ফিরেই মেসির চমক, জিতল মায়ামি
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া ডেস্ক

পায়ের চোটের কারণে টানা দুই সপ্তাহ ছিলেন মাঠের বাইরে। চোটমুক্ত হয়ে বদলি হিসেবে মাঠে নেমেই আলো ছড়ালেন লিওনেল মেসি। খেলায় দারুণ প্রভাব ফেলেছেন তিনি। বাংলাদেশ সময় গতকাল রোববার সকালে গোল-অ্যাসিস্ট করে ইন্টার মায়ামিকে জিতিয়েছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। এমএলএস চ্যাম্পিয়ন লস অ্যাঞ্জেলেস গ্যালাক্সিকে ৩-১ গোলে তারা। অথচ ৮৪ মিনিট পর্যন্ত ম্যাচ ১-১ গোলে সমতা বিরাজ করছিল। নির্ধারিত সময়ের বাকি ছয় মিনিট। রদ্রিগো দে পলের কাছ থেকে বক্সের বাইরে বল পেলেন লিওনেল মেসি। চকিতে একজনকে কাটিয়ে এগিয়ে গেলেন, আগুয়ান আরও একজনকে কাটিয়ে আচমকা বক্সের বাইরে থেকে নিলেন শট। খুব গতিময় নয়, কিন্তু একদম মাপা শট। গড়ানো সেই শটের নাগাল পেলেন না গোলকিপার। ধারাভাষ্যকার বললেন, ‘ম্যাজিক্যাল মেসি। আরেক ধারাভাষ্যকার যোগ করলেন, ‘বেশির ভাগের কাছেই এই গোল স্পেশাল, মেসির জন্য নরম্যাল।’
স্কোয়াডে নাম থাকলেও শুরুর একাদশে ছিলেন না মেসি। অপেক্ষার অবসান দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই। তাকে পেয়ে বেড়ে যায় দলের খেলার ধার। কিন্তু গোল হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত তার একটু জাদুর ছোঁয়াতেই দূর হলো দলের দুর্ভাবনা। একটু পর তার আরেকটি জাদুকরি মুহূর্ত নিশ্চিত করে দিল দলের জয়। চোট কাটিয়ে তিন ম্যাচ পর মাঠে ফিরেই ইন্টার মায়ামির জয়ের নায়ক মেসি। প্রথমার্ধের শেষ দিকে জর্দি আলবার গোল এগিয়ে দেয় মায়ামিকে। গ্যালাক্সি সমতায় ফেরে ৫৯তম মিনিটে। ৮৪তম মিনিটে গোল করেন মেসি। মিনিট পাঁচেক পর তার সহায়তা থেকে গোলের দেখা পান লুইস সুয়ারেস। ম্যাচের ৪৬ শতাংশ সময় বল ছিল মায়ামির নিয়ন্ত্রণে। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে তারা গোলে শট নেয় ২৯টি। যদিও কার্যকারিতা ছিল না খুব। লক্ষ্যে ছিল স্রেফ ৮টি শট। একাদশ মিনিটে খুব কাছ থেকে নেওয়া লুইস সুয়ারেসের শট ফিরে আসে পোস্টে লেগে। ৩০তম মিনিটে তেলাস্কো সেগোভিয়া বল জালে পাঠালেও গোল পায়নি মায়ামি। মনিটরে দেখে অফসাইডের ঘোষণা দেন রেফারি। ৪৩তম মিনিটে আলবার গোলে এগিয়ে যায় মায়ামি। গোলটির বড় কৃতিত্ব যদিও সের্হিও বুসকেতসের। মাঝমাঠ থেকে অসাধারণ এক ডিফেন্সচেরা পাস দেন বার্সেলোনার সাবেক তারকা।
বক্সের মাথায় সেই বল ধরে গোলকিপারকে সুযোগ না দিয়ে জালে পাঠান আলবা। মেসির প্রথম উল্লেখযোগ্য ভূমিকা দেখা যায় ৫৭তম মিনিটে। সুয়ারেসের দুর্দান্ত পাস থেকে বক্সের বাঁ পাশে বল পান আলবা। তিনি বাড়িয়ে দেন বক্সের ঠিক বাইরে অপেক্ষায় থাকা মেসিকে। কিন্তু তার বাঁ পায়ের শট একটুর জন্য ওপর দিয়ে চলে যায়। দুই মিনিট পরই সমতায় ফেরে গ্যালাক্সি। বাঁ পাশ থেকে এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে আরেকজনকে দারুণভাবে বিভ্রান্ত করে বল জালে পাঠান জোসেফ পেইন্টসিল। গোল হজমের পর আক্রমণের ধার আরও বাড়ে মায়ামির। ৬৮তম মিনিটে মেসির পাস থেকে সুয়ারেসের শট ঠেকিয়ে দেন গ্যালাক্সির গোলকিপার। পরের মিনিটেই এ গোলকিপার মুঠোয় জমান ফাফা পিকুঁর হেড। দুই মিনিট পর আলবার ভলি চলে যায় গোলবারের ওপর দিয়ে। ৭৭তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে বালতাসার রদ্রিগেসের দুর্দান্ত শটে কোনোরকমে আঙুল ছুঁইয়ে বল ওপর দিয়ে পাঠিয়ে দেন গ্যালাক্সির গোলকিপার। একের পর এক আক্রমণে হতাশার পর সেই স্বস্তির উপলক্ষ আসে সেই মেসির পা থেকেই। তাকে ঘিরে উদযাপনে মেতে ওঠেন সতীর্থরা। এবারের লিগে ১৯ গোল নিয়ে শীর্ষে আর্জেন্টাইন মহাতারকা।
৮৯তম মিনিটে দে পলের পাস থেকে দুর্দান্ত এক ব্যাকহিলে বক্সের ভেতর সুয়ারেসকে খুঁজে নেন মেসি। নিখুঁত ফিনিশিংয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৯ ম্যাচের মধ্যে ‘রানিং প্লে’ থেকে সুয়ারেসের প্রথম গোল এটি। সাপোর্টার্স শিল্ড জয়ের লড়াইয়ে মায়ামির জন্য এই জয় ছিল গুরুত্বপূর্ণ। ২৪ ম্যাচে ৪৫ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্সের পয়েন্ট তালিকায় পাঁচে আছে তারা। শীর্ষে থাকা সিনসিনাটির পয়েন্ট ৫২, তবে ম্যাচ খেলেছে তারা ২৭টি। গত বছলের মেজর লিগ সকারের কাপ শিরোপা জয় করা গ্যালাক্সি এবার ওয়েস্টার্ন কনফারেন্সে ধুঁকছে। সবশেষ চারটি লিগ ম্যাচে তাদের জয় নেই। ২৪ ম্যাচে ৪০ পয়েন্ট নিয়ে তারা আছে পাঁচে।
