মেয়েদের কোপা আমেরিকা
দশ আসরে ৯বারই চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক

নাটকীয় এক ফাইনাল দেখল ইকুয়েডরের কুইটো শহরের রদ্রিগো পাজ এলগাদো স্টেডিয়ামে। মেয়েদের কোপা আমেরিকা ফাইনালে ব্রাজিল-কলম্বিয়া ম্যাচে যা হয়েছে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য! ম্যাচটা নির্ধারিত সময়েই হেরে যাওয়ার কাছাকাছি ছিল ব্রাজিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তের গোলে সমতা, এরপর অতিরিক্ত সময়ের পাল্টাপাল্টি গোলে আবার সমতায় ম্যাচ গড়িয়েছে টাইব্রেকারে। আর রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচ শেষে হাসলেন ব্রাজিলের মেয়েরা। কলম্বিয়াকে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে হারিয়ে জিতল টানা পঞ্চম মেয়েদের কোপা আমেরিকা। এটি ছিল কোপা আমেরিকা ফেমেনিনার দশম আসর। যার ৯টিতেই শিরোপা জিতে একচেটিয়া আধিপত্য ধরে রাখল ব্রাজিল। ২০০৬ সালে আর্জেন্টিনার কাছে শিরোপা হাতছাড়া না করলে ১০ আসরের প্রতিটি জিততে পারত ব্রাজিল। অন্যদিকে কলম্বিয়াকে দুর্ভাগাই বলতে হয়। শেষ ৫ আসরের মধ্যে চারবার ফাইনালে উঠে প্রতিবারই ব্রাজিলের কাছে হেরেছে তারা। ব্রাজিলের এবারের শিরোপাজয় শুধু সংখ্যার হিসেবে নয়, আবেগ আর ইতিহাসেও দাগ কেটে গেল। আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের ঘোষণা দিয়ে ফের ফেরা কিংবদন্তি মার্তা ভিয়েইরা দ্য সিলভার জন্য এটি ছিল এক প্রাপ্তির ম্যাচ।
স্থানীয় সময় গত শনিবার রাতে হওয়া ফাইনালে নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ শেষ হয় ৩-৩ সমতায়। অতিরিক্ত মিনিট শেষে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-৪। টাইব্রেকারের প্রথম পাঁচটি করে শট শেষেও আলাদা করা যায়নি দুই দলকে। শেষ পর্যন্ত ‘সাডেন ডেথে’ মৃত্যু হয় কলম্বিয়ার সম্ভাবনার। জিতে যায় ব্রাজিল। এই টুর্নামেন্টে ব্রাজিলের জিততে না পারাটাই বলা যায় অঘটনের। তেমন কিছুর সম্ভাবনাই জাগিয়েছিল কলম্বিয়া। কিন্তু মূল ম্যাচে তিন দফায় ও পরে টাইব্রেকারে এগিয়ে থেকেও তাদের ইতিহাস গড়া হয়নি। হার না মানা মানসিকতায় শেষ পর্যন্ত হাল ছাড়েনি ব্রাজিল। এই নিয়ে উইমেন’স কোপার ১০ আসরের মধ্যে ৯টিতেই শিরোপা জিতে নিল ব্রাজিলিয়ানরা। প্রথম চার আসরে টানা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর ২০০৬ সালে ফাইনালে তারা হেরে যায় আর্জেন্টিনার কাছে। এরপর এবার নিয়ে তারা চ্যাম্পিয়ন টানা পঞ্চমবার। ফাইনালে ব্রাজিলের নায়ক অবসর ভেঙে এই টুর্নামেন্টের আগে ফেরা কিংবদন্তি মার্তা। ৯০ মিনিট শেষে যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে গোল করে কলম্বিয়ার মুঠো থেকে জয় বের করে এনে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান তিনি। অতিরিক্ত সময়েও গোল করে ম্যাচে প্রথমবার এগিয়ে দেন দলকে।
পরে টাইব্রেকারে অবশ্য গোল করতে ব্যর্থ হন ৩৯ বছর বয়সী তারকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটির খেসারত দিতে হয়নি নারী ফুটবলের সর্বকালের সেরাদের একজনকে। ম্যাচের ৬০ শতাংশ সময় বল ছিল ব্রাজিলের নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু বারবার এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। ২৫তম মিনিটে তাদের প্রথমবার এগিয়ে দেন লিন্দা কাইসেদো। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের নবম মিনিটে পেনাল্টি থেকে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরেন আঞ্জেলিনা। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম প্রায় ২৫ মিনিটে তেমন উত্তেজনা ছিল না। পরের ভাগে ম্যাচ জমে ওঠে দারুণভাবে। ৬৯তম মিনিটে আবার এগিয়ে যায় কলম্বিয়া। ৮০তম মিনিটে ব্রাজিলকে সমতায় ফেরান আমান্দা গুতিয়েহেস। সেমি-ফাইনালেও দুটি গোল তিনি করেছিলেন। ছয় গোল করে যৌথভাবে এবারের আসরের সর্বোচ্চ গোলস্কোরার ২৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। ৮৮তম মিনিটে মায়রা রামিরেসের গোলে শিরোপার সুবাস পেতে থাকে কলম্বিয়া। একসময় ট্রফি জয়ের খুব কাছে পৌঁছে যায় তারা।
