পাকিস্তানে টেস্ট সিরিজ জয় বাংলাদেশের সেরা অর্জন
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল আইসিসির বৈশ্বিক কোনো শিরোপা জিততে পারেনি এখনো। ফলে দেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় অর্জন বলতে যুব বিশ্বকাপ কিংবা নারী এশিয়া কাপ জয়কেই উল্লেখ করেন অনেকে। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্ত মনে করেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জয়ই এখন অবধি বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা সাফল্য। এর আগে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩ টেস্টে কোনো জয় ছিল না বাংলাদেশের। পাকিস্তানের মাঠে তাদের বিপক্ষে জয় ছিল না কোনো সংস্করণেই। এবার শুধু প্রথমবার টেস্ট জয়ের কীর্তি গড়েই ক্ষান্তি দেয়নি শান্তর দল, পরের টেস্ট জিতে সিরিজও জয় করেছে। রাওয়ালপিন্ডিতে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর গত বুধবার রাতে দেশে ফিরেছে টাইগাররা। গত বুধবার রাত ১১টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পা রাখেন লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
বিমানবন্দরে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমার কাছে তো মনে হয়, বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে সেরা অর্জনগুলির একটি।’ আরো সুনির্দিষ্ট করে জানতে চাওয়ার পর অধিনায়কের উত্তর, ‘বেস্ট বেস্ট’ আমার মনে হয়, সবচেয়ে বড় অর্জন এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের। এটা শুধু আমার একার ব্যক্তিগত কথা নয়, দলের সবাই এটা বিশ্বাস করে। খুবই ভালো লাগছে।’ সিরিজ জয়ের পর উদযাপন কেমন হয়েছে, সেটিও কিছুটা শোনালেন শান্ত। ‘এরকম জয়ের পর তো উদযাপন বিশেষ কিছুই থাকে। ড্রেসিং রুমে সবাই উদযাপন করেছে। সবাই হাসিখুশি ছিল। হোটেলে যাওয়ার পরও আমরা উদযাপন করেছি। পুরো সময়টাই অনেক উপভোগ করেছি।’ প্রথম টেস্ট জয়ের পর ও পরে সিরিজ জয়ের পর শান্তসহ দলের সবাই বলেছেন, এবারের সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা ছিল দারুণ প্রস্তুতির। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যখন ব্যস্ত ছিল দল, তখন অন্য ক্রিকেটারদের নিয়ে স্থানীয় কোচরা নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন বিশেষায়িত ক্যাম্পে। মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুমিনুল হক, নাহিদ রানাদের পারফরম্যান্সে সেটির প্রতিফলন পড়েছে। সিরিজ শুরুর আগে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে যখন দেশে অনুশীলন বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল বারবার, তখন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড বাংলাদেশ দলকে সুযোগ করে দেয় আগেভাগেই সেখানে গিয়ে বাড়তি অনুশীলন করার।
শান্ত বললেন, প্রস্তুতির পথ ধরেই এমন সাফল্যের ঠিকানায় তারা পৌঁছতে পেরেছেন। ‘এই সিরিজটি খুবই ভালো গিয়েছে। আমরা যেভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি, সফরে যাওয়ার আগে এবং ওখানে যাওয়ার পরৃ দলের প্রত্যেকের মানসিকতা, স্কিল নিয়ে চিন্তাভাবনা, সব মিলিয়ে খুব ভালো প্রস্তুতি ছিল এবং প্রত্যেকের ইচ্ছা ছিল যেন আমরা খেলায় জিততে পারি। আমরা পাকিস্তানে তিন দিন আগে গিয়েছিলাম, এটা আমাদেরকে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে।’ পাকিস্তানে জয়ের জন্য দলের সবাইকে কৃতিত্ব দিলেন বাংলাদেশ অধিনাকয়। ‘টেস্ট ক্রিকেটে জেতার জন্য প্রতিটি সেশন ভালো খেলা প্রয়োজন। যদিও অনেক সময় একটি-দুটি সেশন এদিক-সেদিক হলে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকে। তবে কাজটা কঠিন। দলের সবাই অনেক কষ্ট করেছে। কোচিং স্টাফ অনেক কষ্ট করেছেন, সঠিক পরিকল্পনা আমাদের দিয়েছেন। সবাই দলের জন্য খেলেছে ও পরিকল্পনার বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছে।’
কোচ চান্দিকা হাথুরুসিংহের প্রসঙ্গও এলো। বিসিবির নতুন সভাপতি ফারুক আহমেদ একাধিকবার বলেছেন, হাথুরুসিংহেকে কোচের দায়িত্বে রেখে দেয়ার কোনো কারণ তিনি দেখেন না। যদিও সিদ্ধান্ত বোর্ডের সবাই মিলেই নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে কোচের অবস্থান বেশ নড়বড়ে বলে মনে হচ্ছিল কদিন আগেও। তার কোচিংয়ে গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে চরম ব্যর্থ বাংলাদেশ এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি।