দাবি না মানলে ঘরোয়া ক্রিকেট বর্জনের হুঁশিয়ারি
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

হেভিওয়েট তামিম ইকবালসহ ১৬ প্রার্থী নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহারের পর একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। নির্ধারিত সময় শেষের পর নাম প্রত্যাহার করে নিলেন আরও দুই প্রার্থী। তাদের একজন লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের চেয়ারম্যান লুৎফর রহমান বাদল। যিনি গত শুক্রবার নাম প্রত্যাহার করেছেন। রাজশাহী বিভাগের প্রার্থী হাসিবুল আলম। তিনি গতকাল শনিবার মিরপুর বিসিবি ভবনে এসে নাম প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। ফলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোদের সংখ্যাটা ক্রমেই ভারী হচ্ছে। পাশাপাশি বাড়ছে শঙ্কাও। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল শনিবার তিন দফা দাবি জানিয়েছে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা সংগঠকরা। যা না মানলে তারা বিসিবির অধিনে ঘরোয়া ক্রিকেট বর্জনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিসিবি নির্বাচনে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করা ক্রীড়া সংগঠকরা। এ সময় নিজেদের দাবি ও এর যৌক্তিকতা উত্থাপন করেন মোহামেডানের কাউন্সিলর মাসুদুজ্জামান। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিসিবি নির্বাচনের নামে প্রহসন হচ্ছে, যা বিশ্বে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিতর্কিত করছে। ৬ অক্টোবর প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন আয়োজন করলে ইতিহাস কলঙ্কিত হবে। চলমান এই সমস্যা সমাধানে তিন দফা দাবি জানান তারা। সংগঠকদের দাবিগুলো হচ্ছে, পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনের সময় বৃদ্ধি (পেছানো) করা, অ্যাডহক কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজন এবং বর্তমান নির্বাচন কমিশন কিংবা নতুন গঠিত কমিশনের মাধ্যমে পুনরায় তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
কেন এসব দাবি তোলা হলো সেই ব্যাখ্যাও দেওয়া হয় এই প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলনে। বিসিবি নির্বাচন ঘিরে সংগঠকদের অভিযোগ জেলা ও বিভাগীয় কাউন্সিলর তালিকায় সরকারি হস্তক্ষেপ, আবাহনী-মোহামেডানের মতো বড় ক্লাবের কাউন্সিলরদের নির্বাচন বর্জন, বিসিবি সভাপতির ‘একক হস্তক্ষেপে’ কাউন্সিলরদের যোগ্যতার ক্যাটাগরি নির্ধারণ, নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যাওয়ার পর সাবেক বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদের কাউন্সিলরশিপ গ্রহণ, ১৫ ক্লাবকে কাউন্সিলরশিপ না দেওয়া এবং জেলা-বিভাগীয় কাউন্সিলরদের ‘আটকে রাখা’। এ ছাড়াও ৫ অক্টোবরের মধ্যে এসব দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। অন্যথায় বৃহত্তর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি আসন্ন ঘরোয়া ক্রিকেটেও অংশ না নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে সরাসরি নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলে এটাকে ‘প্রহসনের নির্বাচন’ বলেছেন রাজশাহী বিভাগের হাসিবুল। তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘যদি এভাবে চলতে থাকে, তবে বিসিবি নির্বাচনের মান আরও খারাপ হবে। আগের নির্বাচনের চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি এখন চোখে পড়ছে।
সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে না, বরং এটা প্রহসনের নির্বাচন হয়ে যাচ্ছে। তাই আমি মনে করছি এই প্রক্রিয়ায় ভালো কোনো ফল আসবে না। ফলে আমি স্বেচ্ছায় নির্বাচনি লড়াই থেকে সরে দাঁড়ালাম। আর অংশগ্রহণ করব না।’ লুৎফর রহমান বাদল অবশ্য কাদা না ছুড়ে বলেন, ‘আমি আসন্ন বিসিবি নির্বাচন থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলাম। এখানে কারও দিকে আঙুল তুলছি না। তবে অদূর ভবিষ্যতে পরিস্থিতি কখনও অনুকূলে থাকলে সবাইকে জানাবো, কেন এবং কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ?্য হলাম। কাদা-ছোড়ার দিকে আমি যেতে চাই না।
যারা এই নির্বাচনে জয়ী হয়ে পরিচালক হচ্ছেন, তাদের প্রতি শুভকামনা।’ বাদল না বললেও রাজশাহী বিভাগের প্রার্থী হাসিবুল আলম আঙুল তুললেন বিসিবির দিকেই, ‘রাজশাহীতে কয়জন কাউন্সিলর ই-সিস্টেমে ভোট দেবেন, আমি তা জানতে এসেছিলাম। কিন্তু বোর্ড থেকে কোনো তথ্য পাইনি। তবে আমি জেনেছি, ক্যাটাগরি-১ এ মোট ৩৫ জন ভোট দেবেন। এরমধ্যে ১৯ জন দেবেন ই-ভোট। আর সরাসরি এসে ১৬ জন ভোট দেবেন।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘গত ২ অক্টোবর আমি নির্বাচন কমিশনকে একটি চিঠি দিয়েছি। আমার ভোটারদের খুঁজে পাচ্ছি না, ভোট চাওয়ার সুযোগ পাচ্ছি না। তাই আমি মনে করি মুখলেছুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা উচিত। তিনি যেভাবে ভোট করছেন, তা পুরোপুরি অবৈধ। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনকে ব্যবস্থা নিতে হবে।’ আনুষ্ঠানিকভাবে নাম প্রত্যাহারের সুযোগ গত বুধবারই পেরিয়ে গেছে। ব্যালট পেপারে তাই লুৎফর রহমান বাদল ও হাসিবুলের নাম থাকবেই। তবে দুজনের অংশগ্রহণ আর থাকছে না।
