ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দুর্নীতির কারণে উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত

দুর্নীতির কারণে উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত

বাংলাদেশে দুর্নীতি একটি অপ্রিয় চরম সত্যে রূপান্তরিত হয়েছে, যা সমাজ থেকে সহজে নির্মূল করা সম্ভব নয়। দুর্নীতির কারণে সমাজের প্রশাসনিক এবং সরকারিগোষ্ঠী লাভবান হলেও ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের উদ্যোক্তারা বর্তমানে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। নতুন ব্যবসা শুরু থেকে পরবর্তীতে ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ঘুষ দেয়া একটি স্বাভাবিক প্রথায় পরিণত হয়েছে। গতকাল শনিবার সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) আয়োজিত এক আঞ্চলিক আলোচনা সভায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পখাতের উদ্যোক্তারা এসব কথা বলেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে উদ্যোক্তাদের প্রতিনিয়ত সম্মুখীন হওয়া দুর্নীতির অভিজ্ঞতা এবং এই দুর্নীতি প্রতিরোধে একটি সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম তৈরির প্রয়োজন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল প্রাইভেট এন্টারপ্রাইজের (সিআইপিই) সহায়তায় এ আলোচনা ঢাকার সিরডাপে অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় অংশগ্রহণকারী উদ্যোক্তা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতের প্রতিনিধিরা তাদের ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে সম্মুখীন হওয়া দুর্নীতির নানা অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন। সকল উদ্যোক্তাই উল্লেখ করেন, ট্রেড লাইসেন্স তৈরি, প্রতি বছর লাইসেন্স নবায়নকরণ, নিবন্ধন প্রক্রিয়া, ভ্যাট প্রদান প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের দুর্নীতির আশ্রয় নিতে বাধ্য হতে হয় এবং প্রতিটি দপ্তরে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়। দুর্নীতির কারণে অনেক সময় বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরাও এ দেশে বিনিয়োগ করতে অনীহা প্রকাশ করেন বলে মতামত প্রকাশ করেছেন উদ্যোক্তারা। আলোচনায় উপস্থিত একজন ব্যবসায়ী দুর্নীতিকে ব্যাখ্যা করার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি এবং আমলাতন্ত্রের জটিলতার কথা উল্লেখ করেছেন। এছাড়া, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের ঋণসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোও নানাভাবে হয়রানির শিকার করে বলে উল্লেখ করেন। একজন নারী উদ্যোক্তা বলেন, নারী হিসেবে তাদের অতিরিক্ত হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়। এ কারণে বর্তমানে নতুন নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এর অন্যতম কারণ হলো এক্ষেত্রে তাদের ট্রেড লাইসেন্সের দরকার হয় না বা কোনো প্রকার দুর্নীতির শিকার হতে হয় না। করোনা মহামারি সংকট নিরসনে সরকার প্রদত্ত প্রণোদনা প্যাকেজের বণ্টন প্রক্রিয়াতেও দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কথা উল্লেখ করেছেন বক্তারা। অনেক সময় সরকারি নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা এবং সরকারি কর্মকর্তারা অতিরিক্ত অর্থ জরিমানা করেন এবং ব্যবসায়ীদের এজন্য সমঝোতার আশ্রয় নিতে হয়, যা আসলে দুর্নীতিরই নামান্তর। পাশাপাশি তারা বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে দুর্নীতির জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি কর্মকর্তারা অনেকাংশে দায়ী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত