সুইপ-রিভার্স সুইপ খেলতে অনুপ্রাণিত করলেন শান্ত

প্রকাশ : ২১ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

পাকিস্তানের মাঠে তাদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর যে আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছিল বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের মনে। সে আত্মবিশ্বাসে চির ধরেছে ভারত সফরে গিয়ে। প্রতিবেশি দেশটির কাছে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে ধরাশয়ী হয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। তবে হতাশা ঝেড়ে ফেলার সুযোগ এসেছে টাইগারদের সামনে। এবার ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে স্বাগতিকরা। মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে গতকাল রোববার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সেখানেই সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন রিভার্স সুইপ খেলা নিয়ে। জবাবে উইকেট বা পরিস্থিতির দাবি মেটাতে সুইপ বা রিভার্স সুইপ খেলে কেউ আউট হলেও সমস্যা নেই বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে একসময় রিভার্স সুইপ খেলার প্রবণতা বেশি ছিল কেবল মুশফিকুর রহিমের। নানা সময়ে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে তার আউট হওয়া নিয়ে সমালোচনাও হয়েছে ঢের। এখন অবশ্য রিভার্স সুইপ খেলতে দেখা যায় প্রায় সব ব্যাটসম্যানকে। সবশেষ ভারত সফরে টেস্ট সিরিজে রিভার্স সুইপ খেলতে দেখা যায়ন সাকিব আল হাসানকে। আগে এই শট খুব একটা খেলতে দেখা যায়নি তাকে। তাই ধারাভাষ্য কক্ষে বিস্ময় লুকাননি দীর্ঘদিনের সতীর্থ তামিম ইকবাল। এছাড়া শান্ত, তাওহিদ হৃদয়রা সং সংস্করণেই রিভার্স সুইপ খেলেন। কিন্তু ঠিকঠাক খেলতে না পারার মাশুলও গুনতে হয় শান্তকে। কানপুরে দ্বিতীয় টেস্টের পর হায়দরাবাদে শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে রিভার্স সুইপ খেলার চেষ্টায় আউট হন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

নতুন সিরিজ শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে আলোচনায় আসে ভিন্ন ধরনের এই শট। পেছন ফিরে তাকিয়ে এক ম্যাচে নিজের ভুল মেনে নিলেও আরেক ম্যাচে খেলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরনে শান্ত। ‘শেষ টি-টোয়েন্টিতে আমি যে রিভার্স সুইপটা খেলেছি, সেটা ভুল শট ছিল। এটা আমি স্বীকার করি। ওই সময়ে ওই উইকেটে ওই বোলিংয়ের বিপক্ষে ওই শটটা প্রয়োজন ছিল না। তবে এর আগে আমি যে রিভার্স সুইপ খেলে আউট হয়েছি (কানপুর টেস্টে), ওই উইকেটে শটটা প্রয়োজন ছিল। এর আগে যদি চেন্নাইয়ের (প্রথম টেস্টে) ইনিংস দেখেন, যেখানে ৮২ রান করেছি, সেখানে বেশিরভাগ ওই শট খেলেছিলাম। বল স্পিন হচ্ছিল।’

কানপুরে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আউট হলেও চেন্নাইয়ে বেশ সফলভাবে এই শট কাজে লাগান বাংলাদেশ অধিনায়ক। রাভিচান্দ্রান অশ্বিন, রাভিন্দ্রা জাদেজার বিপক্ষে অন্তত ৯টি রিভার্স সুইপ খেলে ৪টি চারসহ মোট ২৩ রান করেন তিনি। এই শটকে তাই কার্যকরিই মনে করেন শান্ত। বরং বাইরে থেকে এই শট নিয়ে প্রশ্ন তোলাকেই প্রশ্নবিদ্ধ করলেন তিনি। ‘আমার মনে হয়, আপনারা যারা আছেন, আপনাদের চেয়ে আমরা হয়তো একটু বেশি জানি, কোন উইকেটে কোন শট খেলতে হবে। এখন আমি যদি আপনার জায়গায় বসে প্রশ্ন করা শুরু করি, হয়তো প্রশ্ন ভুল হবে। তো এটা একটা বোকামি। আমি বলব না যে, আমাদের ক্রিকেটাররা সবসময় ঠিক শট খেলে আউট হয়। ভুল হয়, ঠিক হয়, এর মাঝামাঝি থাকে। ওইটা আমরা ঠিক করার চেষ্টা করি। তবে সবার একটা যথাযথ পরিকল্পনা থাকে, ওই অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করে।’

রিভার্স সুইপ নিয়ে আলোচনার শুরুটা মূলত মিরপুরের উইকেট নিয়ে। প্রথাগতভাবেই স্পিন সহায়ক হয়ে থাকে এই মাঠের উইকেট। তাই উইকেটের সামনে না খেলে দুই পাশে শট খেলাই সাধারণত বেশি কার্যকর হয় এই মাঠে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও উইকেটের আচরণ অভিন্ন থাকলে সুইপ-রিভার্স সুইপ খেলতে ব্যাটসম্যানদের অনুপ্রাণিত করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ‘উইকেটে যদি স্পিন হয়, অবশ্যই সাইড শট খুব গুরুত্বপূর্ণ, সুইপ-রিভার্স সুইপ। আমরা সাধারণত দেখি, কেউ এই ধরনের শট খেলতে গিয়ে আউট হলে অনেক কথা আসে। তবে এটাও বুঝতে হবে, এই ধরনের উইকেটে কোন শটটা গুরুত্বপূর্ণ। কোনো উইকেটে যে ধরনের শট খেলা গুরুত্বপূর্ণ, ক্রিকেটাররা যদি ওই ধরনের শট খেলে আউট হয়, আমার কোনো সমস্যা নেই। ক্রিকেটাররা ঠিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছে। আমি আশা করি, ওভাবেই ম্যাচটা খেলবে।’