নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্টদের নৈতিকতা প্রদর্শনের আহ্বান
প্রকাশ : ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আলোকিত ডেস্ক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন ও সংশ্লিষ্টদের সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতা প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটি। গতকাল সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই আহ্বান জানান তারা। সাংবাদিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন- ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটির সভাপতি ও সরকারের সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. খন্দকার রাশেদুল হক। এ সময় অবস্থানপত্র তুলে ধরেন- সংগঠনের সদস্য-সচিব ও সরকারের সাবেক সচিব এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. মো. শরিফুল আলম। ফেয়ার ইলেকশন অ্যাডভাইজরি কমিটি কর্তৃক উপস্থাপিত অবস্থানপত্রে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে কিছু অগ্রাধিকারমূলক করণীয় তুলে ধরা হয়। অবস্থানপত্রে ড. মো. শরিফুল আলম বলেন, অতীতের তিনটি (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) অগ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পর জাতি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অপেক্ষায়।
প্রধান উপদেষ্টা এরইমধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতি তার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। তাই এ অঙ্গীকারকে বাস্তবায়ন করতে নির্বাচন কমিশন ও মাঠ প্রশাসনকে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব ও নৈতিকতা প্রদর্শন করতে হবে। অবস্থানপত্রে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিম্নোক্ত পাঁচটি প্রধান সুপারিশ করা হয় : প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন : বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতকরণে ভোটকেন্দ্রসমূহে অনলাইন সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের বিকল্প নেই। প্রায় ৪৩ হাজার ভোটকেন্দ্রে অনলাইনভিত্তিক সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনে আনুমানিক ২০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে, যা স্বচ্ছ নির্বাচন নিশ্চিতের জন্য অত্যন্ত যৌক্তিক। সময়ের স্বল্পতা বিবেচনায় কোনো একটা একক প্রতিষ্ঠানকে সিসিটিভি স্থাপনের দায়িত্ব না দিয়েও নির্বাচন অগ্রাধিকার বিবেচনায় ডিপিএম (সরাসরি ক্রয়) পদ্ধতিতে ক্রয় বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের উপ-বরাদ্দ প্রদান করে এই কেনাকাটা দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব। সরকারের অধিকাংশ প্রকল্প যেখানে হাজার কোটি টাকার সেখানে দুইশত কোটি টাকার ব্যয়কে অতিরিক্ত আখ্যা দেওয়া মোটেও যুক্তিযুক্ত নয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বডি ওর্ন ক্যামেরা সংযোজন : প্রতিটি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কমপক্ষে দুইজন সদস্যের শরীরে বডি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এর মাধ্যমে দায়িত্বপ্রাপ্তদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে তত্ত্বাবধান, আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের লটারির মাধ্যমে বদলি/পদায়ন : ডিসি, এসপি, ইউএনও, ওসি ও নির্বাচন কর্মকর্তাদের লটারির মাধ্যমে বদলি করে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে এবং নির্বাচন শেষে ১৫ দিনের মধ্যে পুনরায় বদলি করতে হবে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান : নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর সমন্বয়ে অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে। এই অভিযান ভোট গ্রহণের আগ পর্যন্ত জারি রাখা আবশ্যক, যেন কোনো দল বা গোষ্ঠী নির্বাচনি পরিবেশকে বিঘ্ন ঘটানো বা ভোট কেন্দ্র দখলের মতো অপকর্ম করার সুযোগ বা সাহস না পায়। নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের প্রতি বিশেষ আহ্বান : নির্বাচন পরিচালনায় নিয়োজিত সরকারি কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ সততা, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
