তাজউদ্দিন ইনডোর স্টেডিয়ামে প্যারা শাটলারদের খেলা শুরু
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
গতকাল বৃহস্পতিবার শহিদ তাজউদ্দিন আহমেদ ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে জাতীয় প্যারা ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা। ঢাকা এবং দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ১০০ প্যারা শাটলার খেলতে এসেছেন দুদিনব্যাপী এই টুর্নামেন্টে। এর আগে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন জাতীয় ব্যাডমিন্টনের চার সেরা শাটলার খন্দকার আবদুস সোয়াদ, গৌরব সিংহ, উর্মি আক্তার ও নাছিমা খাতুন। তাদের একমঞ্চে নিয়ে আসেন ন্যাশনাল প্যারালিম্পিক কমিটি অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ড. মারুফ আহমেদ মৃদুল। প্যারা শাটলারদের উৎসাহ দিতে আসেন জুলাইযোদ্ধা জাভেদ ইকরাম লিওন। গত বছরের ৪ আগস্ট কাওরানবাজারে অফিস থেকে নেমে বাসায় যাওয়ার সময় যোগ দেন ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে। এরপর বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। প্যারা শাটলাদের খেলা দেখতে এসে তিনি বলেন, ‘এখন আমিও তাদের মতো। তাই এসব প্যারা শাটলাদের উৎসাহ দিতে এসেছি এখানে।’ প্যারা ব্যাডমিন্টনে নতুন নন ইয়ামিন হোসেন। চার ফুট চার ইঞ্চির উচ্চতার এই শাটলার ২০২৩ সালে ইন্দোনেশিয়ার ফক্সেস আন্তর্জাতিক ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে দ্বৈতে ব্রোঞ্জ জিতে নিয়ে এসেছেন। তার সতীর্থ ছিলেন কুয়েতের আদুল্লাহ। এছাড়া বাহরাইনে আন্তর্জাতিক প্যারা ব্যাডমিন্টনে দুবার ও জাপানে বিশ্ব প্যারা ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপে খেলেছেন। দুই বছর আগে চীনে প্যারা এশিয়ান গেমসেও খেলেছেন ইয়ামিন। পেশায় চা দোকানী। এর মধ্যেও র্যাকেট হাতে চলে এসেছেন খেলতে। ইয়ামিনের কথা, ‘আমি বিশ্ব আসর থেকে পদক জিতেছি। র্যাংকিংয়েও অনেক উন্নতি করেছি। কিন্তু ২০২৩ সালের পর আর কোথাও খেলার জন্য ডাক পাইনি।’ তিনি যোগ করেন, ‘দোকান চালিয়ে খেলতে আসি। যদি আমাদের বেতন দেওয়া হতো, তাহলে আমরা প্যারা ব্যাডমিন্টনে আরও বেশি সময় দিয়ে দেশের জন্য আরও পদক জিতে আনতে পারতাম।’ ইয়ামিনের বড় বোনের স্বামী আশরাফ আলী এবার ইয়ামিনের সতীর্থ। তারও উচ্চতা ইয়ামিনের সমান। আশরাফ আলীর কথা, ‘আমরা খেলতে চাই। তবে সে ব্যবস্থা করতে হবে। তবেই না বিদেশ থেকে আমরা পদক আনতে পারব।’
পাবনার সুজানগরের ছেলে আলমগীর হোসেন মোস্তাকিম। ডান হাত স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট। এ নিয়েই সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তিনি। পড়ছেন মিরপুর সরকারী বাংলা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। ছোটবেলায় বন্ধুদের খুনসুটি মনে করে আলমগীর বলেন, ‘ছোটবেলায় যখন বন্ধুদের সঙ্গে খেলতাম, অনুপ্রেরনার বদলে জুটতো মানসিক নির্যাতন। বন্ধুরা বলত, যত ভালো খেলিস না কেন, কখনও ভালো কোনো জায়গায় যেতে পারবি না।’
