বিশ্বকাপের দ্বারে আর্জেন্টিনা উচ্ছ্বসিত স্কালোনি

প্রকাশ : ২৩ মার্চ ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  স্পোর্টস ডেস্ক

লিওনেল মেসি, পাওলো দিবালা, লাউতারো মার্তিনেজকে ছাড়া খেলতে নেমে বল দখলের লড়াইয়ে পিছিয়ে থাকলেও কাঙ্ক্ষিত গোল ঠিকই পেয়ে গেল আর্জেন্টিনা। তিয়াগো আলমাদার দেয়া গোল ধরে জয় তুলে ২০২৬ বিশ্বকাপ প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেছে লিওনেল স্কালোনির দল। পরের ম্যাচে ব্রাজিলের সঙ্গে ড্র করলেই টিকিট নিশ্চিত হয়ে যাবে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। উরুগুয়ের মতো দলের বিপক্ষে জেতা, সেটাও তাদের মাঠে এবং লিওনেল মেসি, লাউতারো মার্তিনেসের মতো দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ছাড়া- স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ উচ্ছ্বসিত আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি। জয়ের চেয়েও মেসি-মার্তিনেসদের অনুপস্থিতিতে তিয়াগো আলমাদা, জুলিয়ানো সিমেওনেদের মতো নতুনরা দলের প্রয়োজনে এগিয়ে আসায় বেশি খুশি তিনি।

বাংলাদেশ সময় গতকাল শনিবার সকালে উরুগুয়ের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের লড়াইয়ে ১-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। এই জয়ে ২০২৬ আসরের চূড়ান্ত পর্বের দুয়ারে পৌঁছে গেছে তারা। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী কোচ স্কালোনি বললেন, দলের শক্তির গভীরতায় তিনি তৃপ্ত। ‘কীভাবে আমি সন্তুষ্ট না হতে পারি? জয়ের জন্য নয়, যেভাবে তারা নিজেদের সবটুকু দিয়েছে তার জন্য। এটা এমন মাঠ, যেখানে খেলতে এসে প্রতিপক্ষের প্রবল চাপ সামলাতে হয়, যখন গোলের সুযোগ আসে, সেটা কাজে লাগাতে হয়। যখন রক্ষণ সামলানোর প্রয়োজন পড়ে তখন সেটা করতে হয়- এটা কঠিন’। তিনি বলেন, ‘জাতীয় দল একটা দল। এখানে যখন কেউ অনুপস্থিত থাকে তখন আরেকজন এগিয়ে আসে। এমনকি আজ যখন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রা ছিল না, তখনও আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে খেলেছি। পারফরম্যান্স হয়তো ভিন্ন হয় তবে দল নামের ঊর্ধ্বে।’ ম্যাচের শুরুতে উরুগুয়ের প্রবল চাপে রক্ষণ ছেড়ে সেভাবে বের হতে পারছিল না আর্জেন্টিনা। আলমাদা, সিমেওনেদেরও অনেক নিচে নেমে এসে রক্ষণে সাহায্য করতে হচ্ছিল। কেন এতেটা চাপে পড়তে হয়েছিল, দ্বিতীয়ার্ধে কীভাবে আর্জেন্টিনা দাপটের সঙ্গে খেলতে পারল, ব্যাখ্যা করলেন স্কালোনি। ‘উরুগুয়ে প্রথম ২০ বা ২৫ মিনিট খুব ভালো খেলেছে। সে সময় আমরা রক্ষণ সামলেছি, প্রতি আক্রমণ করেছি, যেটা ছিল পরিস্থিতির দাবি। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা বেশি আধিপত্য করেছি এবং তখন খেলাটা ভিন্ন ছিল। ফুটবল এমন সব মুহূর্তের মধ্য দিয়ে এগিয়ে নেয়। আপনাকে জানতে হবে কীভাবে রক্ষণ সামলাতে হয়।’ আর্জেন্টাইন কোচ বলেন, ‘ডান দিকে ওরা মাথিয়াস অলিভেরা, রোনাল্দ আরাউহো, জর্জিয়ান দে আরাকায়েস্তাকে রেখেছিল। পরে আরাকায়েস্তার জায়গায় নিকোলাস দে লা ক্রুস এলো। এরা আমাদের বেশ ভুগিয়েছে। দ্বিতীয়ার্ধে জুলিয়ানো খেলল ওলিভেরার কাছাকাছি, নাহুয়েল মোলিনা খেলল আরাউহোর কাছাকাছি এরপর দলের খেলার উন্নতি হলো।’ ১৩ ম?্যাচে নয় জয় ও এক ড্রয়ে ২৮ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ায় আছে লাতিন আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা। জয়ের নায়ক থিয়াগো আলমাদা। ডি-বক্সের বাইরে হুলিয়ান আলভারেজের কাছ থেকে বল পেয়ে বুলেট গতির শট নেন তিনি। যা জড়িয়ে যায় জালে। ভেলেজ থেকে উঠে আসা এই খেলোয়াড়ের গোল শুধু ম্যাচে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেয়নি, বরং এটি ছিল আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের ইতিহাসে ২০০০তম গোল, যা একটি নতুন রেকর্ড। আর আলমাদার দ্বিতীয়। গত অক্টোবর মাসে বলিভিয়ার বিপক্ষে ৬-০ গোলের জয়ে একটি গোল করেছিলেন এই তরুণ। ম্যাচের পর আলমাদা টিওয়াইসি স্পোর্টসের সঙ্গে কথা বলেন আলমাদা। শুরুর একাদশে থাকার অনুভূতি ও জয়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন, ‘সত্যি বলতে, আমি একটু নার্ভাস ছিলাম। আমি খেলতে চেয়েছিলাম, দেখাতে চেয়েছিলাম কেন আমি দলে ডাক পেয়েছি, ভালো কিছু করার জন্য।’ তিনি বলেন, ‘আজ সবকিছু দারুণ ছিল, আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। এটা ছিল খুব কঠিন ম্যাচ, তবে উরুগুয়েতে এসে জয় পাওয়া সত্যিই অসাধারণ।’ তার জয়সূচক গোল সম্পর্কে তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বলেন, ‘আমি বল পেলাম, শট নিলাম, আর ভাগ্যক্রমে সেটা জড়িয়ে গেল জালে!’