ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চবির পৌষ পার্বণ উৎসবে সাম্প্রদায়িক বন্ধনের ছবি

চবির পৌষ পার্বণ উৎসবে সাম্প্রদায়িক বন্ধনের ছবি

কেউ সেজেছেন মৌলভী, কেউ পুরোহিত, কেউবা খ্রিষ্টান পাদ্রী, কেউ বৌদ্ধ ভিক্ষু। হাতে হাত ধরে হেঁটে যাচ্ছেন সবাই। চিরায়ত গ্রাম বাংলার সাম্প্রদায়িক মেলবন্ধনের এ ছবি ফুটে উঠেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত পৌষ পার্বণে। ‘সেই কুয়াশায় পাই যদি হঠাৎ তোমারে’ জীবনানন্দ দাশের এই লাইনকে প্রতিপাদ্য ধরে সাজানো হয় চবির পৌষ পার্বণের অনুষ্ঠানমালা। বিভাগ প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসবের।

গত বুধবার বেলা ১২টায় পৌষ পার্বণ উপলক্ষ্যে বের করা হয় বর্ণাঢ্য র?্যালি। সবুজাভ পাঞ্জাবি ও শাড়ি পরে বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা র?্যালিতে অংশগ্রহণ করেন। র?্যালিটিতে দেশী ঢংয়ে সাজেন অনেক শিক্ষার্থী। বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলার জন্য কেউ সাজেন বর-কনে, কেউ জেলে, নাপিত, কৃষক। কেউবা গ্রাম্য মাস্তান, বাউল, ভিক্ষুক ও পালকি বহনকারী বেহারা। ঢোল-বাদ্যে উৎসবমুখরভাবে র?্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ প্রদক্ষিণ করে।

র?্যালি শেষে বাংলা চত্বরে আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব। হরেক স্বাদের পিঠার বাহার নিয়ে স্টলে স্টলে পরিবেশন করা হয় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পিঠা। স্টলে সাজানো পিঠাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলÑ ক্ষির পাটিসাপটা, ছাঁচ পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পুরি, নারিকেল পাকন, মিষ্টির মাখন, জামাই পিঠা, মুখ রঙিন, দুধচিতই, মাংসের ঝাল পিঠা, আফলাতুল, চিকেন রোল, ঝিনুক, পাটিসাপটা, খেজুর পিঠা, তেলের পিঠা, ভাপা পিঠা, ডিবি পিঠা, ডিম পিঠা, ভাজা পুলি, তালের বড়া, পাকন পিঠা, চিকেন পুলি, গোলাপ পিঠাসহ নানান স্বাদের বাহারি পিঠা। বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠে পিঠা উৎসব।

বাংলা বিভাগের সভাপতি ড. শফিউল আযম (ডালিম) পৌষ পার্বণ ও পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকরাও। বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মাখন চন্দ্র রায় বলেন, ‘বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটিতে চিরায়ত বাংলার অসাম্প্রদায়িক চিত্রটি উপস্থাপিত হতে দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি। গ্রাম বাংলার খেলাধুলা, বিভিন্ন পারবন, জীবনাচার সবসময়ই এই অসাম্প্রদায়িক রূপটিকেই ধারণ করে। লোকক্রীড়া, লোকজ উৎসব প্রভৃতি সাংস্কৃতিক চর্চার মধ্য দিয়ে যথার্থ প্রগতিশীল সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে বলে আমার বিশ্বাস।

বেলা ৩টায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে দেশীয় গানে নৃত্য, লোকজ গান, নাটিকা, আবৃত্তি, পুঁথি পাঠ করা হয় অনুষ্ঠানে। পৌষের পড়ন্ত বিকালে গানের দল সরলার সংগীত পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত