২১ জুলাইকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শোক দিবস’ পালনের দাবি

মাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত

প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে গত ২১ জুলাই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে। এই দিনটিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘শোক দিবস’ হিসেবে পালন করার দাবি জানিয়েছে হতাহত ব্যক্তিদের পরিবার। এ ছাড়া তারা বলেছে, নিহত সবাইকে শহিদের মর্যাদাসহ প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে। দুর্ঘটনায় নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায়। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে আছে ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। দায়ী ব্যক্তিদের বিচার করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হেলথ কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। নিহত ব্যক্তিদের কবর সংরক্ষণ করতে হবে। নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে উত্তরায় একটি মসজিদ নির্মাণ করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে দাবিগুলো তুলে ধরেন দুর্ঘটনায় নিহত নাজিয়া ও নাফির বাবা আশরাফুল ইসলাম।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর যখন বাচ্চাদের পেয়েছেন, তখন তারা তাদের চিনতে পারেননি। অনেক দিন হলো তারা ঘরে রান্না করতে পারেন না। তার স্ত্রী বিছানা থেকে উঠতে পারেন না, কারও সঙ্গে দেখা করেন না। নিহত সবাইকে শহিদের মর্যাদা দেওয়ার দাবির প্রসঙ্গে আশরাফুল ইসলাম বলেন, শুধু পাইলট আর শিক্ষক শহিদ হতে পারেন না। সবাই শহিদ। সবাই ইউনিফর্ম পরা ছিল। শিক্ষার্থীরা কেন বৈষম্যের শিকার হবে? নিহত তাসমিয়া হকের বাবা নাজমুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন- সন্তানদের মধ্যে যারা আহত, তাদের অনেকের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তারা আর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে কি না তা তারা জানেন না। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। আবার অনেকে আছে, যাদের দীর্ঘ সময় চিকিৎসার মধ্যে থাকতে হবে। কয়েকজন আহত শিক্ষক আছেন, যারা আর কখনও কর্মক্ষেত্রে ফিরতে পারবেন না, অথচ তাদের ছিল উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বলে, তারা অবর্ণনীয় ট্রমার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে। অনেকের জীবন-জীবিকা থমকে গেছে।

বর্তমানে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছাড়া আর কেউ তাদের খোঁজখবর নিচ্ছে না। প্রধান উপদেষ্টা তিনজন শিক্ষকের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি। রেজাউল করিমের ছেলে সামিউল এই দুর্ঘটনায় নিহত হয়। এই বাবা বলেন, তারা ভালো নেই। দুই মাস ধরে তারা ঘুমাতে পারেন না। এ দেশে এতো মানুষ, তবু পাশে কি কাউকে তারা পাবেন না? এই মুহূর্তে তাদের স্কুলের বারান্দায় থাকার কথা ছিল। কিন্তু এখানে সরকার তাদের পাশে আসেনি।