দামের আগুনে পুড়ছে সবজি বাজার
প্রকাশ : ৩০ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

সবজির বাজারে উত্তাপ যেন কমছেই না। যোগান সংকটের অজুহাতে দামও বেড়েছে কয়েকগুণ। সরবরাহে খুব একটা ঘাটতি আছে, তেমনটি চোখে পড়ে না। তবুও, বিক্রেতাদের দাবি, বাজারে সবজির যোগান কম। আর এমন অজুহাতে চলছে লাগামছাড়া দাম বৃদ্ধি। কখনও বৈরি আবহাওয়া, আবার কখনও মৌসুম শেষ, এমন বাহানা খুচরা বিক্রেতাদের। প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে বাজারে অতিরিক্ত বাড়তি দাম যাচ্ছে সব ধরনের সবজির। কিছুতেই ক্রেতাদের নাগালে আসছে না দাম, শুধু কাঁচা পেঁপে আর আলু ছাড়া বলতে গেলে সব সবজিই ৮০ থেকে ১০০ টাকার ঘরে। চড়া দামের কারণে খুচরা বাজারে সবজি বিক্রিও কমেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে। বাজারে প্রতি কেজি ঢ্যাঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, প্রতি কেজি করলা ১০০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন (গোল) ১২০ টাকা, শসা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ধন্দুল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, প্রতি কেজি বেগুন (লম্বা) ৮০ টাকা, আলু প্রতি কেজি ২৫ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ২০০ টাকা এবং প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী মাসুদ রানা। সবজির দাম বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমানে সবজির যে দাম এতে করে আধা কেজি বা আড়াইশ’ গ্রাম করে সবজি কিনতে হচ্ছে। বাজারে ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। শুধুমাত্র আলু আর কাঁচা পেঁপের দাম কম। এত বেশি দাম থাকলে আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতারা কীভাবে সবজি কিনে খাবে? তারপরেও যেহেতু সবজি ছাড়া উপায় নেই, সে কারণে বাধ্য হয়ে কোনো সবজি আড়াইশ’ গ্রাম, কোনোটা আধা কেজি এভাবে কিনতে হচ্ছে আমাদের মতো ক্রেতাদের।
রামপুরা বাজারের সবজি বিক্রেতা সানাউল হক বলেন, বাজারে সবজির দাম বাড়তিই যাচ্ছে। দাম বাড়তি থাকায় আমাদের ব্যবসায় ধস নেমেছে। ক্রেতারা এখন আর বেশি সবজি কিনছে না।আগে যেখানে এক আইটেম সবজি ১৫-২০ কেজি করে আনতাম, এখন সেসব সবজিই ৪-৫ কেজি করে এনেও বিক্রি করতে পারছি না। সবজির দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্রেতাদের মতো আমরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। মালিবাগ বাজারের আরেক সবজি বিক্রেতা মুকিদুর রহমান বলেন, বেশিরভাগ সবজির এখন মৌসুম নয়। মৌসুম শেষ হওয়ার কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে, ফলে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া টানা কিছুদিনের বৃষ্টিতে সবজির ক্ষেতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সবজির দামের উপর প্রভাব পড়েছে। মানুষ এখন খুব কম পরিমাণে? সবজি কিনছে, ফলে আমাদের বিক্রির উপর প্রভাব পড়েছে।
পাইকারি বাজারে আগে এক পাল্লা সবজি যে দামে কিনতাম এখন তার চেয়ে অনেক বেশি দামে কিনতে হয়। পাইকারি বাজারে আমাদের কেনা দাম কম পড়লে, খুচরা বাজারে আমরা কম দামে বিক্রি করতে পারব। মুদি দোকানের পণ্যের দামে কোনো পরিবর্তন আসেনি। শুধু প্রতি কেজিতে মোটা মুসরের ডালের দাম কমেছে ৫ টাকা এবং এলাচের দাম কমেছে ৫০ টাকা। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। এছাড়া এলাচি ৪ হাজার ৭৫০ টাকা, দারুচিনি ৫০০ টাকা, লবঙ্গ ১ হাজার ২৮০ টাকা, সাদা গোল মরিচ ১ হাজার ৩৫০ টাকা ও কালো গোল মরিচ ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
