয়েই বেঁচে থাকতে চাই। কারণ, প্রত্যাশা যদি মানুষের মনে না থাকে, সে জীবনে কোনো কিছুই করতে পারে না। আমরা তো এক ডক্টর সাহেবকে নিয়ে বিশাল প্রত্যাশা করে বসে আছি। কতটুকু হয়েছে, কতটুকু সামনে হবে সেটা দেখার অপেক্ষা, আর সেটা বিবেকবোধের বিষয় বলে আমরা মনে করি।

তিনি আরও বলেন, মানুষকে ধর্মের নামে উদ্বেলিত করে পকেটে হাত দিতে বাধ্য করলে, তখন সেটা চাঁদা হয় না—সেটা হয়ে যায় হাদিয়া। আর যদি অন্য রাজনৈতিক দল, যারা ক্যাডার-ভিত্তিক নয়, ধর্মভিত্তিক নয়, উদার গণতান্ত্রিক দল হয় তারা নিলে সেটা হয়ে যায় চাঁদাবাজি। এই প্রকারভেদেও মানবাধিকারের প্রশ্ন রয়েছে। কারণ মানবাধিকার তো সবার জন্য প্রযোজ্য হওয়া উচিত। আলাল বলেন, ‘বাংলাদেশের তথ্য অধিকার আইন থাকলেও এর কোনো বাস্তব প্রয়োগ নেই। সরকারি দপ্তরে আইনটি টানানো থাকলেও তথ্য চাইলে সাধারণ মানুষ সদুত্তর পায় না, বরং অপদস্থ হওয়ার ঝুঁকিই বেশি থাকে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ।