মুরগি আর ডিমের সিন্ডিকেট ভাঙতে পোলট্রি বোর্ড গঠনসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছেন প্রান্তিক খামারিরা। গতকাল বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়। অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, করপোরেট কিছু প্রতিষ্ঠান ও সিন্ডিকেটের লোকজনের কারণে ডিম ও মুরগির দাম বাড়ছে। অন্যদিকে মুরগির খাবারসহ অন্যান্য জিনিসের দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রান্তিক খামারিরা ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়ছেন। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। পোলট্রি ব্যবসায়ীদের ব্যাংক থেকে ঋণ পেতে সমস্যা হয় বলেও অভিযোগ করেন খামারিরা। এ সময় ডিম ও মুরগির বাজারের সিন্ডিকেট ভাঙতে পোলট্রি বোর্ড গঠনসহ এক গুচ্ছ পরামর্শ দেন। পরামর্শগুলো হলো-
পোলট্রি বোর্ড গঠন। এই বোর্ড গঠিত হবে সরকার ও সব উদ্যোক্তাদের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে, যারা ডিম, মাংস, পোলট্রি খাদ্য, বাচ্চা, ওষুধ, ভ্যাকসিন ইত্যাদির ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করে দেবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের প্রণোদনা প্রদান। সহজ শর্তে খামারিদের মধ্যে ঋণ প্রদান। সরকারিভাবে সব প্রকার ভ্যাকসিনের সরবরাহ নিশ্চিত করা।
প্রান্তিক খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও সহজ শর্তে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে নিবন্ধনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
পোলট্রি জোন নামে খ্যাত এলাকায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে পোলট্রি বিষয়ে অভিজ্ঞ কনসাল্টেন্ট নিয়োগ প্রদান।
এ সময় বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে সুমন হাওলাদারকে সভাপতি ও ইলিয়াস খন্দকারকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
সংগঠনের নেতারা বলেন, বর্তমানে পোলট্রি সেক্টরে অসাধু সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠিত। যারা পোলট্রি সেক্টর ধ্বংসের জন্য দায়ী।
পোলট্রিতে অসাধু সিন্ডিকেট নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে তারা বলেন, এই খাতের সিন্ডিকেটের মধ্যে ডিম ও মাংস আড়তদার ব্যবসায়ী, বাচ্চা উৎপাদনকারী লোকজন আছে। যারা বাচ্চার সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা হাতিয়ে নেয়। খাদ্য উৎপাদনকারী সিন্ডিকেট খাদ্য তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে খাদ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়িয়ে দেয়।
তারা গণমাধ্যমকেও দোষারোপ করেন। এটাকে তারা মিডিয়া সিন্ডিকেট আখ্যা দিয়ে বলেন, অনেক সময় তারা মিডিয়াকেও ব্যবহার করে থাকেন। যদিও এখানে মিডিয়ার সরাসরি দায় নেই। এছাড়া অর্থায়নকারী সিন্ডিকেটও রয়েছে এই খাতে অস্থিরতা তৈরির জন্য। সংগঠনের নেতারা বলেন, এসব অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান শুধু বড় বড় করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ সুবিধা দিয়ে থাকে। অথচ প্রান্তিক খামারিরা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত উল্লিখিত অসাধু সিন্ডিকেট বাজার মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। অনুষ্ঠানে ডিম, মুরগিসহ নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য একটা গোষ্ঠীকে দায়ী করেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান।