সিলেটসহ ১২ জেলায় চালু হচ্ছে পাইলট প্রকল্প

প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  সিলেট প্রতিনিধি

বিচার ব্যবস্থায় দ্রুত সমাধান ও মামলার চাপ কমাতে দেশে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে মামলার পূর্ববর্তী বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা ব্যবস্থা। আজ বৃহস্পতিবার থেকে এটি পাইলট প্রকল্প হিসেবে ১২টি জেলায় কার্যকর হচ্ছে। এই উদ্যোগের আওতায় আটটি নির্দিষ্ট আইনের অধীন মামলা দায়েরের আগে মধ্যস্থতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে : পারিবারিক বিরোধ, পিতা-মাতার ভরণপোষণ, বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত বিরোধ, যৌতুক সংক্রান্ত অভিযোগ, খোরপোষ, বিবাহ-বিচ্ছেদ সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধ, সন্তান হেফাজতের দাবি, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক বিরোধ। এইসব বিষয়ের যেকোনো একটি নিয়ে মামলা করার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে আগে মধ্যস্থতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। যদি মধ্যস্থতা ব্যর্থ হয়, তখনই কেবল আদালতে মামলা দায়ের করা যাবে। এই পাইলট প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে ১২টি জেলায় চালু করা হচ্ছে। জেলাগুলো হলো : সিলেট, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ, রংপুর, দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রাঙামাটি। গতকাল বুধবার বিকালে সিলেটে এই প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং বিশিষ্ট আইন বিশেষজ্ঞ ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ‘বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রতা ও মামলার জট কমাতে এই উদ্যোগ একটি বড় মাইলফলক হতে যাচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ সহজে ও দ্রুত ন্যায়বিচার পাবে।’ বাংলাদেশের আদালতগুলোতে বর্তমানে লাখ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। অনেক সময় মামলাগুলো বছরের পর বছর ঝুলে থাকে। অনেক ক্ষেত্রেই মামলা ছাড়া আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব হয়, কিন্তু আইনি পদ্ধতির অভাবে সেটি হয় না। এই নতুন নিয়মের ফলে, মামলা দায়েরের আগেই বিবাদমান পক্ষগুলোর মধ্যে আলোচনার সুযোগ তৈরি হবে এবং দ্রুত সমাধান পাওয়া যাবে। পাইলট প্রকল্প সফল হলে ভবিষ্যতে দেশের সব জেলায় এই বাধ্যতামূলক মধ্যস্থতা কার্যক্রম চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে সময় ও খরচ বাঁচবে, পাশাপাশি আদালতের ওপর চাপও অনেকটাই কমে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ উদ্বোধন অনুষ্ঠান জার্মান ফেডারেল মিনিস্ট্রি ফর ইকনমিক কোঅপারেশন এন্ড ডেভলাপমেন্ট (বিএমজেড) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অর্থায়নে অ্যাক্সেস টু জাস্টিস ফর উইমেন প্রজেক্ট, জিআইজেড বাংলাদেশ এর কারিগরি সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ যুগান্তকারী উদ্যোগ বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিষ্পত্তিতে সহায়ক হবে যা মামলাজট কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এর ফলে বিচারপ্রার্থীগণ স্বল্প সময়ে, নামমাত্র খরচে সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে আইনগত সহায়তা পাবেন।