আজ উইন্ডিজের বিপক্ষে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ক্রীড়া প্রতিবেদক

‘পঞ্চপান্ডব’ যুগের অবসান হতেই ওয়ানডে ক্রিকেটে সোনালী সময় হারাতে বসেছে বাংলাদেশ। এ সংস্করণে রীতিমত ধুঁকছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে টাইগাররা। সেই লজ্জা ক্ষতে কিছুটা প্রলেপ দেওয়ার সুযোগ এসেছে। ঘরের মাঠে আরেকটি ওয়ানডে সিরিজে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে স্বাগতিকরা। প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যাদের কয়েকদিন আগে হারিয়েছে নেপাল। শুধু তাই ই নয়, সিরিজও জিতে নিয়েছে হিমালয়ের দেশটি। এবার সেই ক্যারিবীয়ানদের বিপক্ষে মাঠে নামছে লাল সবুজের দেশ। হতাশা পেছনে ফেলে জয় দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ দল। আজ মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচ।

সম্প্রতি তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে আফগানিস্তানের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে যাচ্ছেতাই পারফরমেন্স করেছে টাইগাররা। সিরিজের একটি ম্যাচেও পুরো ৫০ ওভার খেলতে পারেনি। শেষ দুই ওয়ানডেতে ৩০ ওভারের নীচে অলআউট হয় টাইগাররা। আফগানিস্তানসহ গত বছরের নভেম্বর থেকে টানা চারটি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ। এমনকি গত বছরের নভেম্বর থেকে ১৪ ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টিতে জিতেছে টাইগাররা।

হতাশার মধ্যেও বাংলাদেশের জন্য স্বস্তির বিষয় হলো, সর্বশেষ চার সিরিজ বিদেশের মাটিতে হারলেও ঘরের মাঠে সর্বশেষ সিরিজে ঠিকই জিতেছিল বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের মার্চে ঘরের মাঠে শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। এ সিরিজ জয় ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে সাহস জোগাবে মিরাজ-তাসকিনদের। আরেকটি পরিসংখ্যান আত্মবিশ্বাস যোগোবে বাংলাদেশকে। ২০২১ সালে ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছিল টাইগাররা। তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওয়ানডে ক্রিকেটে মুখোমুখি লড়াইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এখনও পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। ৪৭ ম্যাচের মধ্যে মাত্র ২১টিতে জিতেছে টাইগাররা। হেরেছে ২৪টিতে। বাকি দুই ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। মিরপুরের ধীরগতির উইকেটের কারণে সবসময় আত্মবিশ্বাসী থাকে বাংলাদেশ। তাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে টাইগাররা। মিরপুরের উইকেট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ ড্যারেন স্যামি। তিনি জানান, আগে কখনও এমন উইকেট দেখেননি। সর্বশেষ ভারত সিরিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলে মনে করেন স্যামি, ‘আমরা সবাই জানি, উপমহাদেশে খেলা সবসময়ই চ্যালেঞ্জিং। বিশেষ করে আমাদের ব্যাটসম্যানদের জন্য। আমার মনে হয় সর্বশেষ ভারত সিরিজের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের কন্ডিশনে অনেক বেশি কাজে দেবে।’ আফগানিস্তানের বিপক্ষে হতাশাজনক ফলাফল সত্ত্বেও বাংলাদেশ দলে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে ডাক পেয়েছেন উইকেটরক্ষক-ব্যাটার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। দলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে সৌম্য সরকারকে। আফগান সিরিজের দল থেকে বাদ পড়েছেন নাইম শেখ এবং পেসার নাহিদ রানা। এদিকে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের ট্রফি উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লায় ১৭ শতকের মুঘল স্থাপত্য লালবাগ কেল্লার বিখ্যাত পরীবিবির মাজারের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দুই দলের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও শাই হোপ উপস্থিত হয়ে যৌথভাবে সিরিজের ট্রফি উন্মোচন করেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) ও বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান ‘ক্রিকেট ট্যুরিজম’ প্রকল্পের অংশ, যার লক্ষ্য দেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে ক্রিকেটের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরা।

বাংলাদেশ ওয়ানডে দল : মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলী, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান ও হাসান মাহমুদ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল : শাই হোপ (অধিনায়ক), অ্যালিক আথানাজে, আকিম অগাস্ট, জেদিয়া ব্লেডস, কেসি কার্টি, রোস্টন চেজ, জাস্টিন গ্রেভস, আমির জাঙ্গু, শামার জোসেফ, ব্রান্ডন কিং, গুদাকেশ মোতি, খারি পাইরি, শেরফেন রাদারফোর্ড, জেইডেন সিলস ও রোমারিও শেফার্ড।