টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে চমক

‘শ্রমিক’ সেজে চা বাগানে দুই অধিনায়ক

প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

বড় কোনো টুর্নামেন্টের আগে ঐতিহাসিক স্থানে ট্রফি উন্মোচন নতুন কিছু নয়। ইতিপূর্বে বিপিএল ফাইনালের আগে বিপিএল ট্রফি নিয়ে ফটোশ্যুট করা হয়েছিল ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলে। তার আগে মেট্রোরেল স্টেশনেও হয়েছিল। এবার বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে হয়ে গেল বিশেষ ফটোসেশন। সেখানে ভিন্ন অবতারে দেখা গেলো দুই দলে অধিনায়ককে।

লক্কাতুরা চা-বাগানের মাঝে সিলেট ক্রিকেট স্টেডিয়ামে, যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হলেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আলাদাভাবে নজর কাড়ে সবার। এবার সেই সৌন্দর্যকে ধারণ করা হলো ভিন্নভাবে। পিঠে ঝুলানো পাতা সংগ্রহের ঝুড়ি, পরনেও চা-শ্রমিকের পোশাক। এমন সাজে নিগার সুলতানা জ্যোতি আর গ্যাবি লুইসের হাতে ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন হল। বাংলাদেশ অধিনায়ক জ্যোতির ভাষায় যা নারী ক্রিকেটকে ভিন্নভাবে প্রমোট করবে। সংবাদ সম্মেলনে জ্যোতি আলাদা করে প্রশংসা করলেন এই উদ্যোগের, ‘অবশ্যই (বিশেষ ফটোসেশন)। এর আগে ছেলেদের ক্রিকেটে চা-বাগানের ভেতর করা হয়েছে (ট্রফি নিয়ে ফটোসেশন)। এবার বিশেষ পোশাক পরে ঐতিহ্যগতভাবে হলো। কল্পনার বাইরে। এটা ভিন্নভাবে নারী ক্রিকেটকে প্রমোট করবে।’

আজ দুপুর ২টায় সিলেটে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ডের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের কাছে পাত্তাই পায়নি আয়ারল্যান্ড। তিন ম্যাচই হয়েছে ভীষণ একপেশে। দাপট দেখিয়ে প্রতিপক্ষকে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে এবার টি-টোয়েন্টি মিশন। তবে এই সংস্করণে ভিন্ন চ্যালেঞ্জে পড়ার জন্য নিজেদের তৈরি রাখছে বাংলাদেশ। আইরিশদের তাই হালকাভাবে নেয়ার কারণ দেখতে পাচ্ছেন না জ্যোতি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডের পরিসংখ্যান ভালো। কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে ১১ দেখায় তিনবার জিতেছে আইরিশরা। ৮ জয় নিয়ে যদিও অনেকখানি এগিয়ে বাংলাদেশই।

ওয়ানডে সিরিজ খেলা হয়েছিল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। উইকেট যেখানে স্পিন সহায়ক, মন্থর। আয়ারল্যান্ডের জন্য যা বেশ কঠিন কন্ডিশন। টি-টোয়েন্টি হতে যাচ্ছে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। যেখানকার উইকেট তুলনামূলক ভালো। সিরিজ শুরুর আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা সিলেটেই বেশি খেলি। এখানের উইকেট অনেক ভালো হয়। কোনো কিছু হালকাভাবে নেয়ার কিছু নেই। ম্যাচ বাই ম্যাচ পরিকল্পনা করে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’ জ্যোতিরা নামবেন সিরিজ জয়ের জনই। ‘অবশ্যই সিরিজ জেতার তো চিন্তা থাকবেই। এখন আমরা অন্য এক পিকে আছি। এই মোমেন্টাম ধরে রাখলে দলের জন্য ভালো হবে।’

জ্যোতি জানান মিরপুরের থেকে কন্ডিশন ও ফরম্যাট ভিন্ন হওয়ায় আয়ারল্যান্ডকে পাওয়া যেতে পারে ভিন্ন মেজাজে, সে জন্য নিজেদের প্রস্তুত রাখছেন তিনি, ‘আমি অনেক বেশি ইতিবাচক। আত্মবিশ্বাসী আছি, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী নই। কারণ আমি চিন্তা করি আমাদের এমন একটা দল যে দলীয়ভাবে পারফর্ম করলে ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। নেমেই জিতে যাব তা কিন্তু না, ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। প্রথমতো ওয়ানডে তারা ভিন্নভাবে খেলেছে হয়বতা, কন্ডিশন ভিন্ন ছিল। সেকেন্ড ওয়ানডেতে তারা ভালো ব্যাট করেছে, তৃতীয় ম্যাচেও ভালো ব্যাট করেছে। হালকভাবে নেয়ার কোনো চিন্তা ভাবনা নেই।’ ওয়ানডে সিরিজে সর্বোচ্চ রান করে টি-টোয়েন্টি দলেও এসেছেন শারমিন আক্তার সুপ্তা। তার ব্যাটে দেখা গেছে আগ্রাসী অ্যাপ্রোচ। যা বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটে সচরাচর দেখা যায় না। সব মিলিয়ে খেলোয়াড় ও দলের ছন্দ নিয়ে আশাবাদী জ্যোতি, ‘প্রথমত টি-টোয়েন্টি দলে অনেক বদল আছে। (শারমিন আক্তার) সুপ্তা আপু অনেক ভালো খেলার কারণে তার ইন্টেন্ট ভিন্ন ছিল তাকে এজন্য টি-টোয়েন্টিতে সুযোগ দেয়া হয়েছে। আমি আত্মবিশ্বাসী দল নিয়ে। খেলোয়াড়রা ভালো টাচে আছে, গুরুত্বপূর্ণ হলো আমাদের ওই ধারাবাহিকতা থাকবে কী না। ভিন্ন সংস্করণ, ভিন্ন কন্ডিশন। অবশ্যই আমাকে চিন্তা ভাবনা করে খেলতে হবে। প্রথম ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ম্যাচ ভালো খেলে পুরো সিরিজে এর প্রভাব থাকবে।’