প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৮ জুন, ২০২২
চাঁদ-সূর্য আল্লাহতায়ালার আশ্চর্য সৃষ্টি। তিনি পৃথিবীকে চাঁদ ও সূর্যের আলো দিয়ে মানুষের বসবাস উপযোগী করেছেন। সূর্যের আলো ছাড়া পুরো পৃথিবী অন্ধকারে থাকত। রাতে দিয়েছেন চাঁদের আলো। কিন্তু তা সূর্যের আলোর মতো নয়। সূর্যের আলোর তেজস্বতা ও প্রখরতা চাঁদের আলোতে নেই। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনের অসংখ্য জায়গায় চাঁদ-সূর্যের বর্ণনা দিয়েছেন। এক জায়গায় এসেছে, ‘আল্লাহ ওই সত্তা, যিনি সূর্যকে দীপ্তিমান এবং চাঁদকে আলোকময় বানিয়েছেন এবং তার জন্য মঞ্জিলগুলো নির্ধারিত করেছেন, যাতে তোমরা বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব জানতে পারো। আল্লাহ এসব বস্তু অযথা সৃষ্টি করেননি, তিনি এই প্রমাণগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেছেন ওইসব লোকের জন্য যারা জ্ঞানবান।’ (সুরা ইউনুস : ৫)।
চাঁদ-সূর্য সবকিছুই আল্লাহ নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নির্দিষ্ট নিয়মে এগুলোকে পরিচালনা করেন। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহই ঊর্ধ্বদেশে আকাশমণ্ডলী স্থাপন করেছেন স্তম্ভ ব্যতীত, তোমরা এটা দেখছ। অতঃপর তিনি আরশে সমাসীন হলেন এবং সূর্য ও চাঁদকে নিয়মাধীন করলেন; প্রত্যেকে নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত আবর্তন করে। তিনি সব বিষয় নিয়ন্ত্রণ করেন এবং নিদর্শনগুলো বিশদভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তোমরা তোমাদের রবের সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে নিশ্চিত বিশ্বাস করতে পারো।’ (সুরা রাদ : ২)। আরও বলেন, ‘তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন সূর্য ও চাঁদকে, যারা অবিরাম একই নিয়মের অনুবর্তী এবং তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন রাত ও দিনকে।’ (সুরা ইব্রাহিম : ৩৩)।
আল্লাহতায়ালার নির্দেশে চাঁদ-সূর্য তাদের নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করে। একটি অন্যটিকে অতিক্রম করে যায় না এবং আল্লাহ পর্যায়ক্রমে দিন-রাতের আগমন ঘটান। সুরা ইয়াসিনে আল্লাহতায়ালা এ সম্পর্কে বলেন, ‘সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে। এটা পরাক্রমশালী, সর্বজ্ঞের নিয়ন্ত্রণ এবং চন্দ্রের জন্য আমি নির্দিষ্ট করেছি বিভিন্ন মনজিল, অবশেষে ওটা শুষ্ক বক্র পুরোনো খেজুর শাখার আকার ধারণ করে। সূর্যের পক্ষে সম্ভব নয় চাঁদের নাগাল পাওয়া এরং রাতের পক্ষে সম্ভব নয় দিনকে অতিক্রম করা এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কক্ষপথে সাঁতার কাটে।’ (সুরা ইয়াসিন : ৩৮-৪০)।
সূর্যের আলো ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই পৃথিবীতে দিন শুরু হয়। আবার সূর্য অস্ত যাওয়ার সময় হতে অন্ধকার হয়ে রাত নেমে আসে। নামাজের সময় নির্ধারণেও সূর্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সূর্য হেলে পড়ার পর থেকে রাতের ঘন অন্ধকার পর্যন্ত সালাত কায়েম করবে এবং কায়েম করবে ফজরের কোরআন পাঠও। কারণ ভোরের কোরআন পাঠ সাক্ষীস্বরূপ।’ (সুরা ইসরা : ৭৮)। আল্লাহতায়ালা রাসুল (সা.)-কে সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পরে অর্থাৎ সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর প্রশংসা করার জন্য বলেছেন। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা যা বলে সে বিষয়ে তুমি ধৈর্য ধারণ করো এবং সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং সূর্যাস্তের পূর্বে তোমার রবের সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো এবং রাতে পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করো, আর দিনের প্রান্তগুলোতে যাতে তুমি সন্তুষ্ট হতে পারো।’ (সুরা ত্বহা : ১৩০)। চাঁদ-সূর্য আল্লাহতায়ালার সৃষ্টির অন্যতম সৃষ্টি-নিদর্শন। এসব দেখে মানুষ অজান্তেই বলে ওঠে- সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি কত সুন্দর!