বাংলাদেশের নারী ফুটবল জাগরণে ফিফার উচ্ছ্বাস
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক

বাংলাদেশের মেয়েরা ফুটবল খেলবে, এটা নব্বই দশকের দিকেও অনেকে চিন্তা করতে পারেনি। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দেশে নারী ফুটবলের যাত্রা শুরু হয়। এক সময় বয়সভিত্তিক দলে সাফল্য আসতে থাকে। এর ২০২৪ সালে প্রথবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় লাল সবুজের মেয়েরা। এই উত্থানের মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়েছে ফুটবলে নারীদের সম্ভাবনা অনেক বেশি। নারী ফুটবল এখন বাংলাদেশের ইতিবাচক বিজ্ঞাপন। অগ্রগতির বড় উদাহরণ। বিগত কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
বয়সভিত্তিক পর্যায় দিয়ে শুরু, তবে জাতীয় দলও এখন এনে দিচ্ছে সাফল্য। প্রথমবারের মতো নারী দল জায়গা করে নিয়েছে এশিয়ান কাপে, যেখানে ভালো করলে মিলবে বিশ্বকাপে খেলার টিকিটও। র?্যাংকিংয়েও এসেছে বিশাল উন্নতি। আর তাই বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রাকে স্বাগত জানাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশেষ পোস্ট করেছে ফিফা।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিজেদের অফিশিয়াল ফেসবুক পেইজে বিশ্বব্যাপী পাবলিক করা পোস্টে কয়েকটি ফটোকার্ড শেয়ার করে ফিফা। যার ক্যাপশনে লেখা ছিল, ১০০-এর কাছাকাছি। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করার পর ফিফা-কোকাণ্ডকোলা নারী র?্যাংকিংয়ে উপরের দিকে উঠেছে। সামনে রয়েছে ফিফা নারী বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জনের সম্ভাবনা। এরপর ছয়টি ফটোকার্ড শেয়ার করেছে ফিফা। যার প্রথমটিতে বাংলাদেশের র?্যাংকিংয়ের গ্রাফ দেখিয়েছে সংস্থাটি। সেই সঙ্গে লিখেছে, বাংলাদেশ ফিফা নারী র?্যাংকিংয়ে সবচেয়ে বড় অগ্রগতি অর্জনকারী দল। দ্বিতীয় ফটোকার্ডে ফিফা লিখেছে, ২০২৩ সালের আগস্টে ফিফা নারী বিশ্ব র?্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪২তম। কিন্তু ২০২৬ সালের এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করার পর তারা উঠে এসেছে বিশ্বের ১০৪ নম্বরে।
তৃতীয় ফটোকার্ডে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার উদাহরণ দিয়ে ফিফা লিখেছে, এতদিন এএফসি মহিলা এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশ কখনও কোনো ম্যাচ জিততে পারেনি। কিন্তু ২০২৫ সালের বাছাইপর্বে তারা একটিও ম্যাচ না হেরে অপরাজিত থেকে ইতিহাস গড়েছে। আগামী বছর মূল টুর্নামেন্টে শীর্ষ ছয়ের মধ্যে থাকতে পারলে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের সামনে ফিফা নারী বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ তৈরি হবে।
বাংলাদেশের ভালো করার পেছনের কারণও জানিয়েছে ফিফা। চতুর্থ কার্ডে সংস্থাটি সেটি জানিয়ে লিখেছে, এই দ্রুত অগ্রগতির পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের প্রথম নারী ফুটবল কৌশলগত পরিকল্পনা ‘এম্পাওয়ার হার : ২০২৪-২৭’ এবং ফিফার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প থেকে পাওয়া ধারাবাহিক সহায়তা। সাফে বাংলাদেশের শিরোপাজয়ের বিষয়টিও তুলে ধরেছে ফিফা। সেটি উল্লেখ করে সংস্থাটি লিখেছে, পরপর দুইবার দক্ষিণ এশীয় ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের মাধ্যমে দলটির আত্মবিশ্বাস ও প্রস্তুতি আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। এই টুর্নামেন্ট ফিফা ফরোয়ার্ড প্রোগ্রামের অর্থায়নে উপকৃত হয়েছে। সর্বশেষে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের মন্তব্য তুলে ধরেছে ফিফা। তিনি বলেছেন, ফিফা নারী ফুটবলের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার ফলে বাংলাদেশে এ নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা তৈরি হয়েছে।
যার ফলস্বরূপ নারী ফুটবলের প্রতি দর্শক ও ভক্তসংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ফিফার এমন পোস্ট বাংলাদেশের নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রায় আরও উৎসাহ যোগাবে, এমন আশা করতেই পারেন ফুটবলভক্তরা।
