বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্রয় কার্যক্রম হবে দুর্নীতিমুক্ত
* স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত ক্রয়ে ভিসির কড়া নির্দেশ * ক্রয় প্রক্রিয়ায় আইন মেনে চলার ওপর জোর * চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণায় কার্যকর ক্রয়ের গুরুত্ব * জরুরি যন্ত্রপাতি ক্রয়েও নিয়ম মানার তাগিদ * ক্রয় প্রক্রিয়ায় জটিলতা নিয়ে ভীত না হওয়ার আহ্বান
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমইউ) সব ধরনের কেনাকাটা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের কর্মকর্তাদের কড়া বার্তা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম। সতর্ক করে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় কার্যক্রম হতে হবে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত। রোগী সেবা, চিকিৎসা শিক্ষা এবং গবেষণার উন্নয়নে ক্রয় কার্যক্রম অপরিহার্য, তবে আইন ও নিয়ম মেনে তা কার্যকরভাবে সম্পন্ন করতে হবে। গতকাল রোববার বিএমইউর শহিদ ডা. মিল্টন হলে অর্থ ও হিসাব অফিসের উদ্যোগে আয়োজিত দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন ভিসি। কর্মশালায় মূল আলোচ্য বিষয় ছিল পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬ ও রুলস ২০২৫। অধ্যাপক ডা. মো. শাহিনুল আলম বলেন, রোগীদের প্রয়োজন ও কল্যাণে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে ক্রয় কার্যক্রমের গুরুত্ব অপরিহার্য। তবে ক্রয় কার্যক্রম হতে হবে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত।
ক্রয় কার্যক্রমে বিধিবিধান মেনে চলতে হয়, যে কারণে কিছুটা জটিলতা মোকাবিলা করতে হয়। অনেকে এবার এসব কারণে ক্রয় কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন। এটা একেবারেই ঠিক না। তিনি বলেন, আমাদের অনেক সময় নতুন যন্ত্রপাতি ক্রয়, পুরাতন যন্ত্রপাতি মেরামতসহ নানা ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয়। মনে রাখতে হবে ক্রয় হবে রোগীদের কল্যাণে আর আইনও মেনে চলতে হবে। আইন হয়েছে আটকানোর জন্য নয়, উন্নয়নের জন্য। তাই যারা ক্রয়ের দায়িত্বে আছেন, বিশেষ করে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে, তাদেরকে রোগীদের স্বার্থে, চিকিৎসা শিক্ষার স্বার্থে, বিভাগের উন্নয়নে ক্রয়ের দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে। অবশ্যই তাদেরকে আরও উদ্যোগী হতে হবে। উদ্যোগী হলে নিয়ম মেনে ক্রয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব। বিএমইউ ভিসি আরও বলেন, জরুরি যেসব যন্ত্রপাতি প্রয়োজন বা মেরামত প্রয়োজন তাও নিয়ম মেনে ক্রয় সম্পন্ন করা সম্ভব। প্রয়োজনীয় অনেক কিছুই আগামী এক-দুই মাসের মধ্যেই ক্রয় করা সম্ভব। এজন্য আরএফকিউ, ডিপিএম, ওপেন টেন্ডারসহ বিভিন্ন ক্রয় পদ্ধতি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকাও প্রয়োজন।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ। সভাপতিত্ব করেন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) খন্দকার শফিকুল হাসান (রতন)। প্রশিক্ষণ কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (প্রশাসন) আফরোজা পারভীন এবং ন্যাশনাল একাডেমি ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের চিফ ইনস্ট্রাক্টর মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। বিভিন্ন বিভাগের ক্রয় কার্যক্রমের দায়িত্বে থাকা প্রায় ৪০ জন শিক্ষক ও কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) নাছির উদ্দিন ভূঞা, মোহাম্মদ বদরুল হুদা, উপ-পরিচালক মো. মাসুদ আলম, সহকারী পরিচালক মো. আবু নাজির, অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস অফিসার মো. আব্দুল মতিন প্রমুখ। এছাড়াও শিক্ষক, চিকিৎসক ও কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
অংশগ্রহণকারীরা জানান, এ কর্মশালার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পর্কে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের জ্ঞান ও দক্ষতা আরও বৃদ্ধি পাবে, যা ভবিষ্যতে রোগী সেবা ও শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
