সময়টা ভালো যাচ্ছে না তার। বেশ কিছুদিন আগে থেকেই চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হত্যা মামলার আসামি করা হয় তাকে। নতুন করে আঙুলের চোটে পড়েন। সবশেষ জরিমানার কবলে পড়েন। সবমিলিয়ে বড় অস্বস্থিতে ভুগছিলেন। অবশেষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। টি-টোয়েন্টি আর খেলবেন না বলে জানালেও টেস্ট থেকে বিদায় নিতে নিজের দেশকেই বেছে নিয়েছেন। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শেষে বাংলাদেশ ঘরের মাঠে খেলবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। আগামী অক্টোবরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলেই এই ফরম্যাটকে বিদায় জানাতে চান সাকিব। তবে বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা! সাকিব এখন হত্যা মামলার আসামি। এই অবস্থায় দেশে ফিরলে গ্রেফতারও হতে পারেন তিনি। যদিও বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার বিশ্বাস করেন, তার এই ইচ্ছা পূরণ হবে।
গত ৫ আগস্ট আদাবরে পোশাক কারখানার কর্মী মো. রুবেল হত্যার ঘটনায় তার বাবা রফিকুল ইসলামের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরো অনেকের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে সাকিবকে। এরপর হত্যা মামলায় আসামি হওয়ায় জাতীয় দল থেকে বাদ দিয়ে মামলার তদন্তের স্বার্থে সাকিবকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বিসিবিকে আইনি নোটিশ পাঠান একজন আইনজীবী। এই অবস্থায় দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলতে সাকিব দেশে আসলে গ্রেফতার হতে পারেন-এই আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। যদিও সাকিব জানালেন, বিসিবি চেষ্টা করছে নিরাপদে খেলে যেন তিনি দেশ ছাড়তে পারেন। কেননা দেশের মাঠে টেস্ট খেলেই তিনি লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানাতে চান। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর বাংলাদেশ দল পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে সিরিজ খেলেছে। সব সিরিজে দেশের বাইরে থেকেই দলের সঙ্গী হয়েছেন সাকিব। কিন্তু প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সেটি সম্ভব নয়। সাকিবের আশা, দেশের মাটিতে খেলেই টেস্টকে বিদায় জানাতে পারবেন। এ ব্যাপারে সাকিব কানপুরে গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কী পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি অনুভব করেছিলাম শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে বিশেষ করে।’ বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের সঙ্গেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানালেন সাকিব, ‘এভাবেই ফারুক ভাইর সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য লাস্ট। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন কীভাবে সব সুন্দর ভাবে আয়োজন করা যায়।’ মূলত বিসিবিসহ দেশের সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কেবল দেশে ফিরবেন সাকিব। এমনটাই জানালেন বাংলাদেশের এই তারকা ক্রিকেটার, ‘আমি যেন গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোনো সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারবো।’