আজ থেকে সচিবালয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক নিষিদ্ধ
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

আজ থেকে বাংলাদেশ সচিবালয়ে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বা সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক (এসইউপি) সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হিসেবে চিহ্নিত এসব পণ্য বন্ধে সচিবালয়কে অনুসরণীয় উদাহরণ হিসেবে গড়ে তুলতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সচিবালয়ের সব প্রবেশপথে চেকিং করা হবে। ভেতরে পলিথিন বা একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক পাওয়া গেলে তা ব্যবহার রোধ করা হবে। যার কাছে নিষিদ্ধ ব্যাগ থাকবে, তাদের কাগজ বা পুনঃব্যবহারযোগ্য ব্যাগ দেওয়া হবে। প্রবেশপথসহ সচিবালয়ের বিভিন্ন জায়গায় সচেতনতার জন্য বোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। পুরো বিষয়টি পর্যবেক্ষণে মনিটরিং টিম কাজ করছে।
সচিবালয়কে ‘এসইউপি-মুক্ত’ এলাকায় পরিণত করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগের মূল লক্ষ্য হলো সরকারি দপ্তরগুলোতে প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধ করে পরিবেশবান্ধব ও পুনঃব্যবহারযোগ্য পণ্য ব্যবহারের সংস্কৃতি গড়ে তোলা। এরইমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সব মন্ত্রণালয় ও দপ্তরকে এসইউপি নিষিদ্ধের বিষয়ে বিশেষ নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- সচিবালয়ের সভা, সেমিনার বা দাপ্তরিক কাজে আর কোনো একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক সামগ্রী যেমন বোতল, কাপ, প্লেট, চামচ ইত্যাদি ব্যবহার করা যাবে না। এর পরিবর্তে পাট, কাপড় বা পুনঃব্যবহারযোগ্য উপকরণ ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি ক্রয়ের ক্ষেত্রে এখন থেকে পরিবেশবান্ধব বিকল্প পণ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সভা-সেমিনারে প্লাস্টিকের বোতল বা প্যাকেটের পরিবর্তে কাগজ বা বায়োডিগ্রেডেবল সামগ্রী ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্লাস্টিকবিহীন পণ্য ব্যবহারে উৎসাহিত করতে প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে একজন ফোকাল পারসন এবং একটি মনিটরিং কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সচিবালয়ে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অফিস ব্যবহারের জন্য বিকল্প সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। একইসঙ্গে সচিবালয়ের আশপাশে প্লাস্টিক সামগ্রী বিক্রি বা বহনে কঠোর নজরদারি থাকবে।
সরকার আশা করছে, সচিবালয়ে এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি দপ্তর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোও প্লাস্টিকবিরোধী কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত হবে। পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সিদ্ধান্ত পরিবেশ সংরক্ষণ ও টেকসই উন্নয়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তারা বলেন, সচিবালয় যদি উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারে, তবে তা গোটা দেশের প্রশাসনিক ও সামাজিক কাঠামোয় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আগামী ৫ অক্টোবর থেকে সচিবালয়কে সম্পূর্ণভাবে এসইউপি-মুক্ত ঘোষণা করতে সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা কামনা করেছে সরকার।
