সামাজিক ঐক্য ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় আহ্ছানউল্লার সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ববাদের দর্শন চর্চা প্রয়োজন

প্রকাশ : ৩০ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

সামাজিক ঐক্য ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংস্কারক হযরত খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর সার্বজনীন ভ্রাতৃত্ববাদের দর্শন চর্চা প্রয়োজন। গতকাল শনিবার বিকালে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের প্রধান কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের ভাবনার ওপর আন্তর্জাতিক ‘গ্লোবাল ফ্র্যাটারনিটি’ শীর্ষক সেমিনারে একথা বলেন বক্তারা।

ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের সভাপতি প্রফেসর ড. গোলাম রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রাইম ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী দীন মোহাম্মদ খসরু। তিনি বলেন, খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা (রহ.)-এর জীবন ও দর্শনের সঙ্গে, যার উত্তরাধিকারকে কেন্দ্র করেই আজকের এই সেমিনার। তার লেখনী, শিক্ষাদান এবং মানবিক কর্মকাণ্ড মানুষকে ঘৃণা পরিহার করতে, বৈষম্য প্রত্যাখ্যান করতে এবং সীমানা-অতিক্রমী এক মানবিক পরিচয় গড়ে তুলতে অনুপ্রাণিত করেছে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন ডাম ক্লাব২৫-এর উপদেষ্টা ড. কাজী এহসানুর রহমান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের ভিজিটিং রিসার্চ ফেলো খন্দকার সাখাওয়াত আলী, পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ লিভিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের রিসার্চ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড এনগেজমেন্টের পরিচালক ড. নূর উল জামান রফিক এবং জাতিসংঘ অ্যাসোসিয়েশন ফিজির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আকমল আলী। সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আহ্ছানউল্লা সেন্টার ফর ইউনিভার্সাল হিউম্যানিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল মাসুদ। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন রাখি গাঙ্গুলী।

এসময় বক্তারা বলেন- খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.) বিশ্বাস করতেন- অন্যকে সেবা করার যে আনন্দ, তা নিজের সেবা গ্রহণের আনন্দের চেয়ে অনেক বেশি। এ ধারণা সুফিবাদের গভীরে প্রতিষ্ঠিত এবং কোরআনের করুণাভিত্তিক শিক্ষার সঙ্গেও সামঞ্জস্যপূর্ণ। তার আজীবন মানবকল্যাণে নিবেদন, একতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা এবং ভালোবাসা, পবিত্রতা ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ার কার্যক্রমে আমরা এ দর্শনের জীবন্ত প্রতিফলন দেখি।

এছাড়াও মানবতাবাদী পেশাজীবী, সমাজকর্মী, সামাজিক চিন্তাবিদ ও উন্নয়ন কর্মীরা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অনলাইনের মাধ্যমে সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীদের সুবিধার্থে সেমিনারের ভাষা ইংরেজি নির্ধারণ করা হয়। এছাড়াও সেমিনারে ওপেন উন্মুক্ত আলোচনা, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণকারীদের বিশেষ মতামত শোনার সুযোগ ছিল। খানবাহাদুর আহ্ছানউল্লা (র.)-এর বিশ্ব ভ্রাতৃত্বের ভাবনার ওপর ও মানবিক মূল্যবোধ ও সুফিবাদের দর্শনের আলোকে আয়োজিত এই সেমিনার বিশেষভাবে আলোকপাত করা হয়। একজন নিবেদিত সুফি হিসেবে তার ‘গ্লোবাল ফ্র্যাটারনিটি’ বিষয়ক দিকনির্দেশনার আলোকে ১৯৩৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় আহ্ছানিয়া মিশন। সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়ন চেতনার ভিত্তি স্থাপন করাই ছিল আহ্ছানিয়া মিশনের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়াও সেমিনারে সর্বজনীন শান্তি ও সৌহার্দ্যের দৃষ্টিকোণ থেকে বৈশ্বিক ভ্রাতৃত্বের মূল ধারণা তুলে ধরা হয়। সূত্র : সংবাদ বিজ্ঞপ্তি