মাঝেমধ্যে প্রকৃতি বিরূপ রূপ ধারণ করে; রূঢ় ও রুষ্ট হয়, যাকে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে থাকি। অন্যভাবে বলতে গেলে, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রায় প্রাকৃতিক পরিবেশে যখন ব্যতিক্রম লক্ষ্য করি এবং তা আমাদের জীবন ও জীবিকার জন্য ক্ষতিকর মনে করি, তখন তাকে আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলি। যেমন ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, ভারি বর্ষণ, বন্যা, খরা, দাবানল, শৈত্যপ্রবাহ, দুর্ভিক্ষ, মহামারি, ভূমিকম্প, সুনামি প্রভৃতি। এই দুর্যোগ আমাদের হাতে অর্জিত বলে কোরআনে বর্ণিত। এরশাদ হয়েছে- ‘স্থলে ও জলে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়েছে মানুষের কৃতকর্মের দরুন, যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের কিছু কৃতকর্মের (পরিণাম) আস্বাদন করান। যাতে তারা ফিরে আসে। (সুরা রুম : ৪১)। অন্য আয়াতে বর্ণিত- ‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদণ্ডআপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কৃত কর্মেরই ফল এবং তোমাদের অনেক অপরাধ তো তিনি ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা আশ্-শুরা : ৩০)।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বিপর্যয়ের প্রধানতম কারণ হলো, আমরা যখন নিজেরাই প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করি, প্রকৃতির স্বাভাবিক চলন প্রক্রিয়ায় কৃত্রিম বাধার সৃষ্টি করি, তখন প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়। প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট দুই ধরনের হতে পারে-
এক : প্রাকৃতিক পরিবেশ তথা গাছপালা, পাহাড়-পর্বত, নদীনালা, খালবিল ইত্যাদির প্রত্যক্ষ ক্ষতি সাধন এবং পানি দূষণ, বায়ু দূষণ ও শব্দ দূষণের মাধ্যমে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করা।
দুই : নৈতিক পদস্খলন তথা জেনা, ব্যভিচার, অশ্লীলতাণ্ডবেহায়াপনা, সুদণ্ডঘুষ, দুর্নীতি, কালোবাজারি, অন্যায়-অত্যাচার সর্বোপরি আল্লাহর নির্ধারিত সীমা লঙ্ঘন ও আল্লাহ এবং রাসুলের নাফরমানি যখন কোনো ভূখণ্ডে চরম আকার ধারণ করে, তখন আল্লাহপাক আসমানি আজাব-গজব নাজিল করেন, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে দেখা দেয়।
পবিত্র কোরআনে কারিমে এ ধরনের বিভিন্ন দুর্যোগ সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে। যেমন হজরত নুহ (আ.)-এর সময়ের মহাপ্লাবন, সাবা জাতির প্রতি বন্যা, হজরত লুত (আ.)-এর সময়ের ভূমি ওলটপালট করে দেওয়ার বর্ণনা। সালেহ (আ.) এর সময়ে বিকট শব্দ ধ্বনি, আদ জাতির প্রতি ধুলোঝড়, কখনও রক্তবৃষ্টি, কখনও ব্যাঙের উপদ্রব, কখনও ঝাঁকে ঝাঁকে পতঙ্গ প্রেরণ, কখনও পাপিষ্ঠদের বানরে পরিণতকরণ, কখনও সমুদ্রে নিমজ্জিতকরণ। বস্তুত, আল্লাহতায়ালা বিভিন্ন সময়ে দুর্যোগ দিয়ে আল্লাহর অবাধ্যদের শাস্তি দেন, একইসঙ্গে মানুষকে সতর্ক করেন, হেদায়াতের পথে আসার আহ্বান জানান। মানুষ যেন আল্লাহকে ভুলে না যায় এ কথা মনে করিয়ে দেন।
বস্তুত দুনিয়ার এমন সব দুর্যোগ আমাদের মনে করিয়ে দেয়, আমাদের কোনো শক্তি ও ক্ষমতা নেই। অপার ক্ষমতার মালিক একমাত্র আল্লাহ, তিনিই আমাদের একমাত্র আশ্রয়। তাই শুধু দুর্যোগকালীন সময়ে নয়, সর্বদা তার আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে, সর্ব প্রকারের সাহায্য চাইতে হবে তারই কাছে। তার দেওয়া আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হবে। ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচারণকে ভয় করতে হবে।
