বরাবরই বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটিং লাইনআপ সমৃদ্ধ দল ভারতের। নবীন-প্রবীনের সমন্বয়ে বর্তমান দলটিতেও রয়েছে একঝাঁক তারকা খেলোয়াড়। রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলির মতো অভিজ্ঞদের সঙ্গে রয়েছেন শুবমান গিল-যশস্বী জয়সওয়ালদের মতো তরুণ ব্যাটাররা। তাতেও ব্যাটিং ধস থামছে না। পুনে টেস্টে আরেকবার ব্যাটারদের ব্যর্থতায় একযুগ পর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারের শঙ্কা উঁকি দিচ্ছে ভারতকে। দেশের মাটিতে ভারত শেষবার টেস্ট সিরিজ হেরেছিল ২০১২ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে। চার ম্যাচের সিরিজে ইংল্যান্ড জিতেছিল ২-১ ব্যবধানে। এরপর নিজেদের আঙিনায় এই সংস্করণে টানা ১৮টি সিরিজ জিতেছে ভারতীয়রা। কিন্তু সেই অপ্রতিরোধ্য যাত্রা এবার হুমকির মুখে পড়েছে। বেঙ্গালুরু টেস্টে হেরে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা রোহিত শর্মার দল পুনেতেও রয়েছে বিপদে। গতকাল শুক্রবার পুনে টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ভারত প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৫৬ রানে। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ভারতের শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ একাই ধসিয়ে দিলেন মিচেল স্যান্টনার। অথচ আগের ২৮ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে কখনো ফাইফার পাননি তিনি। তার সেরা বোলিং ফিগার ছিল ৩৪ রানে ৩ উইকেট। সেই স্যান্টনারই কিনা পুনের উইকেটে ভেল্কি দেখালেন। ১৯.৩ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে নিলেন ৭ উইকেট। ১০৩ রানের লিড নিয়ে নিউজিল্যান্ড দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৮ রান তুলে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে। লিড নিয়েছে ৩০১ রানে। টম ব্লানডেল ৩০ ও গ্লেন ফিলিপস ৯ রানে অপরাজিত আছেন। তারা দুজন আজ তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামবেন। আগের দিনের করা ১ উইকেটে ১৬ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামা ভারত এদিন মধ্যাহ্ন বিরতির পর ৭.৩ ওভারের মধ্যেই অলআউট হয়ে যায়। ৫০ রানের মাথায় শুভমান গিলের (৩০) উইকেট হারায় ভারত। স্যান্টনারের বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। বিরাট কোহলি এসে ৯ বল খেলে ১ রান করেই বোল্ড হন স্যান্টনারের ঘূর্ণিতে। ভারতের রান তখন ৫৬। ৭০ রানের মাথায় ফিলিপসের বলে আউট হয়ে ফিরেন জয়সওয়াল। ৩০ রান আসে তার ব্যাট থেকে। মেরে খেলতে শুরু করা ঋষভ পন্তকে ৮০ রানের মাথায় বোল্ড করেন ফিলিপস। ১৮ রান করে যান তিনি। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সরফরাজকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি স্যান্টনার। ৯৫ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১১ রানেই ফিরেন তিনিও। রবীচন্দ্রন অশ্বিনও ফিরেন ৫ বল খেলে ৪ রান করেই। ১০৭ রানের মাথায় তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। নিউ জিল্যান্ডের বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা রবীন্দ্র জাদেজা ১৩৬ রানের মাথায় ফেরেন। তাকেও এলবিডব্লিউ করেন স্যান্টনার। ৩টি চার ও ২ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৩৮ রান করে যান তিনি। এরপর ১৪২ রানের মাথায় আকাশ দীপকে বোল্ড ও ১৫৬ রানের সময় জাসপ্রিত বুমরাহকে এলবিডব্লিউ করে ৭ উইকেট পূর্ণ করেন স্যান্টনার। ২ চার ও ১ ছক্কায় ওয়াশিংটন সুন্দরের অপরাজিত ১৮ রানের ইনিংসে ভারত ১৫৬ পর্যন্ত যায়। স্যান্টনারের ৭ উইকেটের বাইরে ফিলিপস ২টি এবং অন্য উইকেটটি নেন টিম সাউদি। এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। কিন্তু দৃঢ়তা দেখান অধিনায়ক টম ল্যাথাম। ১৩৩ বল খেলে ১০টি চারে ৮৬ রান করে আউট হন তিনি। এ ছাড়া ডেভন কনওয়ে ১৭, উইল ইয়াং ২৩, রাচিন রবীন্দ্র ৯, ড্যারিল মিচেল ১৮ রান করে আউট হন। টম ব্লানডেল অপরাজিত ৩০ ও ফিলিপস ৯ রানে দিন শেষ করে আসেন। নিউজিল্যান্ডের ৫টি উইকেটের চারটিই নিয়েছেন প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেট নেয়া ওয়াশিংটন সুন্দর। অন্য উইকেটটি নিয়েছেন অশ্বিন।