অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস

‘না আমাদের কখনও পাঙাশ মাছ দেওয়া হয় না’

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

বলতে দ্বিধা নেই বাংলাদেশের ফুটবল এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মেয়েরা। তুলনামুলক বেশি সুবিধা পেয়েও ছেলেরা যা করতে পারেনি নি। তাই করে দেখিয়েছেন আফঈদা-ঋতুপর্ণারা। পুরুষ দল দক্ষিণ এশিয়ায় মাত্র একবার শিরোপা জিতেছে। অথচ মেয়েরা টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তার চেয়েও মেয়েদের বড় সাফল্য এশিয়ান কাপের মুল পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করা। বয়সভিত্তিক নারী দলগুলোর সাফল্যও চোখে পড়ার মতো। অথচ সেই মেয়েদের নাকি খাবারে দেওয়া হয় পাঙাশ মাছ। অনেক দিন ধরেই এই অভিযোগের তীর বাফুফের দিকে। তবে কদিন আগে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সদস্য এবং নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছিলেন ক্যাম্পে থাকা নারী ফুটবলারদের কখনই পাঙাশ মাছ খাওয়ানো হয় না। গতকাল বৃহস্পতিবার সাফ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের সংবাদ সম্মেলনেও আলোচনায় সেই পাঙাশ। কিরণের মতোই এবার অনূর্ধ্ব-১৭ দলের অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস বললেন, ‘না কখনও পাঙাশ মাছ দেওয়া হয় না।’ দীর্ঘদিন ধরে নারী ফুটবলের টিম স্পনসর ঢাকা ব্যাংক। তাদের সঙ্গে বাফুফের চুক্তি কতো দিনের এবং কী পরিমাণ অর্থ তারা ফেডারেশনকে দিচ্ছে, সেটা জানতে প্রসঙ্গক্রমে পাঙাশের কথা চলে আসে। ??ঢাকা ব্যাংক এত টাকা দিলে মেয়েরা কেন ক্যাম্পে পাঙাশ মাছ খায়? এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে একটু রেগেমেগেই উত্তর দেন মাহফুজা আক্তার, ‘অর্পিতা এখানে বসা আছে, জিজ্ঞেস করেন ওরা পাঙাশ মাছ খায় নাকি।’ এরপরই এক লাইনে অর্পিতার উত্তর, ‘না কখনও পাঙাশ মাছ দেওয়া হয় না।’ ?এর আগে গত সোমবার দুটি এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে তোলা মেয়েদের থাকাণ্ডখাওয়া, ট্রেনিংসহ নানা সুযোগ-সুবিধা নিয়ে বলতে গিয়ে মাহফুজা বলেছিলেন, ‘অনেকেই বলেন, আমরা নাকি মেয়েদের পাঙাশ মাছ খাওয়াই। তবে পরিষ্কার বলছি, মেয়েদের পাতে কখনও পাঙাশ দিই না।’

বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছে। সিনিয়র দল মায়ানমারে এশিয়ান কাপ বাছাই খেলে আসার পরই ছিল সাফ অনূর্ধ্ব-২০। সেই টুর্নামেন্টে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে দম ফেলার ফুসরত ছিল না। কয়দিন পরই ছিল লাওসে এএফসি অনূর্ধ্ব-২০ নারী টুর্নামেন্টের বাছাই। সেখানেও এশিয়া কাপ নিশ্চিত করে দেশে ফেরার দুই দিনের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১৭ দল ভুটান যাচ্ছে সাফের টুর্নামেন্ট খেলতে। নারী দলের হেড কোচ পিটার বাটলার অনূর্ধ্ব-২০ দলে কোচিং করিয়েছেন। লাওস থেকে তিনি ইংল্যান্ডে ছুটি কাটাতে গেছেন। তাই অনূর্ধ্ব-১৭ দলের হেড কোচের দায়িত্বে মাহবুবুর রহমান লিটু। নারী দলের সঙ্গে দীর্ঘদিন থাকলেও হেড কোচের দায়িত্ব পান কালেভদ্রে। অনূর্ধ্ব-২০ দলের মতো ১৭ পর্যায়েও শিরোপায় চোখ বাংলাদেশের, ‘আমরা টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। আশা করি এবারও ভালো কিছু প্রত্যাশার। সবাই দোয়া করবেন।’

এই টুর্নামেন্টের জন্য ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত স্কোয়াড ঘোষণা করেছে বাফুফে। গত বছর অনূর্ধ্ব-১৬ সাফে খেলা ১৫ জনই আছেন এই দলে। নতুন আটজন হলেন- রিয়া, প্রতিমা রানী, জবা রানী, সুরভী রানী, মামনী চাকমা, ঈশিতা ত্রিপুরা, পূর্ণিমা মারমা, আমেনা খাতুন। দলটির অধিনায়ক অর্পিতা বিশ্বাস। ?এ বছর এখনও কোনো ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৭ নারী ফুটবল দল। ২০২৪ সালে সাফে চার ম্যাচের চারটিতে জেতে তারা। সেই প্রতিযোগিতায় ভারতের সঙ্গে খেলা ফাইনালই মেয়েদের সর্বশেষ ম্যাচ। ?বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল-এই চার দেশ নিয়ে ২০ থেকে ৩১ আগস্ট থিম্পুতে হবে এই টুর্নামেন্ট। রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে একদল অন্য দলের সঙ্গে দুটি করে ম্যাচ খেলবে। এরপর সর্বোচ্চ পয়েন্টধারীর হাতে উঠবে ট্রফি। ?২০ আগস্ট ভুটান ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করবে বাংলাদেশ। একদিন বিরতি দিয়ে ২২ আগস্ট দলটির প্রতিপক্ষ ভারত। ২৪ ও ২৭ আগস্ট পরপর দুই ম্যাচে নেপালকে মোকাবিলা করবে বাংলাদেশ। ২৯ আগস্ট ভুটান এবং ৩১ আগস্ট আবার ভারতের মুখোমুখি হবে মেয়েরা। সবগুলো ম্যাচ থিম্পুর চাংলিমিথাং স্টেডিয়ামে।

?এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। সাতবার অংশ নিয়ে দুবার ট্রফি জিতেছে তারা। বাংলাদেশের সমান দুবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত। ?এ বছর অনূর্ধ্ব-১৭ পর্যায়ের টুর্নামেন্ট হলেও ২০১৭ সালে প্রথম আসর থেকে চতুর্থ আসর পর্যন্ত হয়েছিল অনূর্ধ্ব-১৫ পর্যায়ে। এরপর ২০২৩ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ ও ২০২৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল সাফের এই প্রতিযোগিতা।