চ্যালেঞ্জ নয়, দেশকে নেতৃত্ব দেয়া গর্ব ও আনন্দের বিষয়
নাজমুল হোসেন শান্ত
প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকেই নাজমুল হোসেন শান্তর মাঝে নেতৃত্বগুণ খুঁজে পাওয়া গিয়েছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে সেই সামর্থ্যর প্রমাণ তিনি দিয়েছেন একাধিকবার। এবার তার সামনে সুযোগ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেশকে নেতৃত্ব দেয়ার। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশের অধিনায়ক এই টপ অর্ডার ব্যাটার। সিরিজে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় এমন দায়িত্ব তার কাছে চ্যালেঞ্জের চেয়ে গর্ব ও আনন্দের। কিউইদের বিপক্ষে প্রথম দুই ওয়ানডেতে বিশ্রামে ছিলেন এশিয়া কাপে চোটে পড়া শান্ত। এই সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক সাকিব আল হাসান না খেলায় প্রথম দুই ম্যাচে অধিনায়কত্ব করেন লিটন দাস। শেষ ম্যাচে তিনিও বিশ্রামে থাকায় শান্তকে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয় টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশের ১৬তম ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবে আজ টস করতে নামবেন তিনি। ম্যাচের আগের দিন গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে এসে শান্ত জানালেন এমন দায়িত্বের সামনে রোমাঞ্চে বুঁদ তিনি, ‘আমার মনে হয় যে ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে আমার জন্য অনেক গর্বের ব্যাপার। আমার পরিবারের সদস্যের জন্যও অনেক গর্বের ব্যাপার। কাজেই আলহামদুল্লিলাহ, ক্রিকেট বোর্ড এই সুযোগটা তৈরি করে দিয়েছেন, আমি খুবই রোমাঞ্চিত এবং ইনশাআল্লাহ কালকে উপভোগ করবো।’ শান্তর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারও শুরু হয়েছিল কিছুটা আচমকা। ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ডে সফরে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে ছিলেন। কয়েকজনের চোটে হয়ে যায় টেস্ট অভিষেক। এবার নেতৃত্বের অভিষেকেও মিশে থাকছে এমন পরিস্থিতি। কেবল ঠেকার কাজ নয়, আগামীতে স্থায়ী নেতৃত্ব পাওয়ারও স্বপ্ন দেখেন এই ক্রিকেটার, ‘ভ্রমনের কথা যেটা বলি, শুরু থেকে খুবই ভালো যাচ্ছে। এখনো অনেক দূর যাওয়া বাকি। উপভোগ করেছি। প্রতিটা সময় উপভোগ করেছি। ভালো সময় বলেন বা খারাপ সময় বলেন। প্রতিটি সময় উপভোগ করার চেষ্টা করেছি। এবং ভবিষ্যতে যদি ওই সুযোগ আসে দলের হয়ে, দেশের হয়ে নেতৃত্ব দেয়ার অবশ্যই ওইটা করার চেষ্টা করব। এটা আসলে আমার মনে হয়, প্রতিটি ক্রিকেটারেরই স্বপ্ন যে, দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবে। এটা আমার এখন পর্যন্ত আসছে। ভবিষ্যতে যদি আবার অপরচুনিটি আসে, আবার ভালোভাবে করার চেষ্টা করব।’ শেষ দুই সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। এবার প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচ জয় পায় সফরকারীরা। আজ তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে জিতলেই সিরিজ খোঁয়াবে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে অধিনায়কত্ব করা কতটা চ্যালেঞ্জের। শান্ত অবশ্য ইতিবাচক কথাই বলেন, ‘চ্যালেঞ্জ না, আমার কাছে মনে হয় আনন্দের। খুব ভালো লাগছে এমন সুযোগ পাওয়াটা এবং এমন অবস্থায় আমাদের টিম আছে, সামনে ওয়ার্ল্ড কাপ। এই জায়গায় ব্যক্তিগতভাবে যদি আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পারি, ম্যাচটা আমার ভবিষ্যতের জন্য ভালো হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের টিম একটা ভালো অবস্থায় আছে।’ আফগানিস্তান সিরিজের পর এশিয়া কাপে অভিজ্ঞতা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও এখন পর্যন্ত ভালো ফল করতে পারেনি বাংলাদেশ। এই অবস্থায় মঙ্গলবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটিতে জয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শান্ত বলেছেন, ‘যে কোনও সময় জয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, দেশের হয়ে খেলা অনেক গর্বের। তো দেশের হয়ে যখন আমরা ম্যাচ জিতব, এটা আমার দেশের জন্যই ভালো হবে। তো আমার মনে হয় যে, হ্যাঁ সামনে বিশ্বকাপ আছে। কিন্তু এই ম্যাচটা যদি আমরা জিতি, তাহলে তো টিমের মধ্যে আত্মবিশ্বাস থাকবে। তবে খারাপ ফল হলে, এটা যে খুব বেশি বিশ্বকাপে প্রভাব ফেলবে তা কিন্তু নয়। সুতরাং, প্রত্যেকটা ম্যাচ আমরা জেতার জন্য খেলি এবং খেলব।’ সংবাদ সম্মেলনে শান্তকে প্রশ্ন করা হয়েছিল তার আইডল বা প্রিয় অধিনায়ক কে কাকে তিনি ফলো করেন জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার পছন্দের ক্রিকেটার সবসময় সাকিব ভাই। অধিনায়ক হিসেবে এমএস ধোনিকে দেখেছি আমরা, ওনাকে সবাই পছন্দ করে। ব্যক্তিগতভাবে সাকিব ভাইয়ের ক্যাপ্টেন্সি বলেন বা ওনার প্ল্যানিং, মাঠে প্লেয়ারদের হ্যান্ডেল করা আমি খুবই উপভোগ করি।’ এতদিন সাকিবের সঙ্গে খেলে যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন তা কাজে লাগাতে চান শান্ত, ‘বিপিএলে ওনার সঙ্গে খেলার সুযোগ হয়েছিল তখন অনেক কিছু শিখেছি। চেষ্টা করবো আমার যতটুকু অভিজ্ঞতা আছে কিংবা বড় ভাইদের কাছে শিখেছি ওই জিনিসগুলো ছোট ছোটভাবে কাজে লাগানোর।’ শান্ত বাংলাদেশের হয়ে এখন পর্যন্ত তিন সংস্করণ মিলিয়ে ৭৭টি ম্যাচ খেলেছেন। সর্বোচ্চ ২৯টি ম্যাচ খেলেছেন ওয়ানডে সংস্করণে। ২ সেঞ্চুরি ও ৪ ফিফটিতে এই সংস্করণে তার ব্যাট থেকে আসে ৮৩২ রান। এ ছাড়া ২৩ টেস্টে ১২৮৩ ও ২৫ টি-টোয়েন্টিতে ৫৬৬ রান করেন।
