ফারুক আহমেদকে নিয়ে মুখ খুললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা

প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

গেল বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পরই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) পরিবর্তন আসে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গা ঢাকা দেওয়া বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের স্থলাভিষিক্ত হন ফারুক আহমেদ। তবে দায়িত্ব পাওয়ার পর বছর না ঘুরতেই তাকে অপসারণ করেছে সরকার। তার জায়গায় নতুন সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সাবেক বিসিবি সভাপতি ফারুকের ৯ মাসের দায়িত্বে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা বেশ ভারি। তবে ফারুক আহমেদকে কী কারণে বিসিবির চেয়ারের পদ থেকে সরিয়ে ফেলানো হয়েছে, এতদিন এ বিষয়ে মুখ না খুললেও অবশেষে মুখ খুললেন ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তার ভাষ্যমতে, ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়া এবং স্বেচ্ছাচারিতার কারণেই বিসিবি সভাপতির পদ থেকে ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

নিউইয়র্কভিত্তিক ঠিকানা টিভির একটি টকশোতে আসিফ মাহমুদ বলেন, ফারুক আহমেদ ক্রিকেটের উন্নয়নের চেয়ে নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ এবং ব্যবসায়িক লাভের দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছিলেন। তার এই আচরণের কারণেই তাকে দায়িত্ব থেকে অপসারণ করা হয়। আসিফ মাহমুদ বলেন, ফারুক আহমেদকে অপসারণের পেছনে কিছু কারণ ছিল।

ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, ‘ফারুক ভাইকে তো আমরাই ক্রিকেটে এনেছিলাম। কিন্তু বোর্ডের ৯ জন পরিচালকের মধ্যে ৮ জনই মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছেন-তিনি স্বেচ্ছাচারিতা করছেন, গঠনতন্ত্র মানছেন না। বিশেষ করে গত বিপিএল আয়োজন নিয়ে অনেক অভিযোগ এসেছে।’ তিনি আরও জানান, ‘বিপিএল আয়োজন নিয়ে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং সেই রিপোর্ট ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে রাজশাহী ও চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি দল পরিচালনায় ব্যর্থ হয়, খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক দিতে না পারায় দেশের ক্রিকেটের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় দেশি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।’ আসিফ মাহমুদ সজীব বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্রিকেটের যে ক্রমাগত অবনতি, সেটা আমরা দেখেছি। ক্রিকেটের চাইতে তার আগ্রহ বেশি ছিল পরবর্তী নির্বাচন, ক্লাব নেওয়া, আর বিজনেস ঘিরে। এসব কারণে তাকে সরানো হয়েছে। গঠনতন্ত্র মেনেই এনএসসির মনোনয়ন উইথড্র করে নতুন সভাপতি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য: আসিফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, ফারুক আহমেদ ক্রিকেটের উন্নতির চেয়ে পরবর্তী বিসিবি নির্বাচনে জয়ের জন্য ক্লাবগুলোকে নিজের পক্ষে টানতে এবং ব্যবসায়িক স্বার্থ পূরণে বেশি আগ্রহী ছিলেন।

আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, মন্ত্রণালয় গঠনতন্ত্র মেনেই ফারুক আহমেদকে অপসারণ করেছে। যেহেতু তিনি ন্যাশনাল স্পোর্টস কাউন্সিলের (এনএসসি) কোটায় পরিচালক হয়েছিলেন, তাই মন্ত্রণালয় চাইলে তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারে। অভিযোগগুলোর ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় সেই পদক্ষেপই নেয় এবং ফারুক আহমেদের জায়গায় নতুন একজনকে মনোনয়ন দেয়, যিনি বর্তমানে বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে আছেন।