সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় বিএটি বাংলাদেশের গ্রিন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্টের সাবেক মৌসুমি শ্রমিকদের একটি দল বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেছেন। শ্রমিক আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে অধিকাংশ দাবি পূরণের জন্য এরইমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে বিএটি বাংলাদেশ। তবে শ্রমিকদের কিছু দাবি আইনি ব্যাখ্যার ভিত্তিতে বাংলাদেশের শ্রম আইনের বাইরে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে ব্যবসা পরিচালনা ও গঠনমূলক সংলাপের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে বিএটি বাংলাদেশ। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানিয়েছে বিএটি বাংলাদেশ। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গঠনমূলক ও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়েছে বিএটি বাংলাদেশ। সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় একাধিকবার বৈঠকে বসে আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে উন্নত সুবিধাও প্রস্তাব করা হয়েছে। বেসরকারি খাতে দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বিএটি বাংলাদেশ প্রযোজ্য সব আইন ও নীতিমালা মেনে ১১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে সততা, স্বচ্ছতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে বাংলাদেশে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সিগারেট শিল্পে একমাত্র তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ও শেয়ারবাজারে অন্যতম বৃহৎ মূলধনের কোম্পানি হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ করদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ শুধুমাত্র ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরেই ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক, কর্পোরেট কর ও স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জসহ প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা সরকারকে রাজস্ব হিসেবে প্রদান করেছে। কর্মী, কৃষক, পরিবেশক, সরবরাহকারী ও খুচরা বিক্রেতাসহ প্রতিষ্ঠানটির ভ্যালু চেইনের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১৫ লাখেরও বেশি মানুষ সম্পৃক্ত। দেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছয়বার বৈশ্বিকভাবে স্বীকৃত ‘টপ এমপ্লয়ার্স ইনস্টিটিউট’ কর্তৃক শীর্ষ নিয়োগদাতার স্বীকৃতি অর্জন করেছে বিএটি বাংলাদেশ। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় বিএটি বাংলাদেশের গ্রিন লিফ থ্রেশিং প্ল্যান্টের সাবেক মৌসুমি শ্রমিকদের একটি দল তাদের কিছু দাবি উত্থাপন করেছেন। পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে অধিকাংশ দাবি পূরণের জন্য এরইমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। তবে আইনি ব্যাখ্যার ভিত্তিতে কিছু দাবি বাংলাদেশের শ্রম আইনের বিধানের বাইরে। শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে আন্দোলনরত কর্মীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে গঠনমূলক ও উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় একাধিকবার বৈঠকে বসে আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে উন্নত সুবিধাও প্রস্তাব করা হয়েছে। তামাক পাতা সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের ক্ষেত্রে বর্তমান মৌসুমটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কারখানার মাধ্যমে ৫০ হাজারেরও বেশি কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সঠিক সময়ে প্রক্রিয়াজাত করা হয়। যে কারণে কারখানার কার্যক্রম চলমান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিরাজমান শ্রমিক অসন্তোষের কারণে কুষ্টিয়ার মৌসুমি কারখানার কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। যার ফলে বিএটি বাংলাদেশ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। কারখানার কার্যক্রম বিঘ্নিত হওয়ায় তামাক পাতা রপ্তানি হুমকির মুখে পড়েছে। একইসঙ্গে দেশের বাজারের চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রেও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছে। আরও উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রতিবাদী শ্রমিকরা এখন কাজে ফিরে যেতে ইচ্ছুক অন্যান্য শ্রমিকদের হুমকি দিচ্ছে, যা আন্দোলনটি সব মৌসুমি শ্রমিকের সম্মিলিত চাওয়ার পরিবর্তে কিছু স্বার্থান্বেষী মহলের দ্বারা পরিচালিত বলে ইঙ্গিত দেয়।