আজ থাইল্যান্ডে শেষ ‘পরীক্ষা’ বাংলাদেশের
প্রকাশ : ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ক্রীড়া প্রতিবেদক

আগামী বছরের মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় বসবে নারী এশিয়া কাপের আসর। ইতিহাস গড়ে প্রথমবার সেই আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ‘বি’ গ্রুপে লাল সবুজ দলের প্রতিপক্ষ উজবেকিস্তান, চীন ও উত্তর কোরিয়া। শক্তিশালী প্রতিপক্ষকে মোকাবিলা করার জন্য আগেভাগেই প্রস্তুতি নিচ্ছে কোচ পিটার বাটলারের শিষ্যরা। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে থাইল্যান্ডে রয়েছে বাংলাদেশ দল। স্বাগতিকদের বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচের প্রথমটিতে ৩-০ গোলে হেরেছে বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দল। থাইল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আজ। ব্যাংককের ৭২তম বার্ষিকী স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৭টায়।
আগের ম্যাচে হেরে ব্যাকফুটে ছিলেন আফঈদা খন্দকাররা। তবে হারার পরই দলের সিনিয়র ফুটবলারদের ম্যাচে জয়ের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার। এ নিয়ে ক্ষোভও তৈরি হয়েছে সিনিয়র ফুটবলারদের মধ্যে। তবে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে এসব বিষয় নিয়ে ভাবতে নারাজ বাটলার। বরং ম্যাচে মনসংযোগ করতে চান তিনি। গতকাল রোববার অনুশীলন শেষে তিনি বলেন, ‘আমরা সিস্টেমে কিছুটা পরিবর্তন এনেছি। কিছু কিছু জায়গা ঘাটতি রয়েছে আমাদের, সেটা পূরণ করতে হবে বলে আমি মনে করি। আগের ম্যাচে মেয়েরা যেভাবে খেলেছে তা নিয়ে সত্যিকার অর্থে আমার কোনো সমস্যা নেই। তারা ভালো ফুটবল খেলেছে বলেই আমি মনে করি।’ তবু মেয়েদের মনোভাব ও মানসিকতায় সন্তুষ্ট ইংলিশ এই কোচ, ‘অনুশীলনে মেয়েদের মনোভাব দারুণ। আমি কয়েকজনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলেছি। দুয়েকজন এমন খেলোয়াড় আছে যারা ম্যাচ উইনার হতে পারে। আগের ম্যাচে তারা নিজেদের প্রকৃত সম্ভাবনা দেখাতে পারেনি।’
আজকের ম্যাচ নিয়ে কোচের কণ্ঠে বাস্তবতা আর প্রতিযোগিতার মেলবন্ধন, ‘আপনি বলতে পারেন শেষ কবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে জিতেছে? জানেন না। তাই স্বপ্ন দেখার আগে বাস্তবতা বোঝা জরুরি। আমরা জিততে চাই। আমি প্রতিটা খেলায় জিততে চাই, সেটা ফুটবল হোক বা দাবা। কিন্তু বাস্তব হতে হবে। থাইল্যান্ড অনেক ভালো দল। তাদের বেঞ্চেও আরেকটা শক্তিশালী দল বসে থাকে।’ বাটলার আরও বলেন, ‘আমরা এখন একধরনের ‘রিসেট অপারেশন’-এর মধ্যে আছি। দলে নয়জন মেয়ের সঙ্গে আমি অনুশীলন করতে পেরেছি মাত্র কয়েক দিন। শেষবার যখন বাংলাদেশ থাইল্যান্ডে খেলেছিল, তখন ফল ছিল ৬-০ বা ৭-০। তাই এবার জিততে চাই অবশ্যই, কিন্তু সবচেয়ে জরুরি হলো উন্নতি করা।’ তবু আত্মবিশ্বাসী তিনি, ‘আমরা থাইল্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ দিতে পারব, আমি নিশ্চিত। আমি বাস্তব জগতে থাকি, কল্পনায় নয়। আশা করি মানুষও বাস্তবভাবে ভাববে।’ দীর্ঘদিন ধরে দেশে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলার বিষয়টিও উল্লেখ করেন পিটার, ‘আমরা শেষবার চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে দেশে খেলেছিলাম। ঘরের মাঠে জেতা অনেক সহজ, বাইরে এসে জেতাটা কঠিন। এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি।’
এই সফরের আগে সর্বশেষ দেখায় থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৯-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবারের শুরুটাও হয়েছে তেতো স্বাদ পেয়ে। তবে সফরের শেষটা ভালো করার লক্ষ্যে অভিজ্ঞদের কাছে নিজের ও দলের প্রত্যাশা জানিয়ে রাখলেন কোচ। ‘কয়েকজনের সঙ্গে আমি আলাদাভাবে কথা বলেছি। তাদের এপ্রোচ ও মাইন্ডসেট নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।
বিশেষ করে এক-দুজন আছে, যাদের আমি সত্যিকারের ম্যাচ উইনার মনে করি এবং আগের ম্যাচে তারা তাদের সামর্থ্যটা মেলে ধরতে পারেনি। আমাকে বলতে পারবেন শেষ কবে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে জিতেছে বাংলাদেশ? জীবনে কখনও কখনও কী চাই, সেটা নিয়ে সাবধানী থাকতে হয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা একটা মোমেন্টাম তৈরি করছি। কিছুটা অপারেশন রিসেটের মতো। ৯ ফুটবলার আমাদের সঙ্গে কেবল দুদিন অনুশীলন করেছে, যারা দলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।’ ‘অবশ্যই আমরা তাদের সমস্যায় ফেলতে পারব। আমি বাস্তবে বাস করি, কল্পনার জগতে নয়। আমি চাই মানুষ কিছু বলার আগে একটু ভাবুক। এটাও মাথায় রাখতে হবে চায়নিজ তাইপের পর আমরা ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচ খেলিনি। এখন দেশের বাইরে জেতা নিয়ে কথা বলা যায়। খেলার মধ্যে অনেক কিছুই থাকে, যা ফলাফলে প্রভাব ফেলে। আমি কাউকে দোষ দিতে পছন্দ করি না এবং অজুহাতও দেই না। তবে দেশের বাইরে জেতার চেয়ে ঘরের মাঠে ম্যাচ জেতা অনেক সহজ।’
