প্রথম ম্যাচে আয়ারল্যান্ডকে ১৫৪ রানে হারিয়ে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ রানে জয়ের রেকর্ড গড়েছিল টাগ্রেসরা। এবার অরেকটি কীর্তি গড়লেন বাংলাদেশের মেয়েরা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে স্বাগতিকদের জয় এসেছে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে। আগে ব্যাট করে এমি হান্টারের ফিফটিতে দুইশো ছুঁইছুঁই পুঁজি পেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। মন্থর উইকেটে ট্রিকি রান তাড়ায় ফারজানা হক পিঙ্কি আর শারমিন আক্তার সুপ্তা গড়েন বড় জুটি। এই দুজনের বিদায়ের পর অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির ব্যাটে সহজেই কিনারে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতে নিয়েছে এক ম্যাচ বাকি থাকতেই। আয়ারল্যান্ডের দেয়া ১৯৪ রানের লক্ষ্য ৩৭ বল আগে তুলে নেয় স্বাগতিক দল।
বাংলাদেশকে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে ৮৯ বলে ৫০ করেন ফারজানা, সুপ্তার ব্যাট থেকে আসে ৬৩ বলে ৪৩ রান। জ্যোতি ফেরেন ৩৯ বলে ৪০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলে। ২৯ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন স্বর্ণা। মিরপুরে নারী ওয়ানডেতে এটাই সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করা জয়। ১৯৪ রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। পঞ্চম ওভারে দলের ১৫ রানে ফিরেন মুরশিদা খাতুন। ওরলা প্রেডেরগেস্টের বলে গালিতে গ্যাবি লুইসের দারুণ ক্যাচে আউট হন তিনি। এরপর শারমিন সুপ্তা-ফারজানা পিঙ্কি মিলে গড়েন ৮৫ রানের জুটি। শুরুতে থিতু হতে সময় নেন তারা। এরপর সাবলীলভাবেই খেলছিলেন। পিঙ্কি তার চিরায়ত ধীরলয়ে ফিফটি তুলেন ৮৮ বলে। এরপরই আউট হয়ে যান তিনি। লাউরা ডেলানির বলে শর্ট মিড অনে তার ক্যাচটাও দারুণভাবে হাতে জমান আইরিশ অধিনায়ক লুইস। খানিক পর আরেক থিতু থাকা ব্যাটার সুপ্তাও বিদায় নিলে হোঁচট খায় বাংলাদেশ। তবে অধিনায়ক জ্যোতি এসেই বদলে দেন পরিস্থিতি। প্রথমে সোবহানা মুশতারিকে নিয়ে যোগ করেন ২২ রান। এরপর স্বর্ণা আক্তারকে নিয়ে দ্রুত লক্ষ্যের দিকে ছুটে যাচ্ছিলেন তিনি। অবশ্য একটু তাড়াহুড়ো করতে গিয়েই কাটা পড়েন জ্যোতি। ৩৯ বলে ১ ছক্কা, ৪ বাউন্ডারিতে ৪০ করে বড় শটের চেষ্টায় বোল্ড হন তিনি। বাকিটা সারেন স্বর্ণা। প্রথম ম্যাচে টস হেরে বড় রান তাড়ায় খাবি খেয়েছিল আয়ারল্যান্ড। এবার তাই টস জিতে ব্যাট করতে নামে তারা। তবে চতুর্থ ওভারে প্রথম উইকেট হারায় সফরকারী দল। অফ স্পিনার সুলতানা খাতুনের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান আইরিশ অধিনায়ক গ্যাবি লুইস। তিনে নেমে এরপর এমি জুটি বাধেন সারাহ ফরবেসের সঙ্গে। দুজনের জুটি অবশ্য ২৬ রানের বেশি আনতে পারেনি। সারাহকে এলবিডব্লিউর শিকার করেন নাহিদা আক্তার। আয়ারল্যান্ড বড় জুটি পায় চতুর্থ উইকেটে। এমি আর অরলা মিলে যোগ করেন ৯১ রান। তাদের জুটিতে এক পর্যায়ে মনে হচ্ছিল আইরিশরা অনায়াসে ছাড়িয়ে যাবে দুইশো। দলের ভীষণ প্রয়োজনে এই জুটি ভাঙেন স্বর্ণা আক্তার। ৬৮ কয়া এমিকে এলবিডব্লিউতে থামান তিনি। ওরলা ৩৭ করে ফেরেন রান আউটে।
পরের দিকে আয়ারল্যান্ডের রান দুইশোর কাছে নিতে ভূমিকা রাখেন লাউরা ডেলানি ও লেহ পল। লাউরা ৫০ বলে করেন ৩৩, পলের ব্যাট থেকে ২৫ বলে আসে ১০ রান। ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা বোলার সুলতানা। ১০ ওভার বল করে ৩২ রানে তিনি নিয়েছেন ২ উইকেট। আয়ারল্যান্ডকে দুইশোর নিচে আটকেই জেতার পথে অর্ধেক কাজ সারা হয়ে যায় বাংলাদেশের। ব্যাটাররা দায়িত্বশীল খেলে বাকিটা সেরেছেন।