কাকে সাত পাকে বাঁধছেন শচীন পুত্র

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া ডেস্ক

বাবা বিশ্ব ক্রিকেটের জীবন্ত কিংবদন্তি ক্রিকেটার। অনেক ভারতীয় যাকে ক্রিকেট দেবতা মনে করে থাকেন। সেই শচীন টেন্ডুলকারের ছেলে অর্জুন টেন্ডুলকার। বাবার মত নিজেও ক্রিকেট খেলেন। সেই ছোট বেলা থেকেই বাবার ছায়ায় বড় হয়েছেন। কিন্তু বাবার মতো অত বড় মাপের ক্রিকেটার হতে পারেননি। যদিও বাবার মতো ব্যাটসম্যান নয়, বাঁহাতি পেসার। ভারত ও ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটেই আপাতত সীমাবদ্ধ তার ক্যারিয়ার। বাবার মতো বড় ক্রিকেটার না হতে পারলেও বয়স তো আর থেমে নেই তার। পঁচিশ থেকে আগামী মাসে ছব্বিশে পা রাখবেন অর্জুন। তাই বিয়ের ভাবনা ভাবতে এই সময়টাকেই বেছে নিয়েছেন অর্জুন। গত বুধবার বাগদানও হয়ে গেল তার। পারিবারিক এক অনুষ্ঠানে মুম্বাইয়ের ব্যবসায়ী রবি ইকবাল ঘাইয়ের নাতি সানিয়া চন্দকের সঙ্গে বাগ্দান হয়ে গেল অর্জুনের। দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবের উপস্থিতিতে আংটি বদল করেছেন আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে খেলা অর্জুন। টেন্ডুলকার কিংবা রবি ঘাইয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। গ্রাভিস গ্রুপের চেয়ারম্যান ৭০ বছর বয়সি শিল্পপতি রবি ঘাই ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেল ও ব্রুকলিন ক্রিমারি আইসক্রিম কোম্পানির মালিক। ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, রবি ঘাইয়ের ছেলে গৌরব ঘাইয়ের মেয়ে সানিয়া। অর্জুনের হবু পুত্রবধূ সানিয়া চন্দক মুম্বাইয়ের ক্যাথেড্রাল অ্যান্ড জন কোনন স্কুলে পড়াশোনা করেছেন। লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস থেকে ২০২০ সালে স্নাতক সম্পন্ন করেন। ভারতের সিএনবিসি টিভি ১৮ জানিয়েছে, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ভেটেরিনারি সার্ভিস (ডব্লিউভিএস) থেকে গত বছর ভেটেরিনারি টেকনিশিয়ানের সার্টিফিকেট নিয়েছেন সানিয়া। মুম্বাইয়ে ‘মি : পওজ পেট স্পা অ্যান্ড স্টোর’-এর পরিচালক ও ব্যবসায়িক অংশীদারও সানিয়া। এই ব্যবসা থেকে বছরে ৯০ লাখ রুপি আয় হয় বলে জানিয়েছে এনডিটিভি। সানিয়ার ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ জানা যায়নি। তিনি মিডিয়া ও নিজের প্রচার একটু এড়িয়ে চলেন বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম। অর্জুনের বোন সারা টেন্ডুলকারের সঙ্গে বেশ ভালো সম্পর্ক সানিয়া চন্দকের। ইনস্টাগ্রামে দুজনের একসঙ্গে ছবি দেখা যায়। সানিয়ার দাদা রবি ঘাইয়ের বাবা ইকবাল কৃষাণ (আই কে ঘাই) ভারতে ‘আইসক্রিমের মহারাজা’ হিসেবে পরিচিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যদের তিনি ঘরে বানানো খাবার সরবরাহ করতেন। ভারতে কোয়ালিটি আইসক্রিম প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। তার ছেলে রবি ঘাই কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হোটেল ব্যবস্থাপনায় ডিগ্রি নিয়ে ১৯৬৭ সালে ব্যবসায় মনোযোগ দেন। রবির ছেলে গৌরব ঘাই এখন ব্যবসায়িক গ্রুপগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছেন। কিংবদন্তি ক্রিকেটার বাবার সন্তান হলেও প্রত্যাশার খুব কমই পূরণ করতে পেরেছেন অর্জুন। বাঁহাতি এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে গোয়ার প্রতিনিধিত্ব করেন। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে মিডলসেক্স কাউন্টি ক্রিকেট লিগের দল এলিং ক্লাবেও খেলেছেন অর্জুন। মুম্বাইয়ের বয়সভিত্তিক দল থেকে উঠে এসে ২০২০-২১ মৌসুমে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করেন। ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, অর্জুনের মোট সম্পদের আর্থিক মূল্য ২২ কোটি রুপি। বেশির ভাগ আয় করেছেন আইপিএল থেকে। ২০২০ সালে ২০ লাখ রুপিতে সই করেন মুম্বাইয়ে। পরের বছর ৩০ লাখ রুপিতে তাকে ধরে রাখে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। গত পাঁচ মৌসুমে আইপিএল থেকে ১ কোটি ৪০ লাখ রুপি আয় করেছেন অর্জুন। রঞ্জি ট্রফি, বিজয় হাজারে ট্রফি ও সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি মিলিয়ে ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যান্য খাত থেকে বছরে ১০ লাখ রুপি আয় অর্জুনের। সব মিলিয়ে ক্রিকেট থেকে তার বার্ষিক আয় প্রায় ৫০ লাখ রুপি। অর্জুন তার মা-বাবার সঙ্গেই থাকেন। মুম্বাইয়ে ২০০৭ সালে ৩৯ কোটি রুপি খরচ করে ৬ হাজার বর্গফুটের একটি বিলাসবহুল বাড়ি কেনেন শচীন টেন্ডুলকার, যেটার দাম এখন প্রায় ১০০ কোটি রুপি। লন্ডনে লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের কাছাকাছি একটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে টেন্ডুলকারের। গ্রীষ্মকালে সেখানে গিয়ে অনুশীলন করেন অর্জুন।