ওয়ানডে দলে নতুন মুখ, ফিরলেন সৌম্য সরকার
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

মাশরাফি, সাকিব, তামিম মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর অবসরে বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেটের এক সোনালী যুগের সমাপ্তি ঘটেছে। এই পাঁচ ক্রিকেটার বাংলাদেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। তাদের হাত ধরেই দেশের ক্রিকেটের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল। সেটি এখন অতীত। সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা। তাও আবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে। সেই লজ্জা সঙ্গী করে দেশে ফিরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। এবার ঘরের মাঠে সেই ক্ষতে প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ এসেছে। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যাদের কয়েকদিন আগে হারিয়েছে নেপাল। শুধু তাই ই নয়, সিরিজও জিতে নিয়েছে হিমালয়ের দেশটি। এবার সেই ক্যারিবীয়ানদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে লাল সবুজের দেশ। সেই সিরিজ সামনে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের জন্য দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা শেষ স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন দুইজন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ এবং পেসার নাহিদ রানা। তাদের জায়গায় ফিরেছেন অভিজ্ঞ ব্যাটার সৌম্য সরকার এবং নতুন মুখ মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
ফেরার পর এক ম্যাচ খেলেই বাদ পড়ে গেলেন নাঈম শেখ। এক ম্যাচ খেলে দলে জায়গা হারালেন নাহিদ রানাও। এক ব্যাটসম্যান ও এক পেসারের বদলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দলে নেওয়া হয়েছে দুই ব্যাটসম্যানকে। আগের আরও অনেকবারের মতো আবারও দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকার। এই নিয়ে কতবার দলে ফিরলেন সৌম্য, তিনি নিজেও হয়তো বলতে পারবেন না ঠিক করে। প্রায় ১১ বছরের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৭৬টি ম্যাচ খেলেছেন ৩২ বছর বয়সী ক্রিকেটার। সবশেষটি ছিল গত ফেব্রুয়ারিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে আউট হয়েছিলেন শূন্য রান করে। এর আগের ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেছিলেন তিনি গত ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। সেই ম্যাচে করেছিলেন ৭৩ রান।
আয়গানিস্তানের বিপক্ষে সদ্য সমাপ্ত ওয়ানডে সিরিজের আগে টি-টোয়েন্টি সিরিজের স্কোয়াডে তিনি ছিলেন। কিন্তু যেতে পারেননি ভিসা জটিলতায়। দলে ডাক পাওয়া মাহিদুলকে নেওয়া হয়েছে মিডল অর্ডারের সাম্প্রতিক দুরাবস্থার কাটানোর একটি পদক্ষেপ হিসেবে। ২৬ বছর বয়সী কিপার-ব্যাটসম্যান বাংলাদেশের হয়ে একটি টেস্ট খেলেছেন গত অক্টোবরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে।
লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে মাহিদুলের অভিজ্ঞতা ৯৬ ম্যাচের। চার সেঞ্চুরি ও ২৮ ফিফটিতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার রান করেছেন তিনি ৪৪.৫৩ গড়ে। সবশেষ লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলেছেন তিনি গত মে মাসে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে। নিউ জিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিপক্ষে সিরিজে দুটি ম্যাচ খেলে তার রান ছিল ১০৫ ও অপরাজিত ৪২। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে ৪৩১ রান করেছিলেন তিনি প্রায় ৪৮ গড়ে।
ওই আসরেই প্রাইম ব্যাংকের হয়ে ৬১.৮০ গড় ও ১২১.৮৯ স্ট্রাইক রেটে ৬১৮ রান করে আলোড়ন তুলেছিলেন নাঈম। ১১ ইনিংসে ছক্কা মেরেছিলেন ২৭টি। সেই পারফরম্যান্সেই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে দলে জায়গা ফিরে পান বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কিন্তু ফেরার পর তিন টি-টোয়েন্টিতে তিনি রান করেছেন ২৯ বলে অপরাজিত ৩২, ৮ বলে ৩ ও ১৯ বলে ১০। দুই বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে মঙ্গলবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেন ২৪ বলে ৭। তার প্রত্যাবর্তন পর্ব আপাতত শেষ এখানেই। আফগানদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচটি দিয়েই ওয়ানডে ক্রিকেটে ফেরেন নাহিদ রানা। প্রথম স্পেলে দারুণ গতিময় বোলিংয়ে ১৫০ কিলোমিটার ছাড়িয়েও যান। কিন্তু কার্যকর বোলিং করতে পারেননি। ৮.২ ওভারে ৫৬ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। নবম ওভারের দুটি বল করে তিনি বেরিয়ে যান অস্বস্তির কারণে। এবার দল থেকেও ছিটকে গেলেন।
পেসার একজন কমিয়ে ব্যাটসম্যান বাড়ানোয় স্কোয়াডে পেসার এখন চারজন। স্পিন আক্রমণে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে যথারীতি আছেন রিশাদ হোসেন ও তানভির ইসলাম। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজটি শুরু শনিবার। সবকটি ম্যাচই মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ ওয়ানডে স্কোয়াড: মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামীম হেসেন, নুরুল হাসান, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান, হাসান মাহমুদ, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন।
