বাস্কেটবল নিয়ে কি পরিকল্পনা নতুন কমিটির?

এক সময়ের জনপ্রিয় খেলা বাস্কেট বল হারিয়ে যেতে বসেছে। নতুন প্রজন্মের অনেকে হয়তো জানেই না বাংলাদেশেও এ খেলা হয়। বিগত সময়ে যারা বাস্কেট বল ফেডারেশনে ছিলেন তারা, খেলাটি এগিয়ে নিতে পারেননি। তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ফেডারেশনে নতুন কমিটি এসেছে। তারা বাস্কেটবলকে নতুনত্ব দেয়ার পরিকল্পনা করছে। ফেডারেশনের নতুন সাধারণ সম্পাদক মেজর আতিকুল হাফিজ (অব.) বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে খেলা করতে চাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাহাঙ্গীরনগরে গিয়ে খেলবে আবার জাহাঙ্গীরনগর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে খেলবে। বাংলাদেশে বাস্কেটবলে বোধ হয় এর আগে এ রকম হয়নি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই পদ্ধতি শুরু করতে চাই।’

১৪ নভেম্বর জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ৯ ফেডারেশনে অ্যাডহক কমিটি গঠন করেছে। বাস্কেটবল ডিসেম্বর মাসে বিজয় দিবস টুর্নামেন্ট আয়োজন করেছে। গতকাল রোববার বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনে ২০২৫ সালের জানুয়ারি-ডিসেম্বর পর্যন্ত বর্ষপঞ্জি ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে দ্বিতীয়, প্রথম বিভাগ লিগ, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ, জুনিয়র প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন কোর্স রয়েছে। সিনিয়র জাতীয় দলের আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের অংশগ্রহণের বিষয়টি এই বর্ষপঞ্জিতে নেই।

এ বিষয়ে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সূচি করে ফিবা ও সাবা ২০২৫ সালের সূচিতে বাংলাদেশের খেলা নেই। এশিয়ান পর্যায়ে যে খেলাগুলো আছে, সেগুলো বাংলাদেশের স্তরের নয়। আমরা জুনিয়র টুর্নামেন্টে শ্রীলংকায় অংশগ্রহণ করব।’ ক্রীড়াঙ্গনে অ্যাডহক কমিটি মূলত ৯০ দিনের। তবে এবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ফেডারেশনের কমিটির সময়সীমা বেঁধে দেয়নি। ২০২৫ সাল ব্যাপী বর্ষপঞ্জি ঘোষণা করলেও এই সময় পর্যন্ত কমিটি থাকবে কি না, এই নিয়ে প্রশ্ন উঠলে সাধারণ সম্পাদকের উত্তর, ‘এনএসসি আমাদের সময়সীমা নির্ধারণ করে দেয়নি। আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা করেছি। সেটা বাস্তবায়নের চেষ্টা করব। এনএসসি এরপর কমিটি বদল বা নির্বাচনের নির্দেশনা দিলে সেটা অনুসরণ করব।’

অনেক ফেডারেশন বর্ষপঞ্জি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে। বছরের একটা পরিকল্পনা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে সরবারহ করে। সেটার অধিকাংশই আবার বাস্তবায়ন করতে পারে না। এর পেছনে বড় কারণ অর্থ। ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক আর্থিক দিকটা সামনে আনেননি, ‘আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি তখন আর্থিক সচ্ছলতা ছিল, এখনও আছে, সামনেও থাকবে। পাশাপাশি আমরা পৃষ্ঠপোষকতা যোগাড় করে এই সূচি বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।’ বাস্কেটবল ফেডারেশনের বিদায়ী কমিটি ফান্ডে প্রায় ২ কোটি টাকা রেখেছে। বাস্কেটবলের প্রেক্ষাপটে বেশ বড় অঙ্কের টাকা। ফলে অ্যাডহক কমিটিকে আর্থিক বিষয় নিয়ে তেমন বেগ পেতে হচ্ছে না। ফুটবল, ক্রিকেটের বাইরে দেশের অন্য সকল ফেডারশেন আর্থিক ও অবকাঠামো সমস্যায় ভুগে। বাস্কেটবলের কষ্ট সবচেয়ে বেশি। নেই খেলার কোর্ট ও ফেডারেশনের অফিস। এই সম্পর্কে আজ একটা আশার আলো শুনিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক, ‘আজই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ক্রীড়া শাখা থেকে একটি চিঠি পেলাম। রোলার স্কেটিংয়ে বাস্কেটবল হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। এখন সেখানে সেনাবাহিনী ক্যাম্প করছে। সেই ক্যাম্প শেষ হলে আমরা ওখানে বাস্কেটবল নিয়ে কাজ শুরু করব।’

বাস্কেটবল ফেডারেশনের সভাপতি ড. শামীম নেওয়াজ যিনি ক্রীড়াঙ্গনে আকা হিসেবেই পরিচিত। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাস্কেটবল যে উডের পর খেলা হয় বাংলাদেশে সেটা নেই। ফলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বাধাগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশের বাস্কেটবল নার্সারি পর্যায়ে। ক্রীড়াসামগ্রী, অবকাঠামো এগুলো আন্তর্জাতিক মানের না হলে খেলোয়াড়রাও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো করতে পারবে না।’