দুর্যোগ শুধু পাপের কারণেই হয় এমনটি নয়; বরং কখনও কখনও এটা মানুষের জন্য একটি পরীক্ষাও বটে। মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহতায়ালা কিছু কিছু বিপদণ্ডআপদ বা বালা-মুসিবত, দুর্যোগ দিয়ে মানুষকে সতর্ক করেন। কোরআনুল কারিমে এরশাদ হচ্ছে, ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদণ্ডমুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত।’ (সুরা বাকারা : ১৫৫-১৫৭)।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছাড়াও দুর্যোগ হয়। সেগুলো হয় সরাসরি মনুষ্যসৃষ্ট বা মানুষের কর্মকাণ্ডের ফলে। যেমন দুর্বল ইমারত ধ্বসে যাওয়া, শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ড, গার্মেন্ট ভবন কিংবা বিভিন্ন কলকারখানায় আগুন লেগে যাওয়া, এগুলো একান্তই আমাদের অসতর্কতা, অবহেলা ও কৃতকর্মের ফল।
দুর্যোগের সময় করণীয়
ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা দেওয়া : বিভিন্ন সময় দুর্যোগ আসবে এটা আমাদের মেনে নিতে হবে। কারণ, পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই তা চলে আসছে। তাই বলে হতাশ হয়ে বসে থাকলে চলবে না। দুর্যোগের সময় মনে সাহস রাখতে হবে। সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে আক্রান্তদের জন্য। কারও বিপদে তার পাশে দাঁড়ানো ঈমানের দাবি। মোমিনের গুণ-বৈশিষ্ট্য বর্ণনায় মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা আল্লাহর প্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দরিদ্র, এতিম ও বন্দিদের খাদ্য দান করে।’ (সুরা দাহর : ৮)। অন্য আয়াতে এরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা পৃথিবীবাসীর প্রতি তেমনি অনুগ্রহ কর যেমনি আল্লাহ তোমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন।’ (সুরা কাসাস : ৭৭)।
মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে মুসলমান অপর কোনো মুসলমানকে বস্ত্রহীন অবস্থায় বস্ত্র দান করবে, আল্লাহ তাকে জান্নাতে সবুজ বর্ণের পোশাক পরাবেন, খাদ্য দান করলে তাকে জান্নাতের ফল খাওয়াবেন, পানি পান করালে জান্নাতের শরবত পান করাবেন।’ (আবু দাউদ : ১৭৫২)। রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তার প্রতি দয়া করেন, যে তার বান্দাদের প্রতি দয়া করে।’ (বোখারি : ১৭৩২, তিরমিজি : ২৮৩৫)।
মহানবী (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় অপরের একটি প্রয়োজন মিটিয়ে দেবে, পরকালে আল্লাহ তার ১০০ প্রয়োজন পূরণ করে দেবেন এবং বান্দার দুঃখণ্ডদুর্দশায় কেউ সহযোগিতার হাত বাড়ালে আল্লাহ তার প্রতি করুণার দৃষ্টি দেন।’ (মুসলিম : ২৫৬৬)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা বান্দার সাহায্যে ততক্ষণ থাকেন, যতক্ষণ সে অপর ভাইয়ের সাহায্যে থাকে।’ (মুসলিম : ২৩১৪, ২১৪৮)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, ‘তোমরা ক্ষুধার্তকে খাদ্য দাও, অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজখবর নাও, বস্ত্রহীন লোকদের বস্ত্র দাও এবং বন্দিকে মুক্ত করে দাও।’ (বোখারি : ২৪১৭)।
ক্ষমা প্রার্থনা করা ও ধৈর্য ধারণ করা : প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু সুন্নত আমল করার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার সুযোগ রয়েছে। হাদিস শরিফে আছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়োবাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা, তাঁর কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। এ ক্ষেত্রে রাসুলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ‘দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তাঁর কাছে তওবা করো।’ (বোখারি ২/৩০; মুসলিম ২/৬২৮)।
মহান আল্লাহর জিকিরের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নামাজ পড়া, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত বা দোয়া-দরুদ পাঠ করা। দুর্যোগের সময় জিকিরের আরও উপায় হতে পারে ইস্তিগফার, তসবি পাঠ ইত্যাদি। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, প্রচণ্ড ঝোড়োহাওয়া বইলে রাসুলুল্লাহ (সা.) মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ : ৬৯৬)।
সাহাবিদের জীবনে আমরা দেখি, বিপদে-মুসিবতে তারা নামাজে দাঁড়াতেন ও ধৈর্য ধারণ করতেন। (মিশকাতুল মাসাবিহ : ৫৩৪৫)। ঝড়-তুফানের প্রাদুর্ভাব ঘটলে তাকবির (আল্লাহু আকবার-আল্লাহ মহান) বলা ও আজান দেওয়া সুন্নত। (তবে এই আজানে ‘হাইয়া আলাছ ছলাহ’ ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ বাক্যদ্বয় বলার প্রয়োজন নেই।
আমল পরিশুদ্ধ করা ও দান-সদকা করা : মহান আল্লাহতায়ালা মানুষকে আশরাফুল মখলুকাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি অযথা কাউকে শাস্তি দিতে চান না। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণ হলো আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টি। আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচার জন্য আমল পরিশুদ্ধ করতে হবে। যে আমলে আল্লাহ খুশি হন, সে আমল বেশি বেশি করতে হবে। নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত, দান-সদকা ইত্যাদি ভালো কাজ করতে হবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, ‘সদকা আল্লাহর অসন্তুষ্টিকে নিভিয়ে দেয় এবং অপমৃত্যু রোধ করে।’ (তিরমিজি শরিফ : ৬০০)।
দুর্যোগের সময় পালনীয় মাসনুন দোয়া
ঘূর্ণিঝড়ে পড়ার দোয়া : বান্দার জন্য বাতাস মহান আল্লাহতায়ালার অনেক বড় নেয়ামত। কারণ মানুষ বাতাস ছাড়া বাঁচতে পারে না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা বাতাসকে গালি দিও না। তবে যদি তোমরা একে তোমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেখতে পাও, তবে এ দোয়া পড়বে- আল্লাহুম্মা ইন্না নাসআলুকা মিন খাইরি হাজিহির রিহি, ওয়া খাইরি মা ফি-হা, ওয়া খাইরি মা উমিরাত বিহি, ওয়া নাউজুবিকা মিন শাররি হাজিহির রিহি, ওয়া শাররি মা ফি-হা ওয়া শাররি মা উমিরাত বিহি।’ (তিরমিজি, মিশকাত)।
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমরা তোমার কাছে এ বাতাসের ভালো দিক, এতে যে কল্যাণ রয়েছে তা এবং যে উদ্দেশ্যে তা নির্দেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে তার উত্তম দিকটি প্রার্থনা করছি। এবং তোমার কাছে এর খারাপ দিক থেকে, এতে যে অকল্যাণ রয়েছে তা থেকে এবং এটা যে উদ্দেশ্যে আদেশপ্রাপ্ত হয়ে এসেছে, তার মন্দ দিক থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
মেঘের গর্জনে পড়ার দোয়া : প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহ করুণ এক রূপ হলো বজ্রপাত, যা মহান রাব্বুল আলামিনের শক্তিমত্তা ও ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মজিদে রয়েছে, ‘তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে। তিনি বজ্রপাত করেন, অতঃপর যাকে ইচ্ছা, তাকে তা দ্বারা আঘাত করেন; তথাপি তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিত-া করে, অথচ তিনি মহাশক্তিশালী।’ (সুরা রাআদ : ১৩)। হজরত আব্দুল্লাহ ইবন যুবাইর (রা.) যখন মেঘের গর্জন শুনতেন তখন কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং পবিত্র কোরআন মাজিদের এই আয়াত তেলাওয়াত করতেন- ‘সুবহানাল্লাজি ইউসাব্বিহুর রাদদু বিহামদিহি ওয়াল মালাইকাতু মিন খিফাতিহি।’ (মুয়াত্তা)। অর্থ : ‘পাক-পবিত্র সেই মহান সত্তা- তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে।’
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) মেঘের গর্জন শুনলে বা বিদ্যুতের চমক দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই এই দোয়া করতেন- ‘আল্লাহুম্মা লা তাক্বতুলনা বিগজাবিকা, ওয়া লা-তুলহিকনা বিআ’জাবিকা, ওয়া আ’ফিনা ক্ববলা জালিকা।’ (তিরমিজি)। অর্থ : ‘হে আমাদের প্রভু! তোমার ক্রোধের বশবর্তী হয়ে আমাদের মেরে ফেলো না, আর তোমার আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করো না; বরং এর আগেই আমাদের ক্ষমা ও নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে নিও।’
ঝড়-তুফানে পড়ার দোয়া
ঝড়-তুফান এলে পড়তে হয় : ‘আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়ালা আলাইনা।’ (বোখারি)। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের থেকে ফিরিয়ে নাও, আমাদের ওপর দিও না।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আস্আলুকা খায়রাহা ওয়া খায়রা মা ফিহা-ওয়া খায়রা মা উরসিলাতবিহি; ওয়া আউযুবিকা মিন শাররিহা ওয়া শাররি মা ফিহা ওয়া শাররি মা উরসিলাতবিহি’। অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এর মঙ্গল, এর মধ্যকার মঙ্গল ও যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার মঙ্গল প্রার্থনা করছি এবং আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি এর অমঙ্গল থেকে, এর মধ্যকার অমঙ্গল থেকে এবং যা নিয়ে তা প্রেরিত হয়েছে, তার অমঙ্গল থেকে।’
ভূমিকম্পসহ যাবতীয় দুর্যোগ থেকে বাঁচার দোয়া
ভূমিকম্পসহ অন্যান্য দুর্যোগ থেকে বাঁচার জন্য পড়তে হয়, ‘লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাবিল্লাহ।’ (বোখারি ও মুসলিম)। তাছাড়া ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনজ জ্বালিমিন’ (সুরা আম্বিয়া : ৮৭) বেশি বেশি পড়তে বলা হয়েছে।
বিপদাপদ থেকে আত্মরক্ষায় প্রতিদিনের দোয়া
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেহ সকাল এবং সন্ধ্যায় নিম্নোক্ত দোয়াটি পড়বে; তাকে কোনো বিপদাপদ, বালা-মুসিবত স্পর্শ করবে না-
‘বিসমিল্লাহিল লাজি লা ইয়াদুররু মাআস মিহি শাইয়ুন ফিল আরদি ওয়ালা ফিস সামিই ওয়াহুয়া সামিয়ুল আলিম।’ (তিরমিজি, ইবনু মাজাহ, মিশকাত)।
এসব বিপদকালীন সময়ে বিশ্বনবী (সা.) বেশি বেশি তওবা ও ইস্তেগফার করতেন এবং অন্যদেরও তা পড়তে নির্দেশ দিতেন। সুতরাং মুসলিম উম্মাহর উচিত ঘূর্ণিঝড়, প্রবল ঝড়োবাতাস, বন্যা, খরা ইত্যাদি প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরনের দুর্যোগে উপরোক্ত দোয়াগুলোর মাধ্যমে মহান রাব্বুল আলামিন আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় লাভে রোনাজারি করা। আল্লাহপাক আমাদেরকে যথাযথ আমল করার তৌফিক দিন এবং সব ধরনের দুর্যোগ-বিপর্যয় থেকে হেফাজত করুন। আমিন